Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের মানচিত্র পুড়িয়েছে নেপালিরা

কালাপানি নামক একটি ভূখন্ড নিয়ে বিরোধ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ভারতের প্রকাশিত নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র নেপালে তীব্র বিতর্ক তৈরি করেছে। কালাপানি নামক একটি ভূখন্ড নিয়ে এই বিরোধ। ভারত ও নেপাল দু’দেশই এর উপর নিজের অধিকার দাবি করছে। নেপালের বিরোধী দলগুলো রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ভারতের এই ‘অবৈধ দখলদারিত্বের’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে। কালাপানি এলাকাটি ভারতীয় রাজ্য উত্তরখন্ড সংলগ্ন। নেপাল সরকারের মানচিত্রে একে নেপালের ভূখন্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে। নেপালের সঙ্গে ৮০ কিলোমিটার ও চীনে সঙ্গে ৩৪৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে উত্তরখন্ডের। নেপালের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র নারায়ণ কাজি সেরেস্তা আল-জাজিরাকে বলেন, কালাপানি নেপালের ভূখন্ড এবং এই বিশ্বাসের প্রতি আমাদের দলের অবস্থান সুদৃঢ়। ভারত বার বার এই এলাকাটি নিজেদের বলে দাবি করেছে কিন্তু আমরা আমাদের দাবি ছাড়িনি। বৃহস্পতিবার রাজধানী কাঠমান্ডুতে ভারতীয় দ‚তাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করে বিরাধী দল নেপালি কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন। তাদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিলো ‘ভারত ফিরে যাও’। তারা সেখানে ভারতের নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র পোড়ায়। ছাত্রদের এই বিক্ষোভ ২০১৫ সালে ভারতীয় অবরোধের বিরুদ্ধে নেপালবাসীর বিক্ষোভের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। দেশের সর্ব-পশ্চিমে ৩৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ভ‚খÐটি নেপালের বলে কাঠমান্ডু সরকার যে দাবি করছে তাকে সমর্থন করেছে সামাজিক গণমাধ্যম ব্যবহারকারীরা। নেপালের জরিপ বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক বুদ্ধি নারায়ণ সেরেস্তা বলেন, এই এলাকাটি একসময় ভারত ও দক্ষিণপশ্চিম চীনের মধ্যে বাণিজ্য পথ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ১৯৬২ সালে চীনের সঙ্গে যুদ্ধে হেরে গিয়ে ভারত সেনাপ্রত্যাহারের সময় এই এলাকাটি দখল করে। গত বুধবার নেপাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নেপাল সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে কালাপানি এলাকাটি নেপালের অংশ। কিন্তু ভারতীয় পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র এলাকাটিকে ভারতের অংশ বলে দাবি করেন। ভারতীয় মুখপাত্র রাভিশ কুমার বলেন, আমাদের মানচিত্রে সার্বভৌম ভারতীয় ভ‚খÐের চিত্র নির্ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই মানচিত্রে কোনভাবেই নেপালের সঙ্গে আমাদের সীমানা পরিবর্তন করা হয়নি। মুখপাত্র সংলাপের মাধ্যমে বিতর্কের অবসান করা হবে বলেও উল্লেখ করেন। গত ৫ আগস্ট অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য মর্যাদা বাতিল করে একে দুটি কেন্দ্রশাসিত ভ‚খÐে পরিণত করার পর গত সপ্তাহে ভারত নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করে। কাঠমান্ডু ও নয়া দিল্লি সীমান্ত বিরোধ মেটাতে বহু দফা আলোচনায় বসলেও কালাপানি ও দক্ষিণ নেপালের সুস্তা এলাকাগুলো নিয়ে বিরোধ থেকেই গেছে। চীন ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যপথের উপরে কালাপানির সঙ্গে একটি টি-জংশন লিপুলেখ গিরিপথের উপরও নেপাল দাবি জানিয়ে আসছে ২০১৫ সাল থেকে। সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞ বিপিন অধিকারী বলেন: আপনি যদি ঐতিহাসিক প্রমাণের দিকে যান তাহলে সেখানে স্পষ্টভাবে দেখবেন যে কালাপানি হচ্ছে নেপালের অংশ। ভারত সেটা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। ভারত ও নেপালের মধ্যে ১,৮০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। কর্ম ও পর্যটন উপলক্ষে দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিনই এই সীমান্ত অতিক্রম করছে। ২০১৫ সালে ভ‚বেষ্টিত নেপালের বিরুদ্ধে ভারতের কথিত অবরোধ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে তলানিতে নিয়ে যায। এতে নেপালে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দেয়। নেপালের অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে ভারত ১৯৫০ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত শান্তি ও মৈত্রী চুক্তিকে সম্মান দেখায়নি। এসএএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ