Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইতিহাস গড়তে পারবে কি বাংলাদেশ?

মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

জিতলেই ইতিহাস। ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়। স্বাগতিকদের বিপক্ষে দিল্লিতে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয়ের পর রাজকোটেই উঁকি দিচ্ছিলো ইতিহাসের হাতছানি। কিন্তু ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার ব্যাটিং ঝড়ে স্রফে উড়ে গিয়েছিল টাইগাররা। তাতে অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হয়েছে। তবে সম্ভাবনা ফিকে হয়ে যায়নি একেবারে। আজ নাগপুরে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে হারাতে পারলেই ইতিহাসের পাতায় লেখা হবে বাংলাদেশের নাম।

সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবাল বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। সবচেয়ে বড় নাম। সিরিজের শুরুটা এ দুই মহাতারকার অনুপস্থিতিতে যেভাবে খেলেছে মাহমুদউল্লাহর দল, তা অনেকটা স্বপ্নের মতোই। ভারতের মাঠে প্রথমে তাদেরকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সাহস দেখিয়েছিলেন টাইগার দলপতি। কি চমৎকার প্রতিদানই দিলেন তাকে বোলাররা! প্রথম ওভারেই ভারতের ব্যাটিংকে প্রাণহীন করে দিয়েছিলেন শফিউল ইসলাম। ফিরিয়েছিলেন রোহিতকে। তারপর একে একে প্রতিটি ভারতীয় ব্যাটসম্যানকেই চাপে রেখেছিলেন মুস্তাফিজুর-আফিফ-আমিনুলরা।

গল্পের শেষটা ছিল বীরোচীত। স্বাগতিক দলকে অল্পতে আটকে রেখে মুশফিকের হার না মানা ইনিংস। মাহমুদউল্লাহর সীমানা ছাড়ানো শটে ম্যাচে বড় জয়। ইতিহাসে আলেক্সজান্ডার দ্য গ্রেটের মতোই রাজ্য জয় করে বীরের বেশে ফিরে এসেছিলেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা। দিল্লি জয়ের পর রাজকোটেও দেখার বাকি ছিল আরেকটি স্বপ্নের। কিন্তু দুর্দান্ত শুরু করেও কিভাবে যেন খেই হারিয়ে ফেলল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তাতে স্বপ্নভঙ্গ হলেও নি:শেষ হয়ে যায়নি। প্রত্যাশা পূরণের জন্য টাইগারদের হাতে নাগপুর দখলের বিকল্প নেই। এই নাগপুর দখলেই ইতিহাসের অংশ হবে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকরা।

বাংলাদেশের প্রধান চিন্তা ব্যাটিং। ব্যাটসম্যানরা ভাল শুরু করেও ইনিংসকে বড় রানে পূর্ণতা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যাটিংয়ের নিউক্লিয়াস সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। তামিম, সাাকিবের অনুপস্থিতিতে মুশফিকুরই বাংলাদেশি ব্যাটিংয়ের বড় ভরসার নাম। প্রথম ম্যাচের এই জয়ের নায়ক যদিও রাজকোটে বড় রানের ইনিংস খেলতে পারেননি। এছাড়া লিটন বারবার জীবন পেয়েও ব্যর্থহাতেই ফিরে আসছেন। সৌম্য সরকারও পারছেন না নিজের নামের প্রতি পুরোপুরি সুবিচার করতে। মাহমুদউল্লাহ দুই ম্যাচেই ভালো খেলেছেন, কিন্তু দলের প্রত্যাশা যে আরো বড়। তাকে নিতে হবে আরো দায়িত্ব।

তারুণ্য নির্ভর ভারতীয় দলের বিপক্ষে অবশ্য সিরিজ জয়ের আশা দেখছে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে রোহিতকে দ্রুত ফেরানোর কাজটা করতে হবে বোলারদেরই। নাগপুরের পিচকে প্রথাগতভাবে ¯েøা পিচই বলা হয়। ¯েøা বোলাদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী, তারা সহায়তাও পেয়ে থাকেন এই পিচ থেকে। তাই ভারতীয় শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপকে আটকাতে এই পিচের সঠিক ব্যবহার করতে হবে আফিফ-আমিনুলদের। ভারতকে তাদের মাঠে হারাতে হলে তাদের কৌশলেই দমাতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ দল বড় একটি সাপোর্ট পাচ্ছে। তিনি দলের স্পিন বোলিং কোচ ডেনিয়েল ভেট্রোরি। ভারতীয় দলের টি-টোয়েন্টিতে জয়ের হার সবচেয়ে কম নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। আর এই কিউই কিভাবে ভারতকে দমিয়ে রেখেছেন তার স্পিন বিষ দিয়ে, এখন সেই টোটকা তিনি তার শীর্ষ্যদেরও শেখাবেন। তাতেই ভারত বধের একটি ছক তৈরি হতে পারে।

বাংলাদেশের জন্য আরেকটি আক্রমণ হতে পারে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের অনভিজ্ঞতা। ভারতীয় গনমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ভারতীয় ব্যাটিং নির্বাচকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। ওপেনিংয়ে ধাওয়ান ব্যাটে রান পেলেও টি-টোয়েন্টি সুলভ মেজাজে মোটেই খেলতে পারছেন না। ভারতীয় নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলির অনুপস্থিতি ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মিডল অর্ডার এখনও সেভাবে পরীক্ষিত নয়। প্রথম ম্যাচে এই দুর্বলতাকে কাজেও লাগিয়েছেন বাংলাদেশী বোলাররা।

পরিসংখ্যান বলছে, দু’দলের ১০ বারের দেখায় ভারতের জয় ৯ বার। বাংলাদেশের ১ বার। সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশের কোন জয়ই ছিল না ভারতের বিপক্ষে। তাই ইতিমধ্যেই একটি ইতিহাস হয়ে গেছে। এবার সিরিজ জয় করে আরেকটি ইতিহাস গড়ার সামনে টাইগাররা। পারবে কি মাহমুদউল্লাহ ব্রিগেড?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ