Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দূষণে টি-২০, কুয়াশাতেও টেস্ট!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশ ও ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি হবে দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে (সাবেক ফিরোজ শাহ কোটলা)। দিল্লিতে বলেই যত শঙ্কা ম্যাচটি ঘিরে। দীপাবলির পরবর্তী এই সময়ে বায়ুদূষণ চরম মাত্রায় পৌঁছায় ভারতের রাজধানীতে। ম্যাচের দিন বায়ুদূষণের শঙ্কা থাকলেও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) জানিয়েছে, সূচি অনুযায়ী মাঠে গড়াবে প্রথম টি-টোয়েন্টি। বিসিসিআই-এর এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, ‘আমরা দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা বলেছে ৩ নভেম্বরের দিনটিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। তাদের পরামর্শ মতেই দিল্লিতে ভেন্যু নির্ধারণ করেছিলাম।’ যদি বায়ু দূষণের অবস্থা অসহনীয় হয়ে দাঁড়ায় তখন কী করবে বিসিসিআই? এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ‘এখন পর্যন্ত সব কিছুই ঠিক হয়ে আছে। আমার মনে হয় না পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে।’

দীপাবলির পরের সকালেই দিল্লির বায়ুকে ‘খুবই বাজে’ ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়েছে। দিল্লির বায়ুমান এমনিতেই আশঙ্কাজনকভাবে দূষিত থাকে এই সময়টায়। সবশেষ ২০১৭ সালে এই দূষণেই খেলা বন্ধের উপক্রম হয়েছিল শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মধ্যকার একটি টেস্টে। সে সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল বলে জানিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা। এমনকি ফিল্ডিংয়ের সময়েও মাস্ক পড়েছিলেন মাঠে!

ভারত সফরে বাংলাদেশ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলবে ৩ নভেম্বর। প্রথম ম্যাচটি হবে দিল্লিতে। ৭ নভেম্বর রাজকোট এবং ১০ নভেম্বর নাগপুরে বাকি দুটি টি-টোয়েন্টি হবে। ইন্দোরে প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১৪ নভেম্বর। ২২ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স।

এই টেস্টটি গোলাপি বলে (দিন-রাতের) আয়োজন করার কথা ভাবছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও দিয়েছে তারা। এখন বাংলাদেশের ওপরই নির্ভর করছে কলকাতা টেস্টটি আদৌ দিনরাতের হবে কিনা। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির প্রধান সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান জানিয়েছেন এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বোর্ড। সিদ্ধান্ত তো দূরের কথা, একদিন আগ পর্যন্ত এ নিয়ে নাকি আলোচনাও হয়নি, ‘বিসিসিআই আমাদের কাছে একটা প্রস্তাব পাঠিয়েছে। টেস্ট সিরিজের দুই টেস্টের মধ্যে একটি টেস্ট দিনরাতের করার জন্য। আমরা এখনো এ নিয়ে সিদ্ধান্তে যাইনি। আমরা কিছুদিন এ প্রস্তাব নিয়ে ভেবে দেখব। তারপর আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানাব বিসিসিআইকে।’

রাজি না হলেও বিষয়টা হয়তো খুব বেশি দিন ঝুলিয়ে রাখবেন না বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রশাসকেরা। সূত্র জানিয়েছে, আজ-কালের মধ্যেই এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত ভারতীয় বোর্ডকে জানিয়ে দেওয়া হবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের কোচ, খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

তবে শঙ্কা দেখা দিচ্ছে আরেক জায়গায়। দিবা-রাত্রির এই টেস্টটি শুরু হবার কথা ২২ নভেম্বর। চূড়ান্ত না হলেও ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতিটা সেভাবেই নিচ্ছে কলকাতা। দিবারত্রির টেস্টের জন্য যা যা দরকার, সেগুলো প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত আয়োজকরা। ইডেন গার্ডেনের প্রধান কিউরেটর সুজন মুখার্জি জানালেন, প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। শুধু এখন অনুমোদনের অপেক্ষা, ‘আমরা শেষ কথার অপেক্ষায় আছি। আশা করছি, এটা হবে। তবে আমাদের আলাদা করে তেমন কিছু করতে হবে না। পিচ তো পিচই। আমরা আশা করছি স্পোর্টিং পিচ হবে, যেখানে কিছুটা পেস থাকবে।’

হঠাৎ করে এই টেস্টটা দিবারাত্রির হলে শুধু যে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা প্রস্তুতি ঘাটতিতে বিপদে পড়বেন, তা-ই নয়। এই টেস্টে ঝামেলা হতে পারে কুয়াশা নিয়েও। শীতকাল এসে পড়েছে, বাংলাদেশের মতো ভারতেও পূর্বাঞ্চলে এখন প্রচুর শিশির পড়ে। শিশির বেশি থাকলে বল ভিজে যাবে, তাতে করে বোলারদের সেটা গ্রিপ করতে সমস্যা হবে। হয়তো পেসাররা আর্দ্র আবহাওয়ায় বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন। পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে না গেলে তাই বিপদে পড়তে পারেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তবে বিসিসিআইয়ের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি এই টেস্টটা দিবারাত্রির আয়োজনেরই পক্ষে। এমনকি ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিও তাতে সম্মতি দিয়েছেন। গতপরশু ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেকা করার পর সৌরভ বলেন, ‘আমরা সবাই এটা নিয়ে ভাবছি। আমরা তেমন কিছু করতে চাই। আমি দিবারাত্রির টেস্টের বড় একজন সমর্থক। কোহলিও এতে সম্মতি দিয়েছে। অনেক পত্রিকায় দেখলাম, কোহলি রাজি নয়, কিন্তু এটা ভুল খবর।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ