মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ডেরা গাজি খানের পরিত্যক্ত এলাকা। একটা সময় প্রশাসনিক কাজকর্ম চলত, এখন কী হয় সেটা অজানা। বিশাল ঘেরা কম্পাউন্ডের উত্তর দিকে কড়া পাহারা। ভারতের গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ডেরা গাজি খানেই চুপি চুপি গড়ে উঠেছে পারমাণবিক গবেষণার কেন্দ্র। পরমাণু অস্ত্র বানানোর কাজ চলে সেখানে। সম্প্রতি নজরদারি উপগ্রহের পাঠানো ছবিও সেই দিকেই ইঙ্গিত করছে। তথ্যসূত্র বলছে গত নয় মাসে ডেরা গাজি এলাকার ওই বিশাল কম্পাউন্ডের জায়গা অনেক বাড়ানো হয়েছে। ভারতের দাবি, টন টন প্লুটোনিয়াম, ইউরেনিয়াম সাল্পাই হচ্ছে ওই কম্পাউন্ডের উত্তর দিকের অংশে।
ভারতের গোয়েন্দা সূত্রের দাবি,‘আমরাও পরমাণু শক্তিধর দেশ। প্রয়োজন হলে পরমাণু হামলা হতে পারে,’ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হুমকি যে নিছক আস্ফালন নয়, সেটাই প্রমাণিত হতে চলেছে! যদিও পাকিস্তান বরাবর দাবি করে এসেছে ডেরা গাজি খানের ওই এলাকা পরিত্যক্ত। সেখানে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনও পরিকাঠামোই নেই। ২০০৯ সালে ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স ইন ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি জানায় পাকিস্তানের দাবি মিথ্যা। ডেরা গাজিতে লুকিয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজ চালায় পাকিস্তান। এমনকি গত বছর সিএনএস (জেমন মার্টিন সেন্টার ফর ননপ্রলিফারেশন স্টাডিজ) সূত্রেও একই দাবি করা হয়। সিএনএস জানায়, ডেরা গাজি খান এখন পাকিস্তানের অন্যতম পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ওই বিশাল কম্পাউন্ডের উত্তর দিকের অংশ শুধুই নয়, দক্ষিণ দিকের অংশও আগের তুলনায় অনেকটাই বিস্তৃত হয়েছে। সেখানে পাহারাও অনেক মজবুত।
ভারতের দাবি, উপগ্রহের পাঠানো গত অক্টোবরের ছবিতে এটা স্পষ্ট ডেরা গাজি আর নিষ্ক্রিয় নয়। বিশাল ঘেরা এলাকায় অনেক ছোট ছোট কারখানা গজিয়ে উঠেছে। কাছাকাছি বাঘাল চরের খনি থেকে টন টন ইউরেনিয়াম এসে পৌঁছচ্ছে সেখানে। সিএনএসের রিপোর্ট বলছে, ওই কম্পাউন্ডের উত্তর দিকের কারখানাগুলিতে ওই ইউরেনিয়াম থেকে ইউরেনিয়াম ডাই অক্সাইড তৈরির প্রক্রিয়া চলে। তৈরি হয় ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুওরাইড (ইউএফ৬)। পরে সেগুলিকে চুল্লিতে পাঠিয়ে পারমাণবিক অস্ত্রের উপযুক্ত আইসোটোপ তৈরি করা হয়। খনি থেকে ইউরেনিয়াম কেন পাঠানো হচ্ছে ডেরা গাজিতে তার যথোপযুক্ত কোনও জবাব পাকিস্তান দিতে পারেনি। সিএনএসের রিপোর্ট আরও বলছে, বালুচিস্তান ও সিন্ধু প্রদেশের পাহাড়ি এলাকার অনেক গোপন সুড়ঙ্গ অস্ত্র মজুতের বড় ঘাঁটি হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ একই সঙ্গে অস্ত্র তৈরি এবং অস্ত্র মজুতের কাজ চলছে। সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে খনি থেকে আসা কাঁচামাল। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তান গোপনে এমন প্রযুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করছে, যা দিয়ে পরমাণু, জৈব ও রাসায়নিক অস্ত্র বানানো যায়। তারই পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে সেখানে।
গত কয়েকমাসে নতুন চারটি পুকুর খনন করা হয়েছে ডেরা গাজির কম্পাউন্ডে। আগের পরিত্যক্ত পুকুরগুলো ভরে উঠেছে কোনও রাসায়নিক তরলে। ৭০-৯০ শতাংশ বেড়েছে ইউরেনিয়ামের ক্রিয়াশীলতা। জুন মাসের উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, কয়েকটি গাড়ি নিয়মিত আনাগোনা করে কম্পাউন্ডের ভিতরে। কোনও রাসায়নিক অস্ত্রের পরীক্ষাও চলে, তার ছাপও স্পষ্ট। গত চার মাসে পরিত্যক্ত বর্জ্য জমা করার কয়েকটি জায়গা তৈরি হয়েছে। কম্পাউন্ডের পূর্বে ও পশ্চিমে কয়েকটি জায়গা বড় পাঁচিল তুলে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে সেখানে অস্ত্র জমা করার এবং তার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজ করা হয়। তবে সেগুলি কী ধরনের অস্ত্র তার সঠিক প্রমাণ এখনও মেলেনি।
ভারত বরাবরই দাবি করেছিল, পাকিস্তান তার পরমাণু চুল্লিগুলিতে বিদ্যুতের পাশাপাশি অস্ত্র বানানোর প্রক্রিয়াও চালায়। চুল্লিতে বা়ড়তি জ্বালানি ব্যবহার করে তা বোমা তৈরির জন্য সরিয়ে রাখে ইসলামাবাদ। তারা নিউক্লিয়ার সাপ্লাই গ্রুপ (এনএসজি)-এর সদস্য না হওয়ায় পাক চুল্লিগুলিতে কোনও আন্তর্জাতিক নজরদারির ব্যবস্থা নেই। তা ছাড়া এখনও পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র প্রসার-রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর না-করায় গোপনে তারা কার্যত অবাধে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানের কাছ থেকেই ইরানে পরমাণু প্রযুক্তি চোরাচালান হয়েছে বলে অভিযোগও উঠেছে। এ জন্য জেলে যেতে হয়েছিল পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচির জনক আব্দুল কাদির খানকে। পরমাণু অস্ত্র নিয়ে বরাবরই ভারতকে চাপে ফেলার কৌশল নিয়ে চলেছে চীন ও পাকিস্তান।
কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদের দাবি তুলে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার ভারতকে পরমাণু হামলার হুমকিও দিয়েছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে ১০ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু হবে। পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে ১ কোটি ৬০ লক্ষ থেকে ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টন ওজনের ঝুল, কালিতে ঢেকে যাবে আকাশ, তা কেটে যেতে সময় লাগবে অন্তত ১০ বছর। পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে তৈরি হওয়া ঘন মেঘের চাদর সরিয়ে সূর্যের আলো পৌঁছতে পারবে না বলে শস্য ফলবে না। বদলে যাবে আবহাওয়ার গতি প্রকৃতি। তার ফলে, বিশ্বজুড়ে গণ অনাহারে মৃত্যু হবে কোটি কোটি মানুষের। সূত্র: দ্য ওয়াল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।