Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নুসরাত হত্যা মামলার রায়ে আসামিদের স্বজনদের আহাজারি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৯, ৭:১৯ পিএম

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ জন আসামিকে মৃত্যুণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ। একই সঙ্গে সব আসামির এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা আদায় করে নুসরাতের পরিবারকে দিতে বলা হয়েছে রায়ে।

এ রায় ঘোষণার পর ফেনীর আদালত চত্বরে আসামিদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সন্তান-স্বজনরা জড়িত নয় বলেও দাবি তাদের।

নুসরাত হত্যা মামলার আসামি নুর উদ্দিনের মা রাহেলা বেগম বলেন, ‘অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে আমার ছেলেকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়। মামলায় ৮৭ জন আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কোনো সাক্ষী আমার ছেলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়নি।’

তিনি বলেন, পিবিআই তিন ঘণ্টা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আদালতে তার স্বীকারোক্তি আদায় করেছে। এ মামলার সঙ্গে আমার ছেলে কোনোভাবেই জড়িত হয়। আমরা অভাবি মানুষ। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে আমার ছেলেকে আমার কোলে ফিরে ফেতে চাই।’

মামলার আরেক আসামি মো. শামিমের মা হোসনে আরা বেগম তার ছেলে নির্দোষ দাবি করে বলেন, এ মামলা তাকে ঘর থেকে ধরে এনে ফাঁসানো হয়েছে।

কে ফাঁসিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা জানি না বলেন। নুসরাতের ঘটনার দিন আমার ছেলে আলিমের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পায়। এরপরও সে পরীক্ষায় অংশ নেয়।’

আবদুর রহিম শরিফের মা নুর নাহার কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার ছেলে কোনোভাবেই নুসরাত হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত নয়। অধ্যক্ষের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের কারণে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা এ রায় মানি না উচ্চ আদালতের মাধ্যমে আমার ছেলেকে নির্দোষ প্রমাণ করে ছাড়িয়ে আনব।

আদালত প্রাঙ্গণে নুসরাত হত্যা মামলার আসামি জাবেদ হোসেনের ভাই জাহেদ হোসেন, এমরান হোসেন মামুনের পিতা এনামুল হক, কামরুন নাহার মনির মায়ের সঙ্গে কথা হয়। আদালত প্রাঙ্গণে উচ্চস্বরে কেঁদে কেঁদে তারা এ মামলার রায় প্রত্যাখ্যান করেন।

এদিকে রায় ঘোষণার সময় কাঠগড়ায় থাকা আসামিরা নিস্তব্ধ হয়ে রায় শোনেন। পরে তারা অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ আসামিরা হাউমাউ করে কেঁদে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকালে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও বাদীপক্ষের খণ্ডন শেষে ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রায়ের দিন-তারিখ ঘোষণা করেন।

ফেনী জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহমেদ জানান, গত ৩০ মে বৃহস্পতিবার ফেনীর আমলি আদালতের বিচারক জাকির হোসাইন নুসরাত হত্যা মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রেরণের পর ৪৮ কর্মদিবস পর্যন্ত এ মামলার সাক্ষগ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়। ৬১ কর্মদিবসের দিন আলোচিত এ হত্যা মামালার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত।

গত ২৭ জুন মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এ মামলার ৯২ আসামির মধ্যে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার, বাবা একেএম মূসা ও ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হানসহ ৮৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। বাকি চারজনের পক্ষে নথিপত্র আদালতের পেশ করা হলে আদালত তা সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করেন।

নুসরাত হত্যা মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ ও পিবিআই অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ২১ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করে। পরে ২৯ মে ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় নূর হোসেন, আলা উদ্দিন, কেফায়েত উল্যাহ জনি, সাইদুল ও আরিফুল ইসলামের নাম অভিযোগপত্রে রাখেননি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌননিপীড়ের দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।

এর আগে বিভিন্ন সময় আদালতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নুসরাত হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->