বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
‘বিশ্ব পাগলের মেলা’ সাত দিনব্যাপী কুমিল্লার দেবিদ্বারে শুরু হয়েছে। মেলায় পাগল ছাড়াও বিভিন্ন জেলার কৌতুহলী মানুষের ভিড় বেড়েই চলছে। তবে বিশ্ব পাগলের মেলা এখন জমজমাট ভিন্ন কারণে। কারণ সেখানে এখন চলছে জুয়া আর মাদকের রমরমা কারবার।
এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ সুজন পাগলা। বয়স তার পঞ্চাশের কাছাকাছি। সুজন পাগলা আবার ‘তালা বাবা’ নামেও পরিচিত। এই সুজন পাগলের পুরো শরীরেই শিকল বাঁধা ও তালা লাগানো রয়েছে। শরীরে কাপড় না থাকলেও লজ্জাস্থানে রয়েছে ছোট্ট লাল কাপড়ের একটি লেংটি। দুই হাতে লম্বা লম্বা কাটা দাগ দেখে মনে হবে কেউ তাকে দুই হাতে কুপিয়েছে। দীর্ঘ ৩৬ বছর নাকি তিনি এ অবস্থাতেই থাকেন।
তার সেবক জানান, গত ২০ বছর ধরে তিনি কাঁচা গোশত ও মাছ ছাড়া কিছুই নাকি আহার করেন না। তাকে তালা বাবা নামেও ডাকা হয়। তার কোন সংসার নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খড়মপুর মাজারেই কাটে তার বেশির ভাগ সময়। পুরো মেলায় এভাবে ছোট ছোট তাবুতে আগরবাতি আর বড় বড় মোমবাতি জ্বালিয়ে গভীর ধ্যানে মগ্ন শত শত পাগল।
পুরো মেলা ঘুরে দেখা যায়, বিশাল গেটের ভিতরে টিন ও কাঠ দিয়ে বানানো প্যান্ডেলের ভিতরে চলছে ওয়াজ-নসিহত। প্যান্ডেলের পশ্চিমাংশে রয়েছে ছোট ছোট তাবু। তাবুর বেশির ভাগই বানানো লাল-সালু কাপড় দিয়ে। বড় বড় মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালিয়ে তাবুর ভিতরে নারী-পুরুষ ভক্তদের গানের জলসা চলছে। নারী-পুরুষ একত্রে মিলে চলে মাদক সেবন আর গান-বাজনা। এ যেন সত্যিই পাগলের হাট।
মাদক সেবন ও জুয়ায় যোগ দিচ্ছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যুবকরাও। সব মিলিয়ে এ যেনো মাদকসেবী ও জুয়াড়িদেরও মিলন মেলা।
এখানে বাইর থেকে আসা সন্দেহভাজন কাউকে দেখা মাত্রই নিরাপত্তায় থাকা স্বেচ্ছাসেবীর বাঁশির ফুঁয়ে সবাই সর্তক হয়ে যান। সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে চারদিক থেকে আসা বাঁশির শব্দে স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছিলো এটি মাদক সেবন ও জুয়াড়িদের জন্য একটি সতর্কমূলক বার্তা। এসময় সাংবাদিকদের দেখে মাদক সেবনকারীরা তাদের ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও লুকাতে চেষ্টা করেন।
মেলার উদ্যোক্তা নুরুল ইসলাম দয়াল সুজন জানান, নবীর আশেকানদেরকে এ বিশ্ব পাগলের মেলায় একত্র করা হয়। এ মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নবীর আশেক ও পাগল ভক্তরা জড়ো হয় নবীর সহবত পাওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ওসি মো. জহিরুল আনোয়ার জানান, যেকোন সময় পাগলের মেলায় অভিযান চালানো হবে। মাদকের সাথে যাদেরকে পাওয়া যাবে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব বলেন, বিশ্ব পাগলের মেলার খবর আপনার মাধ্যমেই প্রথম জানলাম। উনারা কার কাছ থেকে এ মেলার অনুমতি নিয়েছেন আমার জানা নেই। আমি স্পষ্টই বলে দিতে চাই, মাদকের সাথে ন্যুনতম কেউ জড়িত থাকলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ মেলার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। জানা গেছে, গত ২২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।