পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের সমুদ্র সৈকতের দক্ষিণে আলী আকবর ডেইলের তাবলেরচর এলাকায় ২ দফায় ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলেও এ প্রকল্পের অধিনে সংযোগ নেয়া প্রায় ৫৫০ গ্রাহক দিন রাত ২৪ ঘন্টায় এক ঘন্টাও বিদ্যুৎ পান না বলে অভিযোগ করেছেন। আলো বিহীন এ বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনে ‘প্যান এশিয়া পাওয়ার সার্ভিসেস্ কোম্পানি লিমিটেড’ নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ খাতে বরাদ্দ দেয়া অর্থ সম্পুর্ণ অপচয় ও লুটপাট করেছে বলে ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেছেন।
উল্লেখ্য যে, গত ১২ অক্টোবর দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন সরেজমিনে কুতুবদিয়া দ্বীপ পরিদর্শণকালে বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প তিনি স্বচক্ষে দেখতে যান। এ সময় কুতুবদিয়ার মানুষ তার কাছে বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের সুফল না পাওয়ার অভিযোগ করেন। কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের তাবলেরচর গ্রামের বেড়িবাঁধের পাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রথম দফায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০টি টারবাইন (বায়ুকল) দিয়ে ১ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এ প্রকল্প স্থাপন করা হয় ২০০৬-০৭ অর্থবছরে।
প্রকল্প আলোর মুখ দেখার আগেই ২০১০ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন আঙ্গিকে ২০টি টারবাইন দিয়ে বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে। এতে আরও এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হয়ে বর্তমানে ২ মেগাওয়াটে উন্নিত করা হলেও প্রকল্পের মাধ্যমে কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইলের ৫৫০ গ্রাহক কোন সুফল পাননি। দেশের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস। দ্বীপের মানুষরা বিদ্যুৎ সেবা থেকে বঞ্চিত। তবে এ দ্বীপের মানুষের বিদ্যুতের ব্যবস্থা বলতে ডিজেল চালিত জেনারেটর এবং সৌর বিদ্যুৎই ভরসা। এ কারণে দ্বীপবাসীর দুঃখ লাঘবের কথা বিবেচনা করে এ বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে ওই এলাকার বিদ্যুৎ সেবা দেয়ার জন্য সরকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। কিন্তু বাতাস না পাওয়ার অযুহাতে পুরো বছরেই বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কোন সুফল পাননা গ্রাহক।
কক্সবাজারের অবহেলিত একটি সম্ভাবনাময় দ্বীপ-উপজেলা কুতুবদিয়া। বিদ্যুত সমস্যার কারণে উন্নয়নে মারাত্মক পিছিয়ে পড়ছে এ দ্বীপটি। বিদ্যুতের আশা প্রায় দু’লাখ দ্বীপবাসির যেন আজন্মই হতাশা। বায়ু, সোলার ও জেনারেটর বিদ্যুত সবই ফাঁকিঝুঁকি, লোক দেখানো ও সরকারি অর্থ লোপাটের ফাঁদ। অতসব সিস্টেম না দিয়ে কম খরচে চট্টগ্রাম বাঁশখালীর ছনুয়া হয়ে দ্বীপের উত্তর ধুরুং (মাত্র সোয়া কি.মি. কুতুবদিয়া চ্যানেলের তলদেশ) হয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের সাহায্যে জাতীয় গ্রিডলাইন বিদ্যুতায়ন করলে দেশের সম্পদে পরিণত হতে পারে এ দ্বীপ।
পিডিবি ১৯৭৯ সালে একটি জেনারেটর স্থাপন করে সর্বপ্রথম উপজেলা সদরের কিছু এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ করে। পরে বিভিন্ন সময়ে আরও ২টি জেনারেটর যোগ করলেও বিদ্যুতের কাঙ্খিত সুফল না পাওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে জাতীয় গ্রিডলাইনের দাবি জানিয়ে আসছিল দ্বীপবাসি।
এ ফাঁকে প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘প্যান এশিয়া পাওয়ার সার্ভিসেস্ কোম্পানি লি. ২০০৬ সালে উপজেলার আলী আকবর ডেইলের সমুদ্রপাড়ে স্থাপন করে বায়ু বিদ্যুত পাইলট প্রকল্প। ৫০টি টারবাইন, ১০টি ইনভেটর ও ১হাজার উইং ব্যাটারির সাহায্যে ১ হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্প চালু করে। প্রকল্পটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিদ্যুত সরবরাহতো-করেইনি, ওই সময়ে সম্পূর্ণ আকার্যকর অবস্থায় পড়ে থাকে যন্ত্রপাতি। দ্বীপবাসি অভিযোগ করেন, প্রকল্প দেখিয়ে সরকার থেকে কোটি কোটি টাকার ঋণ গ্রহণ করে অন্য এলাকায় শিল্প কারখানা গড়ে তুলেছে ওই কোম্পানি। পরবর্তীতে একই এলাকায় ওই কোম্পানি ২০১৬ সালে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন আঙ্গিকে ২০টি টারবাইন দিয়ে পুনরায় বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে। এতে আরও এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হয়ে বর্তমানে ২ মেগাওয়াটে উন্নিত করা হলেও প্রকল্পের মাধ্যমে কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইলের ৫৫০ গ্রাহক পুরো বছরে দৈনিক ২/১ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়ার কোন রেকর্ড দেখাতে পারেনি ওই বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি। এভাবে সরকারের অদূরদর্শী পরিকল্পনার সুযোগে বিদ্যুৎবিহীন দ্বীপবাসি দীর্ঘসময় ধরে সৌরবিদ্যুত কোম্পানি থেকে চড়ামূল্য ও চক্রবৃদ্ধি সুদের বিনিময়ে নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রাহক ঠকানোর অভিযোগে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে কুতুবদিয়াবাসি। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৮ বছর পরও কুতুবদিয়া উপজেলার ২লাখ মানুষ জাতীয় গ্রিডের অধিনে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি। ফলে দ্বীপের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড থমকে দাঁড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইনকিলাবকে জানান, আমরা দেশের ৩টি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কুতুবদিয়া, সেন্টমাটিন ও হাতিয়া দ্বীপে সাবমেরিন ক্যাবলের অধিনে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে সমীক্ষা চালিয়ে আসছি। সরকার আন্তরিক হলে এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিলে যে কোন সময় এ ৩ দ্বীপে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা নেয়া হবে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ স›িদ্বপের ন্যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।