Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তীব্র হচ্ছে আন্দোলন, বাগদাদ অবরুদ্ধ

বিক্ষোভ বন্ধের আহ্বান, ইরানি কনস্যুলেটে হামলা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদিল আব্দুল মাহদি চলমান বিক্ষোভ অবসানের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এই বিক্ষোভের কারণে দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জাতীয় অর্থনীতিকে যে কোনো ধরনের বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এই বিক্ষোভ বন্ধ করা উচিত বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আদিল মাহদি বলেন, বিক্ষোভকারীরা দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে এবং গত কয়েকদিনের বিক্ষোভে কয়েকশ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, এখনই বিক্ষোভ বন্ধ করার সময়। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া উচিত এবং কল-কারখানা, দোকানপাট এবং বাজারগুলোতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি আসা জরুরি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পর্যায়ে যেসব বিনিয়োগকারী ইরাকের উন্নয়নে গুরুত্বপ‚র্ণ ভ‚মিকা পালন করছেন তাদের কর্মকান্ডে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে এই বিক্ষোভের কারণে। এছাড়া, ২০২০ সালের জাতীয় বাজেট প্রণয়নের কাজও বিক্ষোভের কারণে বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানান তিনি। ইরাকের চলমান বিক্ষোভের কারণে গত বুধবার থেকে দেশের প্রধান বন্দর ওমর কাসর সম্প‚র্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। এদিকে, ইরাকের রাজধানী বাগদাদে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা বাগদাদের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে কার্যত নগরীটি অচল করে দিয়েছে। বিবিসি জানায়, রোববার বিক্ষোভকারীরা বাগদাদের প্রধান সড়কগুলোগুলো বন্ধ করে দিয়ে রাজধানীকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এদিন শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজের সামনের সড়কে বসে পড়ে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভের কারণে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২৫ বছরের এক বিক্ষোভকারী বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত দুর্নীতিবাজ লোকজন এবং চোরদের লাথি মেরে বের করে দেওয়া না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সড়ক বন্ধ করে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা সরকারকে কঠিন সতর্কবর্তা দিতে চাই।” “শুধুমাত্র জরুরি সেবা ছাড়া অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের আমরা নিজেদের কার্যালয়ে যেতে দেব না।” বাগদাদের দক্ষিণ-প‚র্বাঞ্চলের কুট নগরীতেও একই ধরনের বিক্ষোভ আন্দোলন হচ্ছে। রোববার আরো দক্ষিণের বহু শহর এবং নগরীতে সরকারি কার্যালয় এবং স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মসংস্থান সংকট দ‚র করা, সরকারের দুর্নীতি বন্ধসহ সরকারি সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে গত ১ অক্টোবর থেকে বাগদাদে মানুষের আন্দোলন-বিক্ষোভ তীব্র হচ্ছে। শনিবারের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এক বিক্ষোভকারী নিহত ও ৯১ জন আহত হওয়ার পর আন্দোলনে তীব্রতা বেড়েছে। অপরদিকে, ইরাকে মাসখানেক ধরে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই রবিবার রাতে দেশটির কারবালা ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালানো হয়েছে। তবে এতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আল জাজিরা-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডজনখানেক বিক্ষোভকারী এ হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা কনস্যুলেট ভবনে উড্ডয়নরত ইরানি পতাকা সরিয়ে নামিয়ে ফেলে সেখানে একটি ইরাকি পতাকা উড্ডীন করে দেয়। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মসংস্থানের সংকট, নিম্নমানের সরকারি পরিষেবা এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাগদাদের রাজপথে নামেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের অনুসারী না হয়েও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আওয়াজ নিয়ে রাজপথে নামেন আন্দোলনকারীরা। নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালিয়ে তাদের ওপর চড়াও হলে এই বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন শহরে। বিবিসি, আনাদোলু , আল-জাজিরা, পার্সটুডে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ