Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পিটিয়ে হত্যার সংখ্যা গোপন করেছে ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

সোমবার ভারতের ন্যাশন ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো তার ‘ভারতে অপরাধ প্রতিবেদন ২০১৭’ প্রকাশ করেছ। এতে দেশজুড়ে সংঘটিত অপরাধের তথ্য রয়েছে। তবে এটি প্রকাশই যে কেবল এক বছর বিলম্বিত হয়েছে তা নয়, সেইসাথে অনেক দিক দিয়েই এটি সমস্যাসঙ্কুলও। পিটিয়ে হত্যা, প্রভাবশালী লোকদের মাধ্যমে খুন, খাপ পঞ্চায়েতের নির্দেশে খুন, ধর্মীয় কারণে খুনের তথ্য সংগ্রহ করা হলেও তা প্রকাশ করা হয়নি। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, তথ্য প্রকাশ না করাটা বিস্ময়কর। এই তথ্য পুরোপুরে সঙ্কলিত ও বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। কিন্তু কেন প্রকাশ করা হলো না তা কেবল শীর্ষ কর্মকর্তারাই জানেন। ভারতে যখন পিটিয়ে হত্যা ও বিদ্বেষমূলক অপরাধ বাড়ছে, তখনই এই ঘটনা ঘটল। ভারতের দাঙ্গাবাজদের সহিংসতা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে গোরক্ষার নামে তা ভয়াবহ মাত্রায় করা হচ্ছে। এক দিকে এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাদ দেয়া হয়েছে প্রতিবেদন থেকে, অন্য দিকে ‘জিহাদি সন্ত্রাস’ নামের এক বিশেষ শ্রেণি প্রবর্তন করা হয়েছে। কেন কেবল মুসলিমদের করা অপরাধ এভাবে প্রকাশ করা হলো, তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। অন্যান্য ধর্মীয় শ্রেণির লোকজনের একই ধরনের অপরাধের কোনো পরিসংখ্যানও প্রকাশ করা হয়নি। এতে ক্ষমতাসীন বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ অপরাধ চিত্র প্রকাশে তাদের রাজনীতির প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি ফুটে ওঠেছে। বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদ ও পেশী শক্তির জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি নজর দেয়ার বিষয়টিই প্রকট হয়েছে পিটিয়ে হত্যার বিষয়টি বাদ দিয়ে এবং জিহাদি সন্ত্রাসের বিষয়টি এতে সম্পৃক্ত করে। বিজেপির রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণে তথ্যকে ব্যবহার করার মোদি সরকারের কৌশল এবারই প্রথমবারের মতো প্রয়োগ করা হয়নি। গত কয়েক বছর ধরেই গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানগুলো লুকানো হচ্ছে, প্রকাশে বিলম্ব করা হচ্ছে, সংখ্যাগুলো নিয়ে খেলা হচ্ছে। বর্তমান প্রশাসন বেকারত্ববিষয়ক তথ্য প্রকাশ করেনি, ২০১১ সালের বর্ণ আদমশুমারির প্রতিবেদন চেপে রেখেছে। দেশে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের অভাবের ফলে নয়া দিল্লি এবং সেইসাথে রাজ্যগুলোর নীতিনির্ধারকদের জন্য কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পিটিয়ে হত্যা নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে সেগুলো বন্ধ করা কঠিন হয়। বিশ্বাসযোগ্য অর্থনৈতিক উপাত্ত না থাকলে নীতিনির্ধারকেরা নীতি প্রণয়ন করতে সমস্যায় পড়বেন। ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্র উভয়ই ক্ষতির মুখে পড়বে। এসএএম।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ