পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্লাসে ফিরার দাবিতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী তৃতীয় দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনে শিক্ষকের অবস্থানে অংশ নিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদেরও। ‘স্টান্ড ইউথ রুশাদ ফরিদী স্যার’ ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিদেশি শিক্ষার্থীও রয়েছেন বলে জানা যায়। দ্রুত স্যারকে ক্লাসে ফিরিয়ে নেয়া না হলে রোববার থেকে কর্মসূচি নেয়া হবে বলে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়নসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতারা ইনকিলাব নিশ্চিত করেছেন।
রুশাদ ফরিদীকে ক্লাসে ফিরাতে তার নৈতিক আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ইনকিলাবকে বলেন, শুধুমাত্র হেনস্তা করার জন্য তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো। আমরা তার অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি। বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের আশ^স্ত করেছেন দু’এক দিনের মধ্যে তারা বিষয়টি মিমাংসা করবেন। নইলে স্যারের পক্ষে আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে অবস্থান নেব। এটা শুধু ঢাবির অবস্থা না আজকে সারাদেশে এ অবস্থা।
আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, আমরা স্যারের সাথে কথা বলে তার দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছি। অন্যান্য প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে কথা বলে আমরা রবিবার কর্মসূচি নেব। ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা ইনকিলাবকে বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের পরও তাকে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে না দেয়া চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক। আমরা বৃহস্পতিবার স্যারের সাথে দাঁড়িয়েছি। আগামীতে আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করবো।
‘স্টান্ড ইউথ রুশাদ ফরিদী স্যার’ এর অন্যতম উদ্যোক্তা ঢাবি শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, আমরা আজকে ২০ জনের মত শিক্ষার্থী স্যারের অবস্থানে সমর্থন জানিয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে দাড়িয়েছি। স্যারের দাবি মেনে নেয়া না হলে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরবর্তীতে আরও কর্মসূচি গ্রহণ করব। বৃহস্পতিবারের আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা ও ঢাবি ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি আবু রায়হান বলেন, আমরা আমাদের নৈতিক জায়গা থেকে স্যারের পাশে দাড়িয়েছি। অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকরা যাচ্ছেন বিষয়টা দেরি করে ডিসেম্বর পর্যন্ত নিয়ে যেতে যাতে সিন্ডিকেটের পর আগামী বছরও তিনি ক্লাস না পান। যদি দ্রুত বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে আমরা রবিবার থেকে আন্দোলনে নামব।
বিভাগের কয়েকজন সহকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৭ সালে ঢাবির এ শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। রুশাদ ফরিদী নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত ছাড়াই শাস্তি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগ করেন, বিভাগের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলায় প্রতিহিংসামূলকভাবে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে সাতটি চিঠি দিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।
ঢাবির এ শিক্ষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ৯০দিনের বেশি বাধ্যতামূলক ছুটিতে রাখা যায় না। তারপরও আমি ৭০০ থেকে ৮০০ দিনের বেশি ছুটিতে আছি। অন্যায়ভাবে দু’বছর ধরে আমাকে হেনস্থা করা হচ্ছে। উচ্চ আদালতের রায়ের পরও তাদের বিন্দুমাত্র সহানুভূতি দেখছি না। বিষয়টি অবগত আছেন জানিয়ে ঢাবি ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আইনের প্রতি আমরা সব সময় শ্রদ্ধাশীল। আদালতের আদেশের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাতে পেলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো।
ড. রুশাদ ফরিদীর আন্দোলনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধায় অর্থনীতি বিভাগের একাডেমিক কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে তার বিষয়ে বিভাগের অবস্থান তুলে ধরা হয়। অর্থনীতি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, ড. রুশাদ ফরিদীকে বিভাগে পুনর্বহালের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের, অর্থনীতি বিভাগের নয়। বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।