Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আলোচিত ট্রলি ব্যাগে খণ্ডিত লাশের খুনি সনাক্ত, আদালতে স্বীকারোক্তি

বোনকে বিরক্ত করায় খুন হয় বকুল : ৩ ভাই-বোন ও ভাবীসহ গ্রেফতার ৪

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:১৮ পিএম

ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ এলাকায় ফেলে যাওয়া আলোচিত ট্রলি ব্যাগে উদ্ধার হওয়া খণ্ডিত লাশের খুনিরা সনাক্ত হয়েছে। একটি চিরকুটের সূত্র ধরে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ৪ খুনি এ ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো: শাহ আবিদ হোসেন। 

বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে পুলিশ সুপারের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করা হয়।

জানা যায়, গত ২০অক্টোবর ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ এলাকায় ফেলে যাওয়া রহস্যময় ট্রলি ব্যাগে বোমা সন্দেহে তোলপাড় সৃষ্টি হয় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ভেতরে-বাইরে। অবশেষে ঢাকা থেকে আসা বোম জিসপোজাল ইউনিটের সহায়তায় পরদিন ২১অক্টোবর ট্রলি ব্যাগ খুলে হাত, পা ও মাথাবিহীন একটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার হলে রহস্য আরো জটিল আকার ধারন করে। এরপর ২২ অক্টোবর কুড়িগ্রাম জেলার পৃথক পৃথক স্থানে একটি ব্যাগে দুইটি কাটা পা, দুইটি হাত এবং অপর একটি ভ্যানেটি ব্যাগে মাথা পাওয়া গেলে বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তবে কুড়িগ্রামে উদ্ধার হওয়া ব্যাগে পাওয়া একটি চিরকুটের সূত্র ধরে তদন্তে নতুন মোড় পায় ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের একটি টিম। ওই চিরকুটের সূত্রধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অবশেষে গত ২৮ অক্টোবর গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থেকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই নারী ও দুই যুবককে গ্রেফতার করে ডিবি।

তারা হলেন- নেত্রকোনা পূর্বধলা উপজেলার হুগলা গ্রামের ফারুক মিয়া(২৫), তার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার(২২), ভাই হৃদয় মিয়া(২০) ও বোন সাবিনা আক্তার(১৮)। তবে ফারুকের স্ত্রী মৌসুমীর বাড়ী কুড়িগ্রাম কৃঞ্চপুর মিয়া পাড়া এলাকায়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানায়, নিহত ব্যাক্তির নাম মো:বকুল মিয়া (২৮)। সে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার হুগলা গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের পুত্র। মূলত সাবিনা আক্তারকে প্রতিবেশী বকুল মিয়া র্দীঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করে আসছিল। তবে ব্যক্তি জীবনে বকুল ৩টি মামলার আসামী হওয়ায় এবং তার বেপরোয়া কর্মকান্ডে সাবিনা আক্তার বখাটে বকুলের প্রস্তাবে রাজী না হলে দু’জনের মধ্যে শত্রæতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু বকুল পিছু না ছাড়ায় ছলনার আশ্রয় নেয় সাবিনা। পরে সাবিনা আক্তার তার দুই ভাই ও ভাবীর সাথে পরিকল্পনা করে বখাটে বকুলকে প্রেমের ছলনায় ফাঁসিয়ে জয়দেবপুর বাঘের বাজার বানিয়ার চালা এলাকার ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে খুন করে এবং ঘটনটি গোপন করার উদ্দেশ্যে বকুলের শরীর থেকে হাত,পা ও মাথা খন্ড খন্ড করে সাবিনার ভাবী মৌসুমীর বাড়ী কুড়িগ্রামে হাত,পা ও মাথা এবং ময়মনসিংহে খন্ডিত দেহ ট্রলি ব্যাগে ফেলে পালিয়ে যায় তারা।

ময়মনসিংহ জেলা ডিবি পুলিশের ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। প্রথম দিকে ঘটনার রহস্য উন্মোচনে কোন তথ্য না পাওয়া গেলেও ব্যাপক তদন্তে একটি চিরকুটের সূত্রধরে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে। সেই সাথে এ ঘটনায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতরা করে খুনে ব্যবহৃত একটি ছুরি, একটি মোবাইল ফোন, একটি কাপড়ের ব্যাগ এবং একটি ইটের অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ