Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থনীতিতে আরেক বাঙালিসহ তিনজনের নোবেল জয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

অর্থনীতিতে নোবেল জয় করলেন ভারতের বাঙালি বিজ্ঞানী অভিজিত বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ তিনজন। অমর্ত্য সেনের পরে দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে এই সম্মানে ভ‚ষিত হলেন অভিজিত বিনায়ক। একই দিনে নোবেল সম্মান পেলেন তার স্ত্রী এস্থার ডাফলো এবং অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমার। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, দারিদ্র দূরীকরণ নিয়ে গবেষণার জন্যেই পুরস্কার দেয়া হল এই ত্রয়ীকে। অর্থনীতির নোবেল জয়ীদের মধ্যে এস্থার হলেন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ। ৫০ বছর পরে বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন তিনি।
১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অমর্ত্য সেনের পর আরও এক আদ্যন্ত বাঙালি পেলেন এই সর্বোচ্চ সম্মান। গতকাল সোমবার বিকাল পৌনে চারটায় রয়াল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এবার তাদের ‘বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনে তাদের পরীক্ষামূলক পদ্ধতির জন্য’ অর্থনৈতিক বিজ্ঞানের সম্মানজনক নোবেল পুরষ্কারটি প্রদান করা হয়।
১৯৬১ সালে মুম্বইয়ে জন্ম অভিজিত বিনায়কের। তিনি প্রাথমিক পড়াশোনা সারেন সাউথ পয়েন্ট স্কুলে। ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন অভিজিত। সেই বছরই স্নাতকোত্তর পড়তে চলে যান জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘ইনফরমেশন ইকোনোমিক্স।’ বর্তমানে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত অভিজিত বিনায়ক। অভিজিত এবং এস্থার ডাফলো যুগ্মভাবে ‘আব্দুল লতিফ জামিল প্রভার্টি অ্যাকশান ল্যাব’ গড়ে তুলেছিলেন বিশ্বের দারিদ্র নিয়ে গবেষণার জন্যে। প্রেসিডেন্সি কলেজেই পড়াশোনা অভিজিতের। আরও এক নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ছাত্র ছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্সির জন্য যে মেন্টর গ্রæপ তৈরি করেছিলেন, তার সদস্য ছিলেন অভিজিত। অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী এস্থার ডাফলো একজন ফরাসি-মার্কিন অর্থনীতিবিদ এবং মাইকেল ক্রেমার মার্কিন অর্থনীতিবিদ। অভিজিত বিনায়ক জাতিসংঘেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন। ২০১৫ পরবর্তী ডেভলপমেন্ট অ্যাজেন্ডা কর্মসূচিতে জাতিসংঘের সচিবের বিশিষ্ট প্রতিনিধি প্যনেলে ছিলেন তিনি। অর্থনীতি বিষয়ে বিনায়কের লেখা চারটি বই বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। তার মধ্যে ‘পুওর ইকোনোমি’ বইটি গোল্ডম্যান স্যাকস বিজনেস বুক সম্মানে ভ‚ষিত হয়েছে।
অন্য নোবেল প্রাপক এস্থারের জন্ম ১৯৭২ সালে প্যারিসে। অভিজিতের স্ত্রী এস্থার ডাফলোর গবেষণাও এমআইটি থেকে। এস্থারের গবেষণার বিষয় ছিল, ‘দারিদ্র দূরীকরণে সামাজিক নীতি নির্ধারণ’। দীর্ঘদিন সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন অভিজিত-এস্থার। অর্থনীতিতে নোবেল জয়ী আরেক মার্কিন নাগরিক মাইকেল ক্রেমার হার্ভার্ড থেকে পড়াশোনা শেষ করে সেখানেই অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত আছেন। পুরষ্কারের অর্থমূল্য ৯০ লাখ ক্রোনার তাদের সবার মধ্যে সমানভাবে বন্টন করা হবে।
১৯৬৮ সালে সুইডিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেভেরিজেস রিক্সব্যাংক তাদের ৩০০ বছর পূর্তিতে নোবেল ফাউন্ডেশনকে একটি বিরাট অঙ্কের অর্থ দান করে। তারপর সেই অর্থ দিয়ে ১৯৬৯ সাল থেকে আলফ্রেড নোবেল এর সম্মান রক্ষার্থে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। গতকাল অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণার মাধ্যমে শেষ হলো চলতি বছরের পুরস্কারটির ঘোষণা কার্যক্রম। এর আগে চিকিৎসা, পদার্থ, রসায়ন, সাহিত্য এবং শান্তিতে নোবেল প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। চলতি বছর চিকিৎসায় নোবেল পান উইলিয়াম জি কেইলিন জুনিয়র, স্যার পিটার জে র‌্যাডক্লিফ এবং গ্রেগ এল স্যামেনজা। পদার্থে নোবেল পান জেমস পিবলেস, মিশেল মেয়র এবং দিদিয়ের কোয়েলজ। রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা হলেন- জন গুডেনাফ, স্ট্যানলি হোয়াইটিংহাম এবং আকিরা ইয়োসিনো। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন অস্ট্রিয়ার লেখক পিটার ল্যান্ড। অপর দিকে, ২০১৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন পোল্যান্ডের লেখক অলগা তকারজুক। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী শান্তি অর্জনে উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ