Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মীরসরাইয়ে ছড়িয়ে পড়ছে গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগ

আক্রান্ত কয়েক হাজার গরু

মীরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৯, ১:৪৮ পিএম

মীরসরাইয়ে গবাদি পশুর ভাইরাস জনিত চর্ম রোগ ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় চরম আতঙ্কিত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার সব খামারি ও গবাদি পশু লালন পালন কারিরা। উপজেলার প্রায় ৫ হাজার গবাদিপশু এই ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে এ রোগে ৮-১০টি গরু মারা গেছে মীরসরাইয়ে। জানা গেছে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ল্যাম্পি স্কিন ডিডিজ আক্রান্ত প্রায় ৪ হাজার গরুকে এন্টি এলার্জিক ইনজেকশন দেয়া হয়েছে।

উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে গবাদিপশুর মাঝে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এই রোগে আক্রান্ত গবাদিপশুর শরীরে প্রথমে মাংস গুটি গুটি করে ফুলে ওঠে। পরবর্তী সময়ে সেখানে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে আস্তে আস্তে পচন ধরতে শুরু করে। চামড়ায় গুটি ছাড়াও গলা ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি খাবার কম খাওয়া এবং পা ফুলে যাচ্ছে অনেক গরুর।

মশার মাধ্যমে রোগটি ছড়াচ্ছে বলে জানা গেছে। মশা যেখানে কামড় দিচ্ছে সেখানে গুটি গুটি আকারে ফুলে যাচ্ছে। রোগটি বাংলাদেশে এবারই প্রথম বলে জানা গেছে। উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, ওসমানপুর, ওয়াহেদপুর, মঘাদিয়া, মায়ানী ইউনিনের ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে ।

উপজেলার ১১নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের মধ্যম মঘাদিয়া এলাকার নুর উদ্দিন বলেন, ৩ মাস আগে তার ৮ মাস বয়সী বাছুরে শরীরে প্রথমে কয়েকটি চামড়া ফুলে গুটি (বসন্ত) ওঠে। পরবর্তী সময়ে তা পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। গুটি গুলোতে কিছু দিন পর ঘা দেখা দেয়। স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করলে কিছুটা কমে যায়। কিন্তু এখনো পুরোপুরি বাছুরটি সুস্থ হয়নি।

পৌরসদরস্থ দক্ষিণ গোভনীয়া এলাকার আবুল হাসেম বলেন, গত সোমবার রাতে আমার একটি বাছুরের গলা ফুলে যায়। সেখানে মনে হচ্ছে পানি জমে আছে এবং গরুর খাওয়া কমে গেছে।

পুর্ব গোভনিয়া এলাকার নিজাম উদ্দিন জানান, সাত দিন আগে বাছুরের কানে মশার কামড়ে গুটি দেখা দেয়। পরবর্তী সময়ে সেখানে ক্ষত সৃষ্টি হয়। যেটি ভেতরের দিকে মাংস পচিয়ে ফেলছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে ওষুধ খাওয়ানোর পরও ক্ষত শুকাচ্ছে না।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গবাদিপশুর ভাইরাসজনিত রোগ ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ মোকাবেলায় ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম (এনএটিপি) ফেজ-২ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টশন ইউনিটের (পিআইইডি) আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ হাজার ৬০ জন কৃষকের প্রায় ৪ হাজার গবাদিপশুর বিনামূল্যে চিকিৎসা, ২ হাজার ৫০০ সুস্থ গবাদিপশুকে টিকা প্রদান ও ৭ হাজার ২০০ গবাদিপশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষকদের মাঝে ল্যাম্পি স্কিন ডিডিজ মোকাবেলায় সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার বলেন, গবাদিপশুর ভাইরাসজনিত রোগ ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ মোকাবেলায় উপজেলায় ১৭ সদস্যবিশিষ্ট চারটি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গবাদিপশুকে সার্বক্ষনিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা চার হাজার গবাদিপশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। উপজেলায় ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ ক্রমান্বয়ে নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তিনি জানান।



 

Show all comments
  • সাফি ৩ অক্টোবর, ২০২২, ৬:১০ পিএম says : 0
    আমার গরুর বাচ্চা হয়েছে ১৫ দিন হলো গত কয়েকটি থেকে লক্ষ করছি হাঁটুতে ফুলে গেছে। এটা কি ধরনের রোগ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ল্যাম্পি স্কিন রোগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ