Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাকিব-তামিমের জন্য এ জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪১ এএম

গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। সে সময় তাঁর চেহারাই বলে দিচ্ছিল কতটা হতাশ হয়েছেন তাতে। কিন্তু কাজের কাজটা আগেই করেছেন সৌম্য সরকার। প্রথমে অভিষিক্ত মোহাম্মদ নাঈমের সঙ্গে শুরুর ধাক্কা সামলেছেন। এরপর মুশফিকের সঙ্গে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়া জুটি গড়েছেন। জয়ের নায়ক যদি মুশফিক হন, সে ক্ষেত্রে পার্শ্বনায়ক অবশ্যই সৌম্য। সে জয়টা তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের প্রতি উৎসর্গ করেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার।।
ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে কখনো জেতেনি বাংলাদেশ। প্রথম ৮ ম্যাচের আটটিতেই হার। শেষ বলের সমীকরণ মেটানো হয়নি দুইবার। ওদিকে ভারতের মাটিতে কোনো সংস্করণেই কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। এমন এক পরিস্থিতিতে ভারতে সিরিজ খেলতে গিয়েছে ভগ্ন হৃদয় নিয়ে। পারিবারিক কারণে তামিম নেই এ সফরে। আর আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় ছিটকে গেছেন অধিনায়ক সাকিব।
গতকাল তবু উজ্জীবিত এক বাংলাদেশের দেখা মিলেছে। দূষণের শঙ্কা শেষে ম্যাচ শুরু হতেই ভারতকে চেপে ধরেছে বোলাররা। প্রথমে যে উইকেটে রান উৎসব হবে বলে ভাবা হয়েছিল, সে উইকেটেই ভারতকে ১৪৮ রানে আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের শুরুতে লিটনের বিদায়ে ধাক্কা লেগেছিল। এমন অবস্থাতে নেমেই দলকে রান তাড়ার করার কঠিন কাজ থেকে বিচ্যুত হতে দেননি। ৪৬ ও ৬০ রানের দুটি জুটি গড়েছেন। ৩৫ বলে ৩৯ রান করেছেন। মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়ার সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচ থেকে ছিটকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু সৌম্য জানালেন তারা জানতেন শেষ দিকে ম্যাচ বের করা যাবে, ‘আমরা সবাই শান্ত ছিলাম। জানতাম ধৈর্য ধরলে এটা সম্ভব।’
সাকিব ও তামিমকে ছাড়া খেলতে এসেও ভারতকে প্রথমবারের মতো হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এমন জয়ের পর তাই দলের মহাগুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্যকে মনে করলেন সৌম্য, ‘তামিম ও সাকিব আমাদের অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। অবশ্যই তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন দলে। এ জয় তাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করছি।’
শেষ ২ ওভারে যখন প্রয়োজন ২২ রান, ১৯তম ওভারের শেষ চার বলে খলিল আহমেদকে টানা চার মেরে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান মুশফিক। গত কয়েক বছরে বেশ কবার কাছে গিয়েও হেরেছিল বাংলাদেশ। মুশফিক নিজে পারেননি কাজ শেষ করতে। এবার সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি হয়নি। ৪৩ বলে ৬০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে মুশফিক ফিরেছেন দলের জয় সঙ্গে নিয়ে। মুশফিকের চোখেমুখে তাই ছিল অপরিসীম এক তৃপ্তির ছায়া। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে এসে এভাবেই জানালেন নিজের অনুভূতি, ‘আমরা খেলেছি বিশাল এক দর্শকের সামনে, যা অন্যরকম এক অনুভূতি। জয়টি এসেছে অনেকের প্রচেষ্টায়। আমি আর সৌম্য আলোচনা করছিলাম ম্যাচটি শেস করতে পারবো, এ নিয়ে। তবে আউট হবার আগে সে (সৌম্য) তার নিজের কাজটি করে গেছে। অন্য বোলারদের মতো অভিষেকেই নাঈম নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে। আমি আমার কাজটি করে গেছি। সামনে এভাবেই দেশের ক্রিকেটে অবদান রেখে যেতে চাই।’
২০১৬ সালে বেঙ্গালুরুতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৩ বলে ২ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। এবার মাহমুদউল্লাহও ছিলেন উইকেটে। তিনিও এদিন অবদান রেখেছেন ফিনিশিং টাচে। শেষ ওভারে তার ছক্কায় নিশ্চিত হয়েছে জয়। এই উইনিং ছক্কার সঙ্গে একটি চারে ৭ বলে ১৫ রানের ইনিংসটিও যে গুরুত্বের বিচারে অপরিসীম। সাকিবের অবর্তমানে দলের এমন জয়ে অবদান রাখতে পেরেই খুশি বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘শুরু থেকেই আমরা যে উজ্জ্বীবনী শক্তি নিয়ে খেলছিশার এটা (জয়) তারই ফসল। তবে বোলাররা তাদের কাজটি করে যাওয়াতেই আমাদের (ব্যাটসম্যানদের) জন্য পথটা সহজ হয়েছে। বিশেষ করে মুশফিক এবং সৌম্য দারুণ দেখিয়েছে। আর অভিষেকেই নাঈমের ব্যাটিং দূর্দান্ত সূচনা এনে দিয়েছে। আমি মনে করি তাদের সমন্বিত পারফরম্যান্সেই অধিনায়কত্ব করাটা সহজ হয়েছে।’
ঘরের মাঠে তো বটেই, টি-২০ ক্রিকেটেই বাংলাদেশের কাছে আগের আটবারের দেখায় একবারও হারতে হয়নি ভারতকে। তবে এবার বাজি পাল্টে তাদেরই মাঠে হারিয়েছে আনকোড়া এক বাংলাদেশ। এই জয়ে বাংলাদেশকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন ভারতের ভারপ্রাপ্ত (বিরাট কোহলির অবর্তমানে) অধিনায়ক রোহিত শর্মা, ‘কোনভাবেই বাংলাদেশের কাছ থেকে এর কৃতিত্ব ছিনিয়ে নেয়া যাবে না। আমাদের ব্যাটিংয়ের শুরুতেই দুটো ব্রেক-থ্রু, যা আমাদের বড় স্কোর গড়তে দেয়নি। সেখান থেকেই আমাদের চেপে ধরা- সবকিছুই তাদের ফেভারেই ছিল।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ