রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে সাইকেল চুরি করতে এসে শিক্ষার্থীদের হাতে ধরা পড়েছেন রাজু ওরফে এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি। পরে তাকে নিয়ে চুরি যাওয়া সাইকেল উদ্ধার করতে গিয়ে সন্ধান মিলেছে এক সিন্ডিকেটের। যারা চুরি থেকে শুরু করে বিক্রি পর্যন্ত বিভিন্নভাবে কাজ করছেন। শনিবার নবাব আব্দুল লতিফ হলের তিনটি সাইকেল নিজেই চুরি করেছেন বলে হল প্রভোস্ট ড. একরাম হোসেনের কাছে স্বীকার করেন আটক রাজু।

প্রতক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হলের সামনে থেকে রাজুকে আটক করে লতিফ হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে আসেন লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী আরিফ হোসেন। এসময় হল ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার সজল ও নিরঝরের নের্তৃত্বে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলেও অস্বীকার করেন। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হলে এর আগে চুরি হওয়া সাইকেলগুলো তিনি চুরি করেছেন বলে স্বীকার করেন।

সেখানে উপস্থিত আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার সজল বলেন, আটক ব্যক্তি নিজেকে নিদোর্ষ দাবি করলেও সিসিটিভির ফুটেজ দেখালে ইতোপূর্বে তিনটি সাইকেল তিনি চুরি করেছেন বলে স্বীকার করে। তার বাড়ি- চাঁপাইনবাবগঞ্জ বলে দাবি করে সে। পরে নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রাধ্যক্ষ একরাম হোসেনের উপস্থিতিতে মতিহার থানা পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর কাছে জানতে চাইলে বলেন, আগে হলে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও হল গেটের সম্মুখে কোন সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। হলের নতুন প্রভোস্ট ড. একরাম হোসন স্যার হলে দায়িত্ব নেয়ার পর সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। যার মাধ্যমে হলের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। কোন অপরিচিত ব্যক্তি হলে প্রবেশ করলে তাকে সহজে চিহ্নিত করা যায়।

এদিকে আটক রাজুকে নিয়ে সাইকেল চুরি থেকে বিক্রির সিন্ডিকেট খুজতে শুরু করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। রাজুর দেওয়া তথ্যে স্থানীয় কাটাখালি বাজারের পুরাতন সাইকেল আড়ত মতিহার সাইকেল ভান্ডারে পাওয়া যায় দুইটি সাইকেল।

সেখানে নেহাল নামের এক ব্যক্তি এই চক্রের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলে। তার সাথে রাজু নামের ব্যক্তির পরিচয় ছিলো এবং তার কাছে চুরির সাইকেল বিক্রি করতো।

এসময় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু বলেন, চুরি কৃত সাইকেল গুলোর রং পরিবর্তনসহ বিভন্নভাবে পরিবর্তন করে এই সিন্ডিকেট। এই আড়ত থেকে আগেও চুরি যাওয়া সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

গত ২৩ অক্টোবর ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নবাব আব্দুল লতিফ হলের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোস্তাকিমের সাইকেল চুরি যায়। এর পর থেকে সচেষ্ট ছিলো হল প্রশাসন।

জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট ড. একরাম হোসেন জানান, কয়েকজন হল ছাত্রলীগ নেতাকর্মী রাজুকে আটক করার পর আমাকে ফোন করেন। দ্রুত হলে চলে আসি। রাজুকে (চোর) সিসিটিভির ফুটেজ দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি এর আগে হল থেকে চুরি হওয়া ৩টি সাইকেলই চুরি করেছেন বলে স্বীকার করেন। রাজুকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে চক্রের সন্ধান পাওয়া যাবে।