Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি মাদারীপুরের মানুষ

প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা
মাদারীপুর জেলা সদর থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ের সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বাজার মনিটরিংয়ের কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন হু-হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। ফলে খেটে খাওয়া নি¤œ মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। রমজানের শুরু থেকেই পেঁয়াজ, রসুন, তেল, ছোলা, চাল-ডাল, বেসন, চিনিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম সাধারণ ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে দিন দিন। সিন্ডিকেট করে কৃত্তিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে এ সকল পণ্যের। জানা গেছে, সরকারের পে-স্কেল, রমজান ও বাজেটের প্রভাব ছড়িয়ে পড়লে একশ্রেণির অসাধু ও সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে প্রায় প্রতিদিনই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ওই সকল পণ্য বেশি দামে ক্রয় করে বাজারজাত করতে বাধ্য হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। এসব দেখভালের দায়িত্ব যাদের উপর ন্যস্ত-তারা রয়েছেন নীরব দর্শকের সারিতে। মনিটরিং না থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে এই সিন্ডিকেট। আমদানি নেই, বৃষ্টির কারণে মাল আসতে পারছে না, উৎপাদন নেই এমন নানা অজুহাতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মাদারীপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকা কেজি দরে। অথচ এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৫২ টাকায়, দুই সপ্তাহ আগের চিনির দাম ছিল ৫০ টাকা। বর্তমানে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে। অথচ ২ সপ্তাহ আগে বিক্রি হতো ৭৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হতো ৮০ টাকা। মোটা চালের কেজি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ২৭ টাকা আর ২ সপ্তাহ আগে দাম ছিল ২৫ টাকা। পোলাও‘র চাল বর্তমানে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও এর দাম ছিল ১০০ টাকা। সরিষার তেলের বর্তমান দর ১১০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০ টাকা। খেসারি ডাল দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা। সেই ডাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি। ২০০ টাকা কেজির গুঁড়া হলুদ বর্তমানে ২২০ টাকা দরে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান মোটা ডাল প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে হয়েছে ১০৫ টাকা। ৩৫০ টাকা দরের জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি। ইসুবগুলের ভুষি প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা। আগে বিক্রি হত ৭০০ টাকায় এখন দাম বেড়ে হয়েছে ৮০০ টাকা কেজি। কাচা মালের দামও বেড়েছে প্রতিটি পণ্যে ৫ থেকে ১০ টাকা করে। পেঁয়াজের দাম পূর্বে ছিল ২৫ টাকা, বর্তমানে ৩০-৩৫ টাকা, রসুন পূর্বে ছিল ৭৫ টাকা বর্তমানে ১০০ টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুরান বাজারের একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, চিনিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সিন্ডিকেট সৃষ্টিকারী কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মজুদ রাখা হয়েছে। খুচরা বিক্রেতারা কিনতে গেলে বাজার সংকটের কথা বলে ফিরিয়ে দিচ্ছে অথচ দাম বেশি দিলেই তারা পণ্য সরবরাহ করছে। সিন্ডিকেটের দাম বৃদ্ধির এই প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। মাদারীপুর অঞ্চলে চিনি সিন্ডিকেট মূলত নিয়ন্ত্রণ করেন দুই ব্যবসায়ী। তাদের কাছে চিনি পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সংকটের কথা বলে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেন। এই সিন্ডিকেটের কারণেই মাদারীপুর অঞ্চলে চিনির দাম বেশি। বাজারে সংকটের কথা বললেও তাদের ৭/৮টি গোডাউনে পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। মানিক নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নাকি সাধারণ মানুষের পক্ষের সরকার। ব্যবসায়ী ও কৃষক মরে গেছে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুণœ করার জন্যে পণ্য মজুত রেখে বাজার অস্থির করে তুলছে। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি মনিটরিং করার দাবি করছি।’ পুরান বাজারের খুচরা বিক্রেতা ইকবাল বলেন, ‘রমজানের জন্যে ছোলা, চিনির দাম, বাজেটের জন্যে সিগারেটের দাম এবং পে-স্কেলের জন্য অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে আমরা মনে করি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি মাদারীপুরের মানুষ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ