Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থনৈতিক মেকানিজম গড়ে তুলতে ঐকমত্য

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ভিতরে ভিতরে তাদের তীব্র প্রতিযোগিতা। বিশেষ করে এ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে। তা সত্তে¡ও চীন ও ভারত উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক একটি ‘মেকানিজম’ গড়ে তুলতে একমত হয়েছে। এর উদ্দেশ হবে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সেবাখাত দেখাশোনা। দোকলাম নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পর ইয়াংজি নদীর তীরে উহান শহরে যে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছিল প্রায় এক বছর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে সেই উদ্দীপনা নিয়ে চেন্নাইয়ে আবার বৈঠক হয়েছে তাদের। এর নাম দেয়া হয়েছে চেন্নাই কানেক্ট। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় অনানুষ্ঠানিক বৈঠক শেষ করেছেন তারা। এ সময়ে উভয় পক্ষ নিশ্চিত করেছে তারা একে অন্যের অগ্রাধিকারগুলো আরো গভীরভাবে দেখবেন, যেসব বোটলনেক বা সরু সীমান্ত আছে এবং তা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনাকর সম্পর্ক বিদ্যামান তা সমাধানের চেষ্টা করবেন তারা। এই দুই নেতার মধ্যে দুই দফায় প্রায় ৬ ঘন্টা সরাসরি আলোচনা হয়। এ সময় ছিল বাড়তি প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনাও। এ আলোচনা ফলপ্রস‚ ইঙ্গিত দিয়ে টুইট করেছেন ভারতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদ‚ত সান ওয়েইডং। চেন্নাইয়ের মামাল্লাপুরাম জেলেদের এলাকা বলে পরিচিত। সেই এলাকায় শনিবার সকালে উপস্থিত হন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি এদিন সকালে মোদির সঙ্গে ৫০ মিনিট একান্তে কথা বলেন। শনিবার রাতেও অব্যাহত ছিল আলোচনা। সমুদ্রপাড়ে তারা দু’জনে একান্তে পায়চারী করেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে পরে বলা হয়, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক দীর্ঘমেয়াদী ও কৌশলগত বিভিন্ন ইস্যুতে বন্ধুত্বপ‚র্ণ পরিবেশে গভীর মত বিনিময় করেছেন দুই নেতা। অভিন্ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে আলোচনায় উঠে আসে বৈশ্বিক হুমকি হিসেবে সন্ত্রাস। বিবৃতিতে বলা হয়, যেহেতু এ দুটি দেশ অনেক বিশাল এবং বৈচিত্রে ভরা, তাই সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণ, অর্থায়ন ও সমর্থন দেয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে আরো শক্তিশালী ভ‚মিকা নিশ্চিত করতে অব্যাহতভাবে কাজ করবে দুই দেশ। এটা করা হবে সারা বিশ্বে। এক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য থাকবে না। ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ও চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হু চুনহুয়ার নেতৃত্বে ভারত ও চীন গড়ে তুলবে একটি উচ্চ পর্যায়ের মেকানিজম। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে বলেছেন, এই মেকানিজম দেখাশোনা করবে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সেবাখাত। দোকলাম পরবর্তী উহান সামিটের ফলে মোদি ও শি জিনপিং নিজ নিজ দেশের সেনাবাহিনীকে শান্তি বজায় রাখার কৌশলগত দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। আর এবার তারা অর্থনৈতিক সহযোগিতা গভীর করতে এবং বাণিজ্যে ফারাক মোকাবিলায় সম্মত হয়েছেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির অধীনে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নকে সামনে এগিয়ে নিতে অধিক থেকে অধিক হারে গুরুত্বপ‚র্ণ দায়বদ্ধতা কাঁধে কাঁধ রেখে পালন করছে চীন ও ভারত। জাতীয় পুনরুজ্জীবন অর্জনে পরবর্তী কয়েকটি বছর ভারত ও চীনের কাছে হবে অত্যন্ত গুরুত্বপ‚র্ণ সময়। একই সঙ্গে তা গুরুত্বপ‚র্ণ হবে চীন ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ককে উন্নত করার ক্ষেত্রেও। চীনের বিবৃতি অনুযায়ী, শি জিনপিং পরামর্শ দিয়েছেন যে, একে অন্যের উন্নয়ন এবং পারস্পরিক কৌশলগত আস্থা বৃদ্ধির জন্য চীন ও ভারতকে একটি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতে হবে। উভয় দেশের মধ্যে ফারাকের বিষয়টি যথার্থভাবে লক্ষ্য করতে হবে। এর ফলে যাতে দুই দেশের সার্বিক সহযোগিতার পরিবেশ নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, যথাযথ সময়ে এবং উপযোগী আচরণের মাধ্যমে কৌশলগত যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে দুই দেশকে। সীমান্ত ইস্যুতে সুষ্ঠু ও যৌক্তিক সমাধান হতে হবে, যা উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। বিবৃতি অনুযায়ী, উভয় পক্ষের ম‚ল স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যু, সামরিক নিরাপত্তা বিনিময় ও সহযোগিতা সতর্কতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক ও বাণিজিক সংলাপ বিষয়ক মেকানিজম প্রতিষ্ঠার ফলে অর্থনৈতিক উন্নতি শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন শি জিনপিং। তিনি মনে করেন এতে চীনে ভারতীয় ওষুধ প্র¯তকারক ও প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে পারে। তাদেরকে চীন স্বাগত জানায়। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক বিনিময়, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিকতার বিষয়ে সহযোগিতা শক্তিশালী করার কথাও বলা হয়েছে। এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, পিটিআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ