Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত

এক্স-রে মেশিন নষ্ট প্রায় ২ বছর যাবৎ

রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৯, ২:৫৯ পিএম

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ৫০শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্সরে মেশিনটি প্রায় দুই বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। এতে করে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার রোগীরা। অপর দিকে এ সুযোগ নিয়ে হাসপাতালের পাশে গড়ে উঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো অতিরিক্ত টাকা নিয়ে এক্স-রে করছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী মাসে এক্স-রে মেশিনটি বিকল হয়ে যায়। ১৯৮৫ সালে গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপন করা হয় এক্স-রে মেশিনটি।

হাসপাতাল সংলগ্ন এক ফার্মেসীর মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হাসপাতালের এক্সরে মেশিনটি বিকল থাকায় সরকারীভাবে যে এক্সরেটি করতে ১২০টাকা লাগে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তা থেকে আদায় করা হচ্ছে আড়াইশ থেকে ৩শ টাকা।

সরজিমন ঘুরে দেখা গেছে, গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে পরিতক্ত্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রুমের মধ্যে এক্স-রে মেশিনের প্রতিটি অংশে মরিচিকা ধরেছে। ফাংগাস পড়ে নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্রগুলো। ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে মেশিনের একাধিক যন্ত্রাংশ। রুমের মধ্যে ডিজিটাল আল্ট্রা¯েœাগ্রাম মেশিনটি পড়ে রয়েছে। অভিজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় সেটিও ব্যবহার করা হচ্ছে না।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১০ সালে ২০ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর এর অবকাঠামো ও চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু নতুন মেশিন স্থাপন করা হয়। কিন্তু মেশিনগুলোর প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবলের অভাবে চালু না করায় আস্তে আস্তে অকেজো হয়ে পড়ছে।

এলাকাবাসী বলছেন, দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ৫১শয্যা বিশিষ্ট গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুরুত্ব অনেক। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার হওয়ায় প্রতিদিন গোয়ালন্দ উপজেলাসহ মহাসড়কে ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনার শিকার রোগীসহ পাশের রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর এলাকার অনেক রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। যে কারণে প্রতিনিয়তই এখানে এক্স-রে মেশিনটির প্রয়োজন হয়। হাসপাতালে রোগীদের ব্যবহার করার জন্য যে টয়লেট রয়েছে তার বেশির ভাগগুলোই তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। এতে করে রোগীদের আত্মীয় স্বজনরা প্রকৃতের ডাকা সাড়া দিতে দূরবর্তি এলাকায় যেতে হয়।

হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেডিওলজিষ্ট মো. কামরুল হাসান জানান, প্রায় ৩৪ বছর বয়সের এনালগ পুরাতন এক্স-রে মেশিনটি বার বার মেরামত করা হলেও কোন কাজে আসছে না। মেরামত করার পরদিনই কোন রোগীর এক্সরে করা অবস্থায় হঠাৎ শব্দ হয়ে মেশিনটি বন্ধ হয়ে যায়। মেশিনটি চালু অবস্থায় এখানে ভর্তি ও বহির বিভাগ মিলে গড়ে প্রায় প্রতিদিন ২০-২৫ জন রোগীর এক্সরে করা হতো। তিনি আরো জানান, সপ্তাহ খানিক আগে ঢাকা থেকে অপারেটর এসে মেশিনটি মেরামত করেছে। এক্সরে রির্পোট এখনও ভালো আসছে না।

গোয়ালন্দ উপজেলার আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তাপস মন্ডল বলেন, এক্সরে মেশিনটি বিকল থাকার বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করলে ঢাকা থেকে টেকনিশিয়ান এসে এটি মেরামত যোগ্য কিনা তা পরীক্ষা করে গেছেন। মেশিনটি দীর্ঘদিনের পুরোনো হওয়ায় মেরামত করা অনেকটা অসম্ভব বলে তারা জানিয়ে গেছেন। এ পরিস্থিতিতে একটি নতুন এক্সরে মেশিনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ