গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
গতকাল রাতে সউদী আরব থেকে শতাধিক কর্মী দেশে ফিরেছেন। সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, অবৈধ শ্রমিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে সউদী পুলিশ। গত আড়াই বছরে বিভিন্ন দেশের প্রায় ১০ লাখ কর্মীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, কাজ নিয়ে সৌদি আসা কর্মীদের মালিক (কফিল) বা কাজ পরিবর্তনের সুযোগ নেই। যে কাজ নিয়ে তারা আসেন, তার বাইরে কিছু করার আইনগত অধিকার নেই তাদের। তাই বৈধভাবে আসার পরও অনেকে কাজ পরিবর্তন করার কারণে অবৈধ হয়ে পড়েন।
এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ব্যক্তিগত গাড়ির চালক হিসেবে সউদী আরবে যান নারায়ণগঞ্জের সাইফুল ইসলাম। সেখানে গৃহকর্তার বাসার এবং বাগানের পরিচর্যার কাজও করতে হতো তাঁকে। দিনের কাজ শেষে রাত ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত গাড়ি চালাতেন। এত পরিশ্রমের পর চার ঘণ্টাও ঘুমাতে পারতেন না। এভাবে পাঁচ মাস কাজ করার পর পালিয়ে যান তিনি। ১৮ অক্টোবর রিয়াদে সউদী পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
গত শুক্রবার রাতে ফিরে কাছে এই বর্ণনা দিয়েছেন সাইফুল। তিনি বলেন, ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে সউদীতে যান। পাঁচ মাসের বেতন সউদী আরবের নিয়োগদাতা কোম্পানির কাছে জমা আছে। দেশে কোনো টাকা পাঠাতে পারেননি। ফিরে এসেছেন এককাপড়ে। সাইফুলের মতোই শূন্য হাতে সৌদি আরব থেকে গত ১০ মাসে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন প্রায় ১৮ হাজার কর্মী।
সাইফুলের মতোই শূন্য হাতে ফিরেছেন চট্টগ্রামের আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালের শেষ দিকে শ্রমিক ভিসায় সৌদি আরবে যান। এক বছরের মাথায় অবৈধ হয়ে পড়েন। গত দেড় বছর পালিয়ে থেকে কাজ করেছেন বিভিন্ন জায়গায়। গোপালগঞ্জের সম্রাট শেখ আড়াই বছর আগে গিয়েছিলেন। তার দাবি, ইকামা (কাজের বৈধ অনুমতিপত্র) থাকলেও পুলিশ তাকে ফেরত পাঠিয়েছে। গত শুক্রবার সৌদি এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে এই তিনজনসহ ফিরেছেন ২০০ প্রবাসী কর্মী। তাদের বক্তব্য, সৌদি আরবে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে। রাস্তায়, গাড়িতে, কারখানায়, থাকার জায়গায়—সবখানে তল্লাশি করছে দেশটির পুলিশ। কাগজপত্রে কোনো অসংগতি থাকলেই পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্র জানায়, ফিরে আসা কর্মীরা নানা কারণে অবৈধ হয়ে পড়েছিলেন। তাদের ট্রাভেল পাস (ভ্রমণের বৈধ অনুমতিপত্র) দিয়ে ফিরিয়ে আনা হয়। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে ফিরে এসেছেন প্রায় ১৮ হাজার কর্মী। এর আগে ২০১৭ সালে ফিরেছেন ১৬ হাজার ও ২০১৮ সালে ফিরেছেন ২৪ হাজার কর্মী। আর গত ১০ বছরে দেশটি থেকে শূন্য হাতে ফিরে এসেছেন ২ লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মী।
এদিকে অভিবাসন খাত নিয়ে কাজ করা বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রামরুর পরিচালক সি আর আবরার বলেন, যে কাজের কথা বলে নেওয়া হয়, তা দেওয়া হয় না। তাই বাধ্য হয়েই অন্য কোনো কাজের দিকে যান কর্মীরা। বৈধভাবে গিয়ে অবৈধ হয়ে পড়ার বিষয়টি ভালো করে খতিয়ে দেখা উচিত সরকারের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।