Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে লালমোহন পৌর নির্বাচন

ভোলা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:১১ পিএম

একদিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভোলার লালমোহন পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ।পুরো লালমোহন পৌর এলাকায় অলি-গলি ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানারে। তবে ধারেন শীষ প্রার্থীর পোস্টার তেমন একটা দেখা মেলে না। আওয়ামীলীগ মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দিন-রাত চলছে প্রচার-প্রচারণা, উঠান বৈঠক আর সভা-সমাবেশ। ভোটারদের মন জয় করতে প্রার্থীরা দিয়ে যাচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।

সূত্র জানায়, দীর্ঘ নয় বছর পর আগামী ১৪ অক্টোবর লালমোহন পৌরসভার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘদিন পর ভোট হওয়ায় ভোটারদের মধ্যেও বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন ভোটাররা।

এদিকে, পুরো লালমোহন পৌর এলাকায় অলি-গলি ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানারে। আর মাত্র দুইদিন পরেই শেষ হচ্ছে প্রচার-প্রচারণা। আর তাই শেষ মুহূর্তে ভোটারদের কাছে দৌড়ঝাঁপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রার্থীরা। ভোটকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা যেন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
অপরদিকে, ভোট নিয়ে প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও ভোটের মাঠ শান্ত রয়েছে। দু এক জায়গায় কিছু সহিংসতা হলেও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনী মাঠে কাউন্সিল প্রার্থীরা বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, আগামী ১৪ তারিখ লালমোহন পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১২টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত লালমোহন পৌরসভায় মোট ভোট কেন্দ্র ১২টি।১ নং ওয়ার্ডে বিনা প্রতিধন্ধিতায় ফরহাদ হোসেন মেহের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ায় এখানে পুরুষ কাউন্সিল বাদে অন্যান্য পদে নির্বাচন হবে। ১২ টি কেন্দ্রে নির্বাচন হবে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ১শ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ নয় হাজার ৭০৩ জন এবং নারী নয় হাজার ৯৯৭ জন।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সর্বমোট ৬২ প্রার্থী, যাদের মধ্যে মেয়র পদে দু’জন, কাউন্সিলর পদে ৪৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বিএনপি উভয় দলের একক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।

বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাবেক মেয়র এনায়েত কবিরের ছোট ভাই জাতীয়তাবাদী দলের ধারেন শীষ প্রতিকের সোহেল মোঃ আজিজ শাহিন পাটওয়ারী ইনকিলাবকে জানান ভোটের মাঠ নিরপেক্ষ নেই।প্রচার প্রচারনায় বাধা পাচ্ছি,পোস্টার লাগাতে পারছি না। জনগণও দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারে নাই।তারা ভোটের অপেক্ষায় আছে। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হলে ধানের শীষ বিপুল ভেটের ব্যাবধানে বিজয়ী হবে। বিজয়ী হলেই স্বপ্নের পৌরসভা গড়বো।

এসময় তিনি অারো অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগ মেয়র প্রার্থীর লোকজন বিভিন্নভাবে আমাদের প্রচার-প্রচারণায় কর্মী সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে রির্টানিং কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে কয়েক বার জানানো হলেও কোন প্রতিকার হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন লালমোহন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন।
তিনি ইনকিলাবকে বলেন, লালমোহনে ভোটের পরিবেশ বিগত সময়ের চেয়ে অনেক ভাল। আমাদের কোনো কর্মী কাউকে হুমকি দেয়নি বরং আমরা প্রতিপক্ষদের সহযোগিতা করছি।

এমদাদুল ইসলাম তুহিন আরও বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। বিজয়ী হলে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবো এবং স্টেডিয়াম নির্মাণসহ সব অবকাঠামোর উন্নয়ন করবো।

পৌর ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী অালহাজ্ব ইমাম হোসেন হাওলাদার ডালিম মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন।তিনি বলেন পরপর দুবার কাউন্সিলর ছিলাম মানুষের জন্য কাজ করেছি এবারও ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। বিজয়ী হতে পারলে মাদক, সন্ত্রাস দূর করে অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করে পুরো ওয়ার্ডকে একটি মডেল ওয়ার্ডে পরিণত করবো। ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী জহিরুল ইসলাম মাসুদ পাটওয়ারী ডালিম প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করছেন তিনি তার পূর্বেও কাউন্সিলর ছিলেন। এলাকায় তার অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে।তার বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

এদিকে, লালমোহন পৌর ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম নবিন কাউন্সিলর পদে এবারও নির্বাচন করছেন।বিগত দিনে সুনামের সাথে মানুষের সেবা করেছেন।সৎ ও বিনয়ী হিসেবে এলাকায় তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। স্থানীয় ভোটাররা বলেন নবিন এবারও বিজয়ী হবে। তিনি বলেন প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের কাছ থেকে অনেক সাড়া পেয়েছি। ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ জিয়াউল হক জিয়া ডালিম প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে সে শতভাগ আশাবাদী।

ভোলার পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মো. কায়সার বলেন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা মোতায়েন থাকবে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রির্টানিং কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আল মামুন জানান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে সব্বোর্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পৌর নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ