Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে অবনতি ঘটছে -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১:১৪ পিএম
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপোসহীন নেত্রী চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ক্রমান্বয়ে অবনতি ঘটছে। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পায়ে হেঁটে আদালতে যাওয়া বেগম জিয়ার হাত-পা এখন বেঁকে গেছে। প্রিজন সেলে বন্দি থাকায় হাত-পায়ের ব্যথা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে, জয়েন্টগুলোতে প্রচন্ড ব্যথার কারণে নিজে উঠে দাঁড়াতে পারছেন না, সোজা হয়ে বসতেও পারছেন না। এমনকি নিজের হাতে তুলে খেতেও পারছেন না। স্বাস্থ্যের এতোটাই অবনতি হয়েছে যে, তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পঙ্গু হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দেশের প্রতিটি মানুষ তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর স্বাস্থ্যের অবনতিতে চরমভাবে উদ্বিগ্ন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 
রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের সেন্টিমেন্ট অবজ্ঞা সরকার দেশের একজন জনপ্রিয় নেত্রীর জীবনকে নিঃশেষ করে দেয়ার সকল আয়োজনে ব্যস্ত রয়েছে। তাঁর চিকিৎসার অধিকারটুকুও কেড়ে নেয়া হয়েছে। এই সরকার অন্ধ প্রতিহিংসার বশে বেগম খালেদা জিয়াকে ক্রমান্বয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতেই তাঁর সুচিকিৎসা প্রদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তাঁর ন্যায্য প্রাপ্য জামিনে সরাসরি বাধা দেয়া হচ্ছে। নগ্নভাবে আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে অসত্য সংবাদ পরিবেশন করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা এক ভয়াবহ ও সুদুরপ্রসারী চক্রান্তের বর্ধিত প্রকাশ। মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রীকে কারাবন্দী করে মধ্যরাতের নির্বাচনের সরকারপ্রধান শুধু ন্যায়বিচারকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেননি, তিনি গণতন্ত্রের ক্ষতি করলেন, ক্ষতি করলেন বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার সুরক্ষার।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর সত্তায় প্রাতিস্বিক বৈশিষ্ট্যে স্বৈরাচারী তামসিক জাড্য আবার ক্ষমতা ধরে রাখতে বিশেষ শক্তির প্রতি নিরভিমান আনুগত্যে বাংলাদেশের আত্মশক্তিকে নিস্তেজ করে যাচ্ছেন। এই সরকার বাংলাদেশকে দাস শিবিরে পরিণত করছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাহস, সততা ও দৃঢ়তা দিয়ে প্রত্যক্ষ অন্যায় ও অবিচারকে মোকাবেলা করছেন। অত্যাচারী অন্যায়ের রাজত্বে বেগম খালেদা জিয়া এক নির্ভিক কান্ডারী। গণতন্ত্র ও নাগরিক স্বাধীনতার প্রখর প্রবক্তা দেশনেত্রী বেগম জিয়া অনুভবে, চিন্তায়, বিশ্বাসে, বাক্যে, আচরণে একদিকে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা, অন্যদিকে গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারে এক অকুতোভয় সিপাহসালার। সুতরাং দেশনেত্রীকে গায়ের জোরে বন্দী করে বিপর্যস্ত করাটাই শেখ হাসিনার প্রধান লক্ষ্য। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, আপনার টালবাহানায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কোনো ক্ষতি হলে আপনার স্বনির্মিত দু:শাসনের শৃঙ্খল ধুলোয় লুটোপুটি খাবে। তাই তাঁকে নিয়ে কোন মিথ্যাচার-অপপ্রচার ও কুৎসা না রটিয়ে আজই মুক্তি দিনে। জামিনে কোন বাধা দিবেন না। তাঁর পছন্দমত হাসপাতালে তাঁকে সুচিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দিন।

 দেশবাসীর উদ্দেশ্যে উদাত্ত আহবান রেখে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এই মিডনাইট নির্বাচনের সরকার আপনাদের ভোটে নির্বাচিত নয়। তারা আপনাদের সরকার নয়। আপনাদের কাছে তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই, দায়বদ্ধতা অন্যখানে, এর কারণ, তাদের ক্ষমতার মূলে এমন একটি শক্তি সক্রিয় যার ওপর কোন হুকুম চলে না। এ কারনে আপনাদের ব্যস্ত রাখতে একটার পর একটা ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেই চলেছে তারা। এই সংকট কৃত্রিম সংকট, এই সংকট অবাধ লুটপাটের সিন্ডিকেটের কারণে। 

তিনি বলেন, গ্রামে ডাকাত পড়লে এক সাথে সবাই প্রাণপন ঝাঁপিয়ে পড়ে গ্রাম রক্ষা করে। বাঁচার জন্য একসাথে লড়তে হয়। তখন কি কেউ জানতে চান কার কোন দল, কার কি আদর্শ ? কার কি ঠিকুজী ? চান না। তা না হলে আজ পেঁয়াজ, কালকে চাল, পরশু লবনের মতো সংকট লেগেই থাকবে। মুল সংকট লুটেরার ভাবধারায় লালিত বর্তমান স্বৈরাচার। যখন দেশে চাল, পেঁয়াজ ও লবনের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্যের হাহাকার চলছে তখন প্রধানমন্ত্রী বিনোদনের জন্য দুবাইতে এয়ারশো উপভোগ করছেন। আর সত্যভ্রষ্ট ওবায়দুল কাদের সাহেবের রোডশো তো জনগণ প্রতিদিনই দেখছে। তিনি নতুন সড়ক আইনের দ্বারা যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তাতে জনদুর্ভোগ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সুতরাং অবৈধ সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সংকটের সুরাহা হতে থাকবে। কারণ তখন জবাবদিহিতার আওতায় আসবে সবকিছু। আজ দেশের তরুণ সমাজসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষকে রাজপথে নেমে আসতে হবে। দুনিয়ার দেশে দেশে তরুণরা সব স্বৈরাচারী সরকারগুলোকে পাল্টে দিচ্ছে।
কর্মসূচিঃ
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ২৩ নভেম্বর ২০১৯ শনিবার বিএনপি’র উদ্যোগে ঢাকাসহ দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ঐ দিন ঢাকায় এই প্রতিবাদ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হবে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মুখে বেলা ২টায়।
এছাড়া বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল ২০ নভেম্বর বুধবার ঢাকাসহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়গুলোতে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় আগামী ২১ নভেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে সকাল ১১টায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

১৭ এপ্রিল, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ