পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রাহক পর্যায়ে আবারো বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিদ্যুতে ভর্তুকি থেকে সরে আসতে চায় সরকার। এ জন্য পাইকারি পর্যায়ে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়াতে চায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর হতে গত ১০ বছরে ৬ বার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এরমধ্যে ২০১১ সালে দুইবার এবং ২০১২, ২০১৪, ২০১৫ এবং ২০১৭ সালে একবার করে। এবার সপ্তম বারের মতো বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাবে।
গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে এরই মধ্যে বিতরণ কোম্পানিগুলো থেকে প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নিয়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শুরু হচ্ছে আগামী ২৮ নভেম্বর। চার কর্মদিবসে শুনানি করবে বিইআরসি। এ শুনানির পর ৯০ দিনের মধ্যে সবার মতের ওপর ভিত্তি করে দাম বাড়ানোর বিষয়টি ঘোষণা দিবে সরকার।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ইনকিলাবকে বলেন, বিদ্যুতের দাম কমানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। আওয়ামী লীগ ৪৭ শতাংশ থেকে ৯৪ শতাংশ জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এনেছে। আগামী জুনে শতভাগ জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে। দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ৩ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট থেকে ২১ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) হয়তো ভর্তুকি থেকে বের হয়ে আসতে চাইছে। তারা নিজেরা সাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। এজন্য মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এখন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ঠিক করবে মূল্য বাড়াবে নাকি ভর্তুকি দেবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী বছর থেকে উৎপাদনে আসছে পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই ধারাবাহিকতায় রামপাল, মাতারবাড়িসহ অন্য বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদনে এলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমে আসবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সচিব রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পাইকারি পর্যায়ে মূল্যহার পরিবর্তন চায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, সঞ্চালন মূল্যহার পরিবর্তন করতে চায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। এই দুটি কোম্পানির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ নভেম্বর। এ ছাড়া বিতরণ কোম্পানি আরইবি, ডেসকো, ডিপিডিসি, নেসকোসহ অন্য কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে যথাক্রমে ১, ২ ও ৩ ডিসেম্বর।
বিইআরসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হয়। তখন ইউনিটপ্রতি ৩৫ পয়সা বা ৫.৩ শতাংশ হারে মূল্য বাড়ানো হয়, যা একই বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়। কিন্তু ওই সময় পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হয়নি। সর্বশেষ ২০১৫ সালে পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য ১৮.১২ শতাংশ বাড়ানো হয়।
সবার আগে অর্থাৎ গত ২৩ অক্টোবর বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য পরিবর্তনের আবেদন করে পিডিবি। সরকারি কোম্পানি হিসাবে, ২০২০ সালে বিদ্যুৎ বিক্রি করে তাদের আয় হতে পারে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। যদিও ওই সময় তাদের প্রয়োজন হবে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। ফলে বাকি আট হাজার কোটি টাকা পূরণে মূল্য সমন্বয় করতে কমিশনের কাছে অনুরোধ জানায় পিডিবি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, খুচরা দাম না বাড়িয়ে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ালে গ্রাহক পর্যায়ে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে না। তবে পাইকারি দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিতরণ কোম্পানিগুলো বিদ্যুতের খুচরা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে পারে। সেটি বিবেচনায় নিলে গ্রাহক পর্যায়েও প্রভাব পড়বে।
পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ ইনকিলাবকে বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য একটি প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছি। প্রস্তাবে কোনো সংখ্যার কথা উল্লেখ করিনি। শুধু লোকসানের একটা হিসাব দিয়েছি। চিঠিতে বলেছি, সময় আসছে, বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও বাড়ছে। ফলে বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান মূল্যহারে ২০২০ সালে আমাদের বিদ্যুৎ বিক্রি করে আয় হতে পারে ৩৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, কিন্তু ঐ সময় আমাদের প্রয়োজন হবে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। ফলে বাকি ৮ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা কিভাবে পূরণ করা হবে, তা-ই জানানো হয়েছে কমিশনকে। কমিশন এখন সিদ্ধান্ত নেবে বিদ্যুতের দাম বাড়াবে নাকি ভর্তুকির আকারেই পিডিবিকে দেয়া হবে।
গত পাঁচ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ শুধু বেড়েই গেছে। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ভর্তুকি ছিল ৪ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তেলের মূল্য কমে যাওয়ায় ভর্তুকি কিছুটা কমে হয় ৩ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা। এরপর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা আবার বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে (২০১৮-১৯) ভর্তুকির পরিমাণ ছিল সাত হাজার ৯৭০ কোটি। চলতি অর্থবছর ভর্তুকির সম্ভাব্য পরিমাণ ধরা হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।