রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
এম সাঈদ আহমাদ, শিবচর (মাদারীপুর) থেকে
আসেন ভাই পদ্মার তাজা ইলিশ আছে। আছে ভাজা ইলিশ, রান্না ইলিশ সাথে গরম ভাত ও ভুনা ডাল। পদ্মা পাড়ের ঘাটগুলোতে জিভেয় জল চলে আসার মতো এমন লোভনীয় ডাক শোনেননি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এমন যাত্রী খুঁজে পাওয়া যাবে না। পদ্মা নদীর পাড়ে পদ্মার তাজা ইলিশ মিলবে এটাইতো স্বাভাবিক তাই যাত্রীরা সরল বিশ^াসে বসে পড়ছে মাদারীপুরের শিবচরের কাওড়াকান্দি, শিমুলিয়া ঘাটের হোটেলসহ লঞ্চ, ফেরিতে। কিন্তু পদ্মার ইলিশের নামে প্রতারণা করে এই পবিত্র রমজানেও যাত্রীদের পাতে দেয়া হচ্ছে মিয়ানমার ও ওমান থেকে আসা চান্দিনা নামের এক প্রজাতির মাছ। কম দামের মাছটির মূল্যও নেয়া হচ্ছে ইলিশের উচ্চ মূল্যে। এভাবেই অভিনবভাবে হাজার হাজার যাত্রী প্রতিনিয়ত প্রতারিত হলেও দেখার যেন কেউই নেই। একাধিক সূত্র জানায়, দক্ষিণাঞ্চলের সাথে ঢাকার স্বল্প দূরত্বের নৌরুটের শিবচরের কাওড়াকান্দি, মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট এলাকার শতাধিক হোটেল, ৮৭টি লঞ্চ, ১৫টি ফেরিতে পদ্মার তাজা ইলিশ বিক্রি হবে এটাই স্বাভাবিক। যাত্রা পথে ভাজা ইলিশের সাথে গরম ভাত ও ভুনা ডালের সমাদর সবার কাছেই রয়েছে। অনেকে দূর-দূরান্ত থেকেও আসেন তাজা এ ইলিশের স্বাদ নিতে। তাই বিকিকিনি ভালো হওয়ায় হোটেল পেশাই ঘাট এলাকার মূল ব্যবসা। কিন্তু পদ্মা নদীসহ সকল নদীতে অবাধে নিধনের কারণে ইলিশ মাছ দুস্প্রাপ্য ও মূল্যর দিক দিয়ে ধরা ছোঁয়ার বাইরে প্রায়। সুযোগ বুঝে খাবার রসিক বাঙালির ইলিশের প্রতি টান থাকার সুযোগটি নিচ্ছে ঘাটের ও নৌযানের হোটেল মালিকরা। মায়ানমার ও ওমান থেকে আসা কিছুটা দেশীয় ইলিশের মতো দেখতে চান্দিনা নামক মাছটি ইলিশ বলে বিক্রি করছে এখানকার হোটেলগুলো। লঞ্চ, ফেরিগুলোতেও একই অবস্থা। চান্দিনা মাছ কেজি মাত্র ২২০ থেকে আড়াইশ হওয়ায় প্রতারণার এ কৌশলটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এসব এলাকায়। দাম ও স্বাদ কম হলেও ইলিশ বলে প্রতি পিচ বিক্রি করছে ৭০ থেকে ১শ টাকায়। তাড়াহুড়া থাকায় যাত্রীদের অধিকাংশই বিষয়টি বুঝতে পারেন না। যারা বুঝেন তারাও নিরুপায়। ফলে প্রতি নিয়ত হাজার হাজার যাত্রী প্রতারিত হচ্ছে ইলিশের নামে। সুকৌশলে প্রতারণা হওয়ায় যাত্রীরা এ ব্যাপারে সম্পূর্ণই অসচেতন। ঢাকার যাত্রী আবুল হাসান বলেন, আমি এই নৌরুট দিয়ে প্রায়ই আসা-যাওয়া করি। পদ্মার তাজা ইলিশ ভাজা খাওয়ার জন্যই কাওরাকান্দি ঘাটে নেমে হোটেলে ভাত খাই। কিন্তু হোটেলে ইলিশের দামে আমাদের কি খায়াচ্ছে বুঝবো কিভাবে, চান্দিনা মাছ দেখতেতো ইলিশের মতোই। আরেক যাত্রী সেলিম খান বলেন, যাত্রা পথে খুব তাড়াহুড়োর মধ্যে হোটেলে খাবার খাই। এই সুযোগে হোটেল মালিকরা আমাদের এমনভাবে ঠকাচ্ছে জানা ছিল না। ওদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। হোটেল কর্মচারী সামাদ মিয়া বলেন, ইলিশ আগের মতো পাওয়া যায় না, আর যা পাওয়া যায় দাম অনেক বেশি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা চান্দিনা এই মাছ বিক্রি করি। আরেক হোটেল মালিক বলেন, কাওরাকান্দি ঘাট এলাকার সব হোটেল, লঞ্চ ও ফেরিতে চান্দিনা মাছ বিক্রি হয়। তাই আমরাও বিক্রি করি। চান্দিনা বললে কাস্টমার খাইবোনা তাই ইলিশ বলি। বিআইডব্লিউটিএ কাওড়াকান্দি ঘাটের টার্মিনাল ইন্সপেক্টর এসএম মাহমুদ বলেন, কাওরাকান্দি-শিমুলীয়া নৌরুটের কিছু লঞ্চ ও হোটেলগুলোতে এই চান্দিনা নামক মাছটি ইলিশ বলে বিক্রি হয়। আমরা লঞ্চগুলোতে এই মাছ ইলিশ বলে বিক্রি করতে নিষেধ করেছি। হোটেলগুলোতেও যাত্রীদের এমনভাবে ঠকানো বন্ধ করা উচিত। আর যাত্রীদেরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। শিবচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইনামুল হক এর কাছে অবশ্য এ ধরনের প্রতারণার খবর প্রথম। তবে তিনি চান্দিনাকেও মায়ানমার ও ওমান থেকে আসা এক প্রজাতির ইলিশ বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।