পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও আগের মতোই অনিরাপদ রয়ে গেছে সড়ক। গত বছর ২৯ জুলাই রাজধানীতে দুই শিক্ষার্থী নিহতের পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশব্যাপী তুমুল আন্দোলন শুরু হয়। যদিও নানা আশ্বাস ও উদ্যোগের মধ্যেই চাপা পড়ে গেছে নিরাপদ সড়কের দাবি। এর মধ্যেই প্রতিদিন ঘটে চলেছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। গত ৪ বছরে সারা দেশে ২১ হাজার ৩৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ সব দুর্ঘটনায় ২৯ হাজার ৩১৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আহত হয়েছেন আরও ৬৯ হাজার ৪২৮ জন। এছাড়া একই সময়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ৩১ হাজার ৯৪টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে, চলতি বছরের গত ৮ মাসে সারাদেশে ২ হাজার ৮০৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ও শিপিং এন্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (এসসিআরএফ) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নিরাপদ সড়ক দিবসকে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজে লাগানোসহ দিবসটিকে সামাজিক গণজাগরণ তৈরির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার আহ্বান জানায়। যাত্রী কল্যাণ সমিতি ছাড়াও নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন বেসরকারি ও স্বেচ্ছসেবী প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানায়, সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য নিয়ে তারা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। যদিও দুর্ঘটনার সিংহভাগ খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় না বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। সমিতির মতে, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে নেওয়া উদ্যোগগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ায় নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ৪ বছরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাস। এরপরে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ও অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন। সংস্থাটির তথ্যমতে, ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনের মধ্যে ২১.৩৩ শতাংশ বাস, ২১.১৮ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৬.৮৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ১৪.২৫ শতাংশ অটোরিকশ, ১৮.৩৩ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৯.১৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং ৮.৮৩ শতাংশ নছিমন-করিমন ও ট্রাক্টর রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৫ সালে ৬ হাজার ৫৮১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৮ হাজার ৬৪২ জন নিহত ও ২১ হাজার ৮৫৫ জন আহত হয়েছেন। ২০১৬ সালে ৪ হাজার ৩১২ দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫৫ জন নিহত ও ১৫ হাজার ৯১৪ জন আহত, ২০১৭ সালে ৪ হাজার ৯৭৯ দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩৯৭ জন নিহত ও ১৬ হাজার ১৯৩ জন আহত, ২০১৮ সালে ৫ হাজার ৫১৪ দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ২২১ জন নিহত ও ১৫ হাজার ৪৬৬ জন আহত হয়েছেন।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, নিরাপদ সড়ক দিবসকে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজে লাগাতে হবে। এর পাশাপাশি দিবসটিকে সামাজিক গণজাগরণ তৈরির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দেশে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ সড়কে প্রাণ দিচ্ছেন। আহত হচ্ছেন আরও অনেকে। তাদের সুরক্ষা দিতে দিবসটি অন্যান্য জাতীয় দিবসের ন্যায় গতানুগতিকভাবে একদিন পালন না করে ব্যতিক্রমীভাবে পালন করতে আহবান জানান। তিনি বলেন, মাসব্যাপী স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা, নিরাপদ সড়ক ব্যবহার সংক্রান্ত আলোচনা সভা, মসজিদ-মন্দির-গির্জায় সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনাসহ দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরলে দিবস উদযাপনের সুফল পাওয়া যাবে।
সমিতির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বর্তমান সময়ে সড়ক-মহাসড়কে উন্নয়নের ফলে যানবাহণের গতি বেড়েছে, এ সময়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এবং বিপজ্জনক ওভারটেকিং বেড়ে যাওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। আয়তন ও জনসংখ্যার ঘনত্বের তুলনায় বাংলাদেশে যেভাবে ছোট যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দুর্ঘটনা ও যানজট নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে।
এদিকে, সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গঠিত শিপিং এন্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) প্রকাশিত এক তথ্যে দেখা গেছে, গত ৮ মাসে সারাদেশে ২ হাজার ৮০৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ফেব্রুয়ারি মাসে। সড়ক দুর্ঘটনায় ওই একমাসে ৪১৫ জন প্রাণ হারায়।
গত ৬ সেপ্টেম্বর এসসিআরএফ কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সংযোগ সড়কে এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৫ জনের মৃত্যু হয়। সংস্থাটির মতে, সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান ১০টি কারণের মধ্যে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো, অদক্ষ চালক, ট্রাফিক আইনের অবমাননা ইত্যাদি প্রধান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের ২২টি জাতীয় পত্রিকা, ১০টি স্থানীয় পত্রিকা ও ৮টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।