মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বহুমুখী শিল্পায়নে উন্নতির স্বর্ণশিখরে পৌঁছা চীনে বিপুল শ্রমিক রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিনের সুসম্পর্কের জের ধরে সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিলে চীনকে বাংলাদেশের বিরাট এক শ্রমবাজারে পরিণত করা যায়। চীনের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় হাজার হাজার শ্রমিক সংকট রয়েছে। এক্ষেত্রে দক্ষ এবং অদক্ষ দুই ধরনের শ্রমিকেরই বিরাট কদর রয়েছে দেশটিতে। সর্বনিম্ন আটশ’ ডলার (প্রায় সত্তর হাজার টাকা) থেকে তিন হাজার ডলার (প্রায় দুই লাখ ষাট হাজার টাকা) পর্যন্ত একজন শ্রমিক আয় করতে পারে।
আকারে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হলেও ক্রমে অর্থনীতিতে শীর্ষে পৌঁছে যাচ্ছে চীন। দেড়শ’ কোটিরও বেশি মানুষের দেশটির অভ্যন্তরীন বাজারও বিশাল। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে চীন পৃথিবীব্যাপী ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। আর রপ্তানি বাণিজ্য এবং নিজেদের চাহিদা মেটাতে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে হরদম চলছে উৎপাদনের এক মহাযজ্ঞ। হাতে গোনা দুয়েকটি জিনিস ছাড়া চীন পৃথিবীর প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যই উৎপাদন করে। এমন কোন পণ্য নেই যা চীনের কোন না কোন প্রদেশে তৈরি হচ্ছে না। শিল্পায়নে চীনের সরকার নানা ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকে। প্রাদেশিক সরকারগুলোও দেয় নানা ধরনের প্রনোদনা। সুযোগ সুবিধা। এতে করে চীনের শিল্পক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে। হাজার হাজার শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব কারখানায় পণ্য উৎপাদনে জড়িত বিপুল শ্রমশক্তি। নিজেদের শ্রম শক্তির বাইরেও চীনে বহু সংখ্যক বিদেশি শ্রমিক কাজ করে। বিশেষ করে আফ্রিকা অঞ্চলের বহু শ্রমিক রয়েছে দেশটিতে। তৈরি পোষাক শিল্পে বিশ্বের শীর্ষস্থানে থাকা দেশটি বছরে ৪৫০ বিলিয়নেরও বেশি পোষাক রপ্তানি করে। হাজার হাজার ছোট বড় শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে চীনের শহর বন্দর এবং গ্রামে। কুঠির শিল্পের মতো বিস্তার ঘটেছে বিভিন্ন শিল্প কারখানার। ঘরে ঘরে নানা ধরনের শিল্প কারখানা গড়ে উঠায় বিপুল জনগোষ্ঠির দেশটিতে তৈরি হয়েছে শ্রমিক সংকট। মজুরিও বেড়ে গেছে। মজুরি দিয়েও প্রয়োজনীয় শ্রমিক না পাওয়ার মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চীনের কোন শিল্প কারখানায় মাসিক আটশ ডলারের নিচে কোন শ্রমিক নেই। কিছুটা দক্ষ হওয়ার সাথে সাথে বেড়ে যায় মজুরি। তৈরি পোষাক, মেশিনারিজ, জাহাজ নির্মান, রেলগাড়ি নির্মাণ, রেলের ইঞ্জিন নির্মান, অটোমোবাইল, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, ইলেক্ট্রক, ওষুধ, কেমিক্যালসহ হেন কোন খাত নেই যেখানে শ্রমিক সংকট নেই। এই সংকট ঘুচাতে চীনের শিল্পকারখানাগুলো অটোমেশানে চলে যাচ্ছে। স্থাপন করা হচ্ছে নানা রোবটিক মেশিনারিজ। এতে শ্রমিকদের কাজ কমে যাচ্ছে। চীন সরকারও অটোমেশানে বিশেষ প্রনোদনা দিচ্ছে। বিভিন্ন কারখানায় মানুষবিহীন অটোমেটিক যন্ত্র স্থাপন করলে ব্যাপকহারে ইনসেনটিভ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এত কিছুর পরও বিশাল বাজারে তার প্রভাব পড়েছে খুবই সামান্য। এখনো বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক সংকট এবং হাজার হাজার শ্রমিকের কাজের সুযোগ রয়েছে।
শিল্পের পাশাপাশি কৃষি সেক্টরেও চীনে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ চীনে লাখ লাখ একর জায়গা অনাবাদী পড়ে আছে। শ্রমিক সংকটে আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ। চীনে লোকবল রপ্তানির মাধ্যমে নতুন একটি শ্রমবাজার তৈরি করতে পারে। তারা বলেন, চীনের অসংখ্য কারখানায় কাজের যে সুযোগ রয়েছে তাতে বাইরের লোকের খুব বেশি অংশীদারিত্ব নেই। আফ্রিকা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের বহু সংখ্যক শ্রমিক কাজ করলেও বাংলাদেশের খুব বেশি লোকজন নেই। গুয়ানজু এবং কুনমিং এলাকায় বাংলাদেশি কিছু মানুষ ব্যবসা বাণিজ্য করলেও চীনের বিশাল শ্রমবাজারের পুরোটাই রয়ে গেছে অধরা। চীনে ব্যক্তি উদ্যোগে গিয়ে কাজ করার সুযোগ খুব একটা নেই বলে মন্তব্য করলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তবে সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে চীনে নয়া একটি শ্রমবাজার সৃষ্টি করা যাবে বলে মনে করেন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।