Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

গোসলের পানি যখন মিনারেল ওয়াটার! অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যায় বিক্রেতা

প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : রেয়াজুদ্দিন বাজারের গোশতের দোকানের শেষ কোণে, যেখানে ছাগল-ভেড়া রাখার স্থান তার সাথেই রয়েছে সিটি কর্পোরেশনের সাপ্লাইয়ের পানির রিজার্ভার। সেখানে বড় বড় করে লেখা গোসল ৪ টাকা, এক লিটার পানি ২ টাকা, ১২ লিটারের অধিক পানির দাম প্রতি জার ১২ টাকা। এই জারে করেই বিভিন্ন দোকানে এমনকি বড় বড় রেস্টুরেন্টেও খাবার পানি সরবরাহ দেয়া হচ্ছে।
এ পানির বিজ্ঞাপন রেয়াজুদ্দিন বাজারের প্রতি গলিতে-গলিতে। সেখানে লেখা ‘১০০ ভাগ বিএসটিআই অনুমোদিত, নাফ মিনারেল ওয়াটার, বাসায় গিয়ে পানি সাপ্লাই দেয়া হয়, প্রতি লিটার ১৮ টাকা, দুই তলা ২০ টাকা, তিন তলা ২৪ টাকা করে প্রতি লিটার’। এমন মুখরোচক বিজ্ঞাপনে যে পানি পাওয়া যাচ্ছে তা হলো সেই সাপ্লাইয়ের গোসলের পানি।
গতকাল (বুধবার) জেলা প্রশাসকের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাতে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখতে পায়। জহির নামের সেই পানি বিক্রেতা ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে বাজারের পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে যায়। বাজারের বনিক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা কথা দিয়েছেন জহিরকে পাওয়া মাত্র তাকে আইনের কাছে সোপার্দ করা হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে বাজারের অন্যান্য সাপ্লাইয়ের পানির উৎসে নজর রাখার নির্দেশনা দেন।
এদিকে রেয়াজুদ্দিন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান। এ সময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশ্তিয়াক আহ্মেদ, বিএসটিআই সদস্য মোঃ সাফায়েত হোসেন খান, ক্যাব সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌস ও তৌহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রতিনিধি মোঃ মোকাম্মেল হক খান। পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন আনসার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন।
এ সময়ে তৈরি পোশাকের বিভিন্ন দোকান ঘুরে ক্রয় রশিদসহ প্রয়োজনীয় কাগজ পরীক্ষা করে সন্তেুাষ প্রকাশ করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান। নগরীর চাক্তাই এলাকায় বিসিকের সহায়তায় লবণ ফ্যাক্টরিগুলোতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাব্বির রহমান সানি। খোলা বাজারে আয়োডিনবিহীন লবণ প্যাকেটজাত না করে বস্তায় করে বিক্রি করায় শুকরিয়া সল্টকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জামান হোটেলকে লাখ টাকা জরিমানা
পাহাড়তলী অলংকার মোড় এলাকার জামান হোটেলকে কয়েকদিন আগের পচা-বাসি মাছ, গোশত ফ্রিজে সংরক্ষণ করা ও খাদ্যসামগ্রীতে মেয়াদোত্তীর্ণ কর্নফ্লাওয়ার ব্যবহারের অপরাধে ভোক্তা অধিকার আইনে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফোরকান এলাহি অনুপম। একই অভিযানে আলিফ হোটেলের ফ্রিজে বাসি সেমাই, শেওলা পড়া হাঁসের গোশত এবং স্যাঁতসেঁতে ও নোংরা পরিবেশে ইফতারসামগ্রী তৈরির অপরাধে ৫০ হাজার টাকা, আয়োজন রেস্তোরাঁয় ফ্রিজে পচা-বাসি খাদ্য সংরক্ষণের দায়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া আব্দুল আলী হাট মার্কেটের মুদির দোকান নাসির স্টোরকে পোকা-মাকড়যুক্ত খোলা সেমাই বিক্রি, চালের গুঁড়ার ড্রামে মরা পোকা পাওয়ায় ২০ হাজার টাকা, অবৈধভাবে সিটি করপোরেশনের গুদাম দখল করার অপরাধে ৫ হাজার টাকা, মূল্য তালিকা না টাঙানো, গরু ও মহিষের গোশত একসাথে মিশিয়ে বিক্রি ও কসাইখানার রশিদ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় গোশত বিক্রেতা কামরুল হোসেনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযানে সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কর্মকর্তা, পাহাড়তলী থানা ও নগর পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটকে সহায়তা দেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গোসলের পানি যখন মিনারেল ওয়াটার! অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যায় বিক্রেতা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ