Inqilab Logo

শনিবার, ০১ জুন ২০২৪, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সেনাবাহিনীর চাপে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

সেনাবাহিনীর চাপের মুখে পদত্যাগ করেছেন বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দেন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী হিসেবে পরিচিত এই বাম রাজনীতিক। তার সাথে পদত্যাগ করেছেন সম্প্রতি নির্বাচিত সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও। মোরালেসের বিরুদ্ধে গত ২০ অক্টোবরের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে শুরু হয় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। এমতাবস্থায় তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানায় সেনাবাহিনীও। ২০০৬ সাল থেকে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মোরালেস। লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত তিনি। গত মাসে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে প্রতিদ্ব›দ্বী কার্লোস মেসাকে হারিয়ে ফের নির্বাচিত হন তিনি। তবে মেসা অভিযোগ করেন, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। তিনি নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে দেশব্যাপি সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেন। এমনকি নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও নির্বাচনে সুস্পষ্ট কারচুপির প্রমাণ পায়। এরপর থেকে পুনঃনির্বাচনের জন্য বিক্ষোভ করে আসছে দেশটির জনগণ। এমনকি মোরালেসের পরিবারের সদস্য এবং সমর্থকদের বাড়িঘরে আক্রমণ করে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের মুখে নতুন নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন মোরালেস। এরপরেই তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার উইলিয়ামস কালিম্যান। তিনি বলেন, চলমান সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি বিবেচনা করার পর, বলিভিয়ার মঙ্গলের জন্য আমরা প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে শান্তি ফিরে আসে ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

গতকাল পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে মোরালেস দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘ভাই ও বোনেরা, আমি আপনাদের বলতে চাই যে, লড়াই এখানে শেষ হয়নি। সমতা ও শান্তির জন্য সামাজিক আন্দোলন চলবে।’ তার পদত্যাগের কথা শুনে লা পাজ শহরে লাখ লাখ লোকজন রাস্তায় নেমে আনন্দ মিছিল করেছে। এছাড়া দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আলভারো গার্সিয়া লিনেরা এবং সিনেট প্রেসিডেন্ট আদ্রিয়ানা সালভাতিয়েরাও পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগী প্রেসিডেন্টের প্রতি সমর্থন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রুডরিগেজ বলেছেন, ইভো মোরালেসকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বলিভিয়ার প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট মোরালেস। ২০০৬ থেকে শুরু করে টানা তিন বার নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তার শাসনামলে দেশটিতে অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। গত মাসের ২০ তারিখ নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো জয়ী হন তিনি। যদিও দেশে এক গণভোটে নির্ধারিত নিয়ম অনুসারে, কোনো প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ তিন বার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। তার এমন সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি দেখা দেয় জনগণের মাঝে। পদত্যাগের ঘোষণার সাথে মোরালেস নতুন নির্বাচন আয়োজন ও নির্বাচন কমিশনে পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তবে, অনুষ্ঠেয় নির্বাচনটিতে তিনি নিজে লড়বেন কিনা তা নিশ্চিত করেননি। সূত্র : দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ