যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লু ও মিজানুর রহমান মিল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য পদে যুক্ত হলেন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির তিন নেতাকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রাপ্তরা হলেন
মালয়েশিয়া থেকে সাধারণ ক্ষমার অধীনে অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীরা দেশে ফিরতে এয়ারলাইন্সগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। মালয়েশিয়া প্রত্যাগত অবৈধ কর্মীদের দেশে ফিরতে ওয়ান ওয়ে টিকিটের দাম চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি নিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো। বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে চড়া দামে টিকিট কিনতে কর্মীদের নাভিশ্বাস উঠছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অবৈধ বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়া ত্যাগ না করলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।
মালয়েশিয়ায় থেকে দেশে ফেরার টিকিট না পেয়ে হাজার হাজার অবৈধ কর্মীরা চরম হতাশায় ভুগছে। কুয়ালালামপুর থেকে একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। জাতীয় শ্রমিক লীগ মালয়েশিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আলম হাওলাদার সাধারণ ক্ষমার আওতায় হাজার হাজার অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীদের আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিরাপদে দেশে ফেরার সুবিধার্থে ঢাকা কুয়ালালামপুর রুটে বিমানের একটি অতিরিক্ত ফ্লাইট চালুর জোর দাবি জানিয়েছেন।
এছাড়া দেশটির পুত্রাজায়ায় ইমিগ্রেশন কাউন্টারে প্রতিদিন শত শত অবৈধ বাংলাদেশি বিফোরজির আওতায় দেশে ফিরতে অনুমতির জন্য ভিড় জামাচ্ছে। কিন্ত ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন ৪০০ এর বেশি কর্মীকে ফিঙ্গার নিয়ে অনুমতি দিতে পারছে না। এসব অবৈধ কর্মীরা দুই তিন দিন লাইনে দাঁড়িয়েও ফিঙ্গার দেয়ার স্লিপ উঠাতে পারছে না। কুয়ালালামপুর থেকে ভেস্ট মার্কেটিং এসডিএন বিএইচডির পরিচালক রুহুল আমিন এতথ্য জানিয়েছেন। তিনি বিফোরজির কর্মসূচির মেয়াদ আরো ছয় মাস বৃদ্ধির জন্য কার্যকরি উদ্যোগ নেয়ার জন্য কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার শহিদুল ইসলামের আশু হস্তক্ষেপ কামান করেছেন।
মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষিত সারাধরণ ক্ষমা ’ব্যাক ফর গুড’ (বিফোরজি) কর্মসূচির আওতায় আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশটি থেকে প্রায় ৪০ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীকে আউট পাস নিয়ে দেশে ফিরতে হবে। কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে প্রায় ৭ লাখ বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ার বিভিন্ন সেক্টরে কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে। দালাল চক্রের মাধ্যমে যারা সাগরপথে দেশটিতে প্রবেশ করেছিল, ২০১৬ সনের রি-হায়ারিং কর্মসূচিতে বৈধতা লাভের সুযোগ না পাওয়া এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যারা অবৈধ হয়েছে এমন কর্মীরাই সাধারণ ক্ষমার সুযোগে দেশে ফিরছ। বিফোরজি কর্মসূচির আওতায় গত ১ আগস্ট থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার বাংলাদেশি অবৈধ কর্মী দেশে ফিরেছে।
দশ সিন্ডিকেটের অনৈতিক কর্মকা-ের দরুণ ২০১৮ সনের সেপ্টেম্বর মাসে দেশটিতে জনশক্তি রফতানি বন্ধ রয়েছে। ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতার পর গত ৬ নভেম্বর মালয়েশিয়ার পুত্রাজায়ায় উভয় দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দেশটিতে কর্মী নিয়োগে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ২৪ ও ২৫ নভেম্বর ঢাকায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির পর্দা ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ সম্প্রতি এমন আশাবাদই ব্যক্ত করেছেন।
মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক খায়রুল দাজাইমি আবু দাউদ ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে সকল অবৈধ অভিবাসীকে বিফোরজি পদ্ধতি অনুসরণ করে নিজ নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে। যারা ঐ তারিখের মধ্যে দেশে ফিরবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, দেশের নিরাপত্তা রক্ষার তাগিদে এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
বিফোরজির আওতায় অনেক অবৈধ অভিবাসীই বিমানের টিকিট কেটে ইমিগ্রেশনের অনুমতি নিয়ে নিজ নিজ দেশে ফিরছে। আবার কারও নানা জটিলতায় দেশে ফিরতে বিলম্ব হচ্ছে। এর মাঝে কেউ কেউ আশায় রয়েছেন যদি বৈধতার ঘোষণা আসে। এ আশা নিরাশার দোলাচলে আছে কিছু কিছু বাংলাদেশি অবৈধ কর্মী।
মালয়েশিয়ায় বাসবাকারি অবৈধ অভিবাসী কর্মীদের বৈধতা দিতে ২০১৬ সনের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রি-হায়ারিং প্রকল্প হাতে নেয় দেশটি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নিবন্ধন করার মাধ্যমে অবৈধ কর্মীদের বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়। দফায় দফায় এ প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়। রি-হায়ারিং প্রকল্প প্রায় আড়াই বছর ধরে চলে। দালাল চক্রের হাতে প্রতারিত হয়ে হাজার হাজার অবৈধ বাংলাদেশি কর্মী এ প্রকল্পের মাধ্যমে বৈধতা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ ট্রাভেল পাস দেয়া হচ্ছে। বিফোরজি কর্মসূচির আওতায় মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ২০০ কর্মকর্তার সমন্বয়ে ৮০টি কাউন্টার খোলা হয়েছে। এসব কাউন্টার থেকে অবৈধ কর্মীদের দেশে ফিরতে সহায়তা করছে দেশটির সরকার। এ সুযোগ যারা গ্রহণ করবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুর থেকে জাতীয় শ্রমিক লীগ মালয়েশিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম হাওলাদার জানান, সাধারণ ক্ষমার আওতায় মালয়েশিয়া থেকে অবৈধ বাংলাদেশি কর্মীরা চড়া দামে ওয়ান ওয়ে টিকিট কিনতে সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সকল অবৈধ কর্মীদের দেশে ফিরতে হবে। এ সুযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, মার্স এয়ারলাইন্স, ইউ এস বাংলা, মালিন্দ, রিজেন্সি, এয়ার এশিয়ার ফ্লাইটগুলো কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকা রুটে ওয়ান ওয়ে টিকিটের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে উক্ত রুটে ওয়ান ওয়ে টিকিটের দাম ছিল জনপ্রতি ৩৭৫ রিঙ্গিত থেকে ৪০০ রিঙ্গিত। বর্তমানে উল্লেখিত রুটে ওয়ান ওয়ে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে ১০০০ রিঙ্গিত থেকে ১২০০ রিঙ্গিত। তাও পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি প্রবাসী অসহায় কর্মীদের দ্রুত দেশে ফেরার সুবিধার্থে অনতিবিলম্বে ঢাকা কুয়ালালামপুর রুটে বিমানের অতিরিক্ত ফ্লাইট চালুর জোর দাবি জানান।
প্রবাস জীবন বিভাগে সংবাদ পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।