Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গাদের না পালানোর আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সতর্কতা দিয়েছেন মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী রোহিঙ্গারা। তারা বলেন, উন্নত জীবনের আশায় যারা পালানোর চেষ্টা করছেন তাদের প্রতি এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে অবস্থানকারী কিছু রোহিঙ্গা। তারা বলেছেন, এক সময় তারা উন্নত জীবনের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়ায় গেলেও সেই স্বপ্ন ভেঙেচুরে চুরমার হয়ে গেছে। এর কারণ, কাজ পাওয়া যায় না। তারা অবৈধ অভিবাসী বলে পুলিশ তাদের হয়রানি করে। তাই প্রতিকূল পরিস্থিতি হলেও বাংলাদেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা শরণার্থী বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনকে এই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানের পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, পালিয়ে মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেয়া তাদের কেউ কেউ ফিরে আসার কথা চিন্তা করছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ নৃশংসতা শুরুর চূড়ান্ত সময়ে জীবন বাজি রেখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন। ওই সময়ে মোহাম্মদ ইমরান নামের একজন রোহিঙ্গা যুবক উন্নত জীবনের আশায় পাচারকারীদের হাতে তুলে দেন ৪৭২০ ডলার। উদ্দেশ্য তারা তাকে মালয়েশিয়া নিয়ে দেবে। এখানে বলে রাখা ভাল যে, বাংলাদেশের পর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয়কারী দেশ হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে মালয়েশিয়া। তারা আশ্রয় দিয়েছে কমপক্ষে এক লাখ রোহিঙ্গাকে। এসব রোহিঙ্গা ঝুঁকিপূর্ণ বোটে করে উত্তাল আন্দামান সাগর পাড়ি দিয়ে পৌঁছেছেন মালয়েশিয়া। আবার কেউ কেউ ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করেছেন। এ জন্য পাচারকারীদের হাতে তুলে দিতে হয়েছে নগদ অর্থ। মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে অবস্থানকারী মোহাম্মদ ইমরান ও প্রায় দু’ডজন রোহিঙ্গা বলেছেন, তারা সেখানে ভাল নেই। তাই যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ভাবছেন তাদেরকে অনুৎসাহিত করেছেন তারা। ৩০ বছর বয়সী ইমরান বলেন, ভেবেছিলাম মালয়েশিয়ায় এসে একটি ভাল জীবন পাব। কাজ করার স্বাধীনতা এবং চলাফেরায় স্বাধীনতা পাবো। আমাদেরকে পুলিশ হয়রান করবে না। এমন মৌলিক অধিকারের আশা নিয়ে আমরা এসেছিলাম মালয়েশিয়া। কিন্তু তা ঘটছে না। এ বিষয়ে রয়টার্সের অনুসন্ধানীদের কাছে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি মালয়েশিয়ার পুলিশ অথবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রশিতে ঝুলা নিজের কাপড়চোপড়ের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে মোহাম্মদ ইমরান তার মায়ের সঙ্গে কথোকথনের বিষয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় তিনি আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তার মা অবস্থান করছেন সৌদি আরবে। তার মায়ের আশঙ্কা, তিনি আর কোনোদিনই তার ছেলেকে দেখতে পাবেন না। ইমরানের ছোট দুই বোন অবস্থান করছেন আশ্রয়শিবিরে। প্রতি মাসে তাদেরকে টাকা পাঠান ইমরান। নিজের খাদ্য, বাসা ভাড়ার জন্য কিছুই জমা রাখেন না তিনি। ইমরান বলেন, মালয়েশিয়ায় আমাদের ভবিষ্যত অস্পষ্ট। আমাদের কোনো ভবিষ্যত নেই। অন্যদিকে বাংলাদেশে যারা অবস্থান করছেন তাদের অন্তত পরিবার, বন্ধুবান্ধব আছে চারপাশে। রয়টার্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ