Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে ফের ভারতের পার্লামেন্টে বিল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ভারতের নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তনে ফের পার্লামেন্টে বিল তুলতে যাচ্ছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। দৃশ্যত আসামের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়া ‘অমুসলিম শরণার্থীদের’ বৈধতা দিতেই এ সংশোধনী আনা হচ্ছে। সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া শীতকালীন অধিবেশনের কর্মস‚চিতেই বিতর্কিত এই বিলের উল্লেখ করা হয়েছে। এটি আগেও একবার পেশ হয়েছিল, কিন্তু আসামসহ উত্তর-প‚র্বাঞ্চলজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে তখন সেটি পাস করানো যায়নি। ওই পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে ফের পার্লামেন্টে উঠতে যাচ্ছে বিলটি। এই বিল পাস হলে ভারতের নাগরিকত্ব আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। এতে করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন ও পার্সি ধর্মাবলম্বী, যারা কথিত ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতে গিয়ে স্থায়ী হয়েছে, তারা নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবে। প্রথম দফায় যখন এ বিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তখন এর বিরুদ্ধে আসাম ও উত্তর-প‚র্বাঞ্চলজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। প্রতিবাদে নেমেছিল অসমিয়া জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলো। উত্তর-প‚র্বের বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন। এবারও বিল পেশের খবর বেরোতেই আসামের নানা জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে। যেসব সংগঠন ইতোমধ্যে রাজপথে নেমেছে, তার মধ্যে অন্যতম কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রচার সচিব রাতুল হোসেইন বলেন, ‘ভারতীয় সংবিধানের ম‚ল বিষয়বস্তু হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু এই বিলে সেটাকেই ধ্বংস করে দিয়ে হিন্দু রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা হচ্ছে। এদেশের নাগরিকত্ব পেতে ধর্ম কোনও ভিত্তি হতে পারে না, আর এই বিলে সেটাই করা হচ্ছে।’ রাতুল হোসেইন বলেন, আসামের চ‚ড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি)-তে যে ১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছে, তাদের মধ্যে বেছে বেছে মুসলমান ছাড়া অন্যদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই এই বিল আনা হচ্ছে। আসামের অনেক বাংলাভাষী হিন্দু, যাদের নাম এনআরসি থেকে বাদ পড়েছে, তারা বিবিসিকে নানা সময়ে বলেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়ে গেলেই তাদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিজেপি নেতারা এমনটাই বলেছেন তাদের। বিলটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ম‚ল কারণ ছিল নাগরিকত্ব আইনে পরিবর্তন আনা হলে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার যে শর্ত আসাম চুক্তিতে আছে, সেটা লঙ্ঘিত হবে। এটা যেমন ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বিরোধী নেতাদের ভাষ্য, ওদিকে বাঙালি অধ্যুষিত বরাক উপত্যকাতেও নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা রয়েছে কিছুটা অন্যভাবে। শিলচরের সাবেক এমপি ও জাতীয় মহিলা কংগ্রেসের প্রধান সুস্মিতা দেব বিবিসি-কে বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার নেতারা এখন বিজেপির আনা এই বিলের বিরোধিতা করছেন ঠিকই, কিন্তু সেখানকার মানুষের ভোটে তো বিজেপি জিতেছে। তাদের নির্বাচনি ঘোষণাপত্রেও লেখা ছিল, এই বিল তারা আনবে। সেটা তখন দেখেনি আসামের মানুষ? তাদের বেশিরভাগই অসমিয়া হিন্দু। তবে এই বিলে আসামের বাঙালিদের কোনও লাভ হবে না।’ বরাক উপত্যকার কংগ্রেস নেতারা অবশ্য বিলটির সরাসরি বিরোধিতায় না গিয়ে সংশোধন চাইছেন। এই প্রশ্নে রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে তাদের মতবিরোধ রয়েছে। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ