পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০০৬ সালে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ’ করার ঘোষণা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) আবার ভাঙনের মুখে পড়ে গেছে। কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের নেতৃত্বাধীন দলটিতে গতকাল সম্মেলন পাল্টা সম্মেলনের ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রথমে সম্মেলন করে আবদুল করিম আব্বাসীকে আহ্বায়ক ও শাহাদত হোসেন সেলিমকে সদস্য সচিব করে দলের ৭ সদস্যের নতুন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঘোষণা করা হয়। পরে কর্নেল অলি আহমেদ বীর বিক্রম সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, এলডিপিকে অন্য কারও নেয়ার আইনগত সুযোগ নেই; এমনকি কোনো অধিকারও নেই। এলডিপির নিবন্ধন আমার নামে। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত এলডিপি এক নম্বর রাজনৈতিক দল। গত ১২ বছর ধরে আমি এই দলের সভাপতি। আমি এলডিপি, বাকিরা ভুয়া। মূলত কর্নেল অলির নেতৃত্বে ‘জাতীয় মুক্তমঞ্চ’ গঠন ইস্যুতে দলটি ভাঙনের মুখে পড়লো।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল অলি আহমদ (অব.) বীর বিক্রম বলেন, এলডিপির কোনো ত্যাগী নেতাকে বঞ্চিত করেনি। বরং এলডিপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব শাহাদত হোসেন সেলিম সে সব সময় নিজেকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচির বলে পরিচয় দিতেন। অথচ আমার দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের কোনো পদ নেই। পদ আছে যুগ্ম মহাসচিব। তাকে নিষেধ করার পরও সব সময় এই পদটি ব্যবহার করত। তাই তাকে দল থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের ২০ দলীয় জোটে নেয়া হবে কিনা এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। সেটা ২০ দল সিদ্ধান্ত নেবে। এমনকি যারা আমার বিরুদ্ধে গেছে তারা কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নয়।
এলডিপির সভাপতি আরও বলেন, বাংলাদেশে অনেক রাজনীনৈতিক দল রয়েছে। আরেকটি দল হলো। তারা প্রেসক্লাবে, ফুটপাথে বসে নানান কর্মসূচি পালন করবে। এতে অনেকের সুবিধা হবে। অসুবিধা কি?
জাতীয় মুক্তিমঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদ প্রমুখ।
এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এলডিপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম এই কমিটি ঘোষণা করেন। সমন্বয় কমিটির সভাপতি হিসেবে আবদুল করিম আব্বাসি এবং সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ ৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। এ সময় আবদুল করিম আব্বাসী বলেন, কর্নেল অলি নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। দলকে তিনি নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। ১৯৭৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপিতে যোগদান করি। আমি ২৪ বছর নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলাম। জাতীয় সংসদে পাঁচবার নির্বাচন করেছি, তিনবার হুইপ ছিলাম। আমার এলাকার মানুষ, এই দেশ আমাকে অনেক দিয়েছে। আমার ৮৪ বছর বয়স হয়েছে, বাঁচার আর সাধ নেই। অনেক দেখেছি, বুঝেছি। এখন দেশেই স্বাভাবিক মৃত্যু চাই। এটাই আমার জীবনের শেষ চাওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিম বলেন, ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারি থেকে বেগম খালেদা জিয়া সরকারের রোষানলে পড়ে কারাবন্দি রয়েছেন। তাকে মুক্ত করার জন্য যখন দল-মত-নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য গড়া প্রয়োজন। তখন নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার জন্য একটি পক্ষ তৎপর হয়ে উঠেছে। এরমধ্যে কর্নেল অলি সাহেব তার এক বক্তব্যে পুরো বিএনপির নেতৃত্বকেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। তার এই বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকায় এবং তারেক রহমান দেশের বাইরে থাকায় বিএনপির নেতৃত্ব নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে যেখানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখার প্রয়াস চালাবেন সেখানে জোটের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্য ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ তৈরি করেছেন। শুরুতে মুক্তি মঞ্চকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আলাদা প্লাটফর্ম বলা হলেও ধীরে ধীরে জিয়া পরিবার আর বিএনপির বিষোদ্গার করার প্লাটফর্মে পরিণত হয়। বিএনপি›র শীর্ষ নেতৃত্বকে বিতর্কিত আর দুর্বল করার চেষ্টা ষড়যন্ত্র শুরু করে যা আমাদের মতো জাতীয়তাবাদী আদর্শের পক্ষে মেনে নেয়া কঠিন। তিনি জানান, সারাদেশে এলডিপি নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে অচিরেই একটি কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হব।
গত ৯ নভেম্বর কর্নেল (অব.) অলি আহমেদকে সভাপতি এবং ড. রেদোয়ান আহমেদকে মহাসচিব করে এলডিপির নতুন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। এই কমিটি থেকে বাদ পড়েন দলটির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। তারপর থেকেই মূলত দলটির মধ্যে ভাঙনের সুর ওঠে। গতকাল পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা চূড়ান্ত রূপ নেয়।
২০০৬ সালের ২৬ অক্টোবর কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম ও এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে এলডিপি গঠিত হয়। এ সময় বিএনপির সরকারের ৩২ জন মন্ত্রী-এমপি এলডিপিতে যোগদান করেন। পরে বি. চৌধুরী তার আগের দল বিকল্প ধারায় ফিরে যান। অভ্যন্তরীণ বিরোধে জড়িয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা জাহানারা বেগমও বিকল্প এলডিপি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।