Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনার বাজার ভারতীয় কাপড় ও দ্রব্যসামগ্রীতে সয়লাব

প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ.টি.এম রফিক ও আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এলাকার বেপরোয়া চোরাচালানি সিন্ডিকেটে ভারতীয় কাপড় ও দ্রব্যসামগ্রীতে সয়লাব খুলনাঞ্চলের মাকের্টগুলো। ভারত থেকে অবৈধপথে আনা শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট ও প্যান্ট পিস, থান কাপড়, জিরা, গুঁড়ো দুধ, মসলা, চকোলেট বিস্কুট ও ওষুধসহ নানা ধরনের পণ্যসামগ্রী পৌঁছেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। গত ১৫ মে খুলনার খানজাহান আলী সেতুর টোল প্লাজা এলাকা থেকে বিশাল চালানের সোয়া দুই কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় কাপড় ও দ্রব্যসামগ্রী জব্দ করে কোস্টগার্ড। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার একই স্থান থেকে অর্ধ-কোটি টাকা মূল্যর অবৈধ ভারতীয় শাড়ি কাপড় জব্দ করেছে কোস্টগার্ড। মাঝে-মধ্যে চলা এসব অভিযানের আড়ালেই রয়েছে রাঘব-বোয়ালরা। সেই জন্যই তো খুলনাঞ্চলের মার্কেটগুলোতে ভারতীয় পোশাকের আধিক্য লক্ষণীয়।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশান কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট এম ফরিদুজ্জামান খান জানান, সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সংবাদের ভিত্তিতে রূপসা খানজাহান আলী সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় অবৈধ ভারতীয় বিলাসবহুল শাড়ি ও পিকঅ্যাপ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত অবৈধ ভারতীয় ৭২১টি শাড়ি জব্দ করা হয়। যার মূল্য ৫০ লাখ টাকার অধিক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতরের বাড়তি চাহিদাকে সামনে রেখে কয়েকটি অসাধু চক্র অবৈধপথে ভারতীয় কাপড় ও দ্রব্যসামগ্রীর মজুদ গড়ে তুলেছে। সড়ক ও নৌ-পথ চোরাচালানীদের নিরাপদ রুট। খুলনার বড়বাজার, রেল স্টেশন, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল ও গল্লামারী মোড়, দৌলতপুর, বটিয়াঘাটা উপজেলার জিরোপয়েন্ট এবং ডুমুরিয়া থানার কয়েকটি স্থানে সবচেয়ে বেশি চোরাই ভারতীয় পণ্য খালাস হয়। পুলিশকে ম্যানেজ করে চোরাকারবারীরা তাদের অবৈধ ব্যবসা দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কোনো চোরাচালানি জব্দ করে না বলে অভিযোগ রয়েছে। মহানগরীর বড় বাজারের মসলা পট্টি বা বেনেপট্টিতে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জিরাসহ বিভিন্ন মসলা আসছে অবাধে। বিগত সময়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর জিরা ধরা পড়ার পরও পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের ম্যানেজ করে চলছে ভারতীয় মালামাল আনার মহোৎসব। বেনেপট্টিসহ বড়বাজারের প্রায় প্রতিটি দোকানে প্রতিদিন অবাধে আসছে জিরাসহ বিভিন্ন চোরাই মালামাল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে রমজান মাসের অনেক আগে থেকেই চোরাকারবারীরা ভারত থেকে মালামাল আনা হচ্ছে। যশোরের বেনাপোল ও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর থেকে কোটি কোটি টাকার ভারতীয় বিভিন্ন ডিজাইনের মূল্যবান শাড়ি থ্রি-পিস, শার্ট ও প্যান্ট পিস, জিরা, মসলা, গুঁড়ো দুধ, চকোলেট বিস্কুট ও ওষুধসহ নানা পণ্যসামগ্রীর মজুদ গড়ে তুলেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শীর্ষ চোরাচালানীরা প্রতিনিয়ত ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে আনলেও ঈদ এবং পূজাকে সামনে রেখে এদের তৎপরতা বেড়ে যায়। খুলনার বড়বাজার চোরাচালানীদের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। খুলনার একজন তালিকাভুক্ত শীর্ষ চোরাচালানী ও খুনি এরশাদ শিকদারের দোসর দক্ষিণাঞ্চলের চোরাচালানের গড্ফাদার হিসেবে এ অঞ্চলে নেতৃত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি আরও রয়েছে বেশ কিছু চিহ্নিত চোরাকারবারী।
সূত্র মতে, চোরাকারবারীদের কারণে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দেশীয় বস্ত্রের বাজার হারাচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় দেশীয় জামা-কাপড় বিক্রির পরিবর্তে চোরাইপথে আসা ভারতীয় জামা কাপড় বিক্রি করছেন। ফলে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্যদিকে, দেশীয় বস্ত্রের বাজার হারাচ্ছে শিল্প মালিকরা।
এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি) মো. কামরুল ইসলাম জানান, কেএমপি’র সকল স্তরের পুলিশ চোরাচালানীদের ধরতে সব সময় কাজ করছে। চোরাকারবারী, মাদক ও অস্ত্র বিক্রেতাদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেয়া হবে না। এদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন প্রবেশ দ্বারে চেকপোস্ট বসানো হবে।



 

Show all comments
  • ইমরান ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৮:৪৮ এএম says : 0
    I am happy
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুলনার বাজার ভারতীয় কাপড় ও দ্রব্যসামগ্রীতে সয়লাব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ