বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান, নিয়োগ বাণিজ্য, অসৎ, দুর্নীতির অভিযোগ এনে ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে ‘লালকার্ড’ দেখিয়ে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচির পালন করা হয়। এর আগে সকাল দশটায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থগারের সামনে একই দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করে তারা। এদিকে দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজ পৃথক ভাবে বর্তমান প্রশাসনের অপসারণ চেয়ে এদিন ১১টায় শহীদ তাজউদ্দিন সিনেট ভবনের সামনে টানা তৃতীয় দিনের মত মানববন্ধনের আয়োজন করে। পরে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজ। অপরদিকে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি এবং আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যায়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
লাল কার্ড প্রদর্শনী কর্মসূচিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি রিদম শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, এই প্রশাসনের প্রতিটি পর্যায় দুর্নীতিতে ছেঁয়ে গেছে। সাত পুুকুর গবেষণা প্রকল্প, ক্যাম্পাস সৌন্দর্য বর্ধনের নামে বিদেশ থেকে ঘাস আমদানি করে ৮৪ লক্ষ টাকা লোপাট। শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যসহ স্বজনপ্রীতিতে নিমজ্জিত। এটা প্রমাণিত হওয়ার পরও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভিসি ও প্রো-ভিসি পদে বহাল রয়েছে কিভাবে এটা আমাদের বোধগম্য নয়। এভাবে শিক্ষা ও দুর্নীতি এক সঙ্গে চলতে পারে না। তাই আমরা বর্তমান দুর্নীতিবাজ প্রশাসনকে লাল কার্ডের মাধ্যমে এ ক্যাম্পাস থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি।
বক্তারা আরও বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের দুর্নীতির বিষয় নিয়ে ভিসির নিকট কথা বলেছি। কিন্তু তিনি কোন প্রশ্নের উত্তর দেন নি। বরং উল্টো ছাত্রদের নিকট জানতে চাওয়ার অধিকার কাছে কি না ? এমন প্রসঙ্গ নিয়ে আসেন। এর মাধ্যমে ভিসি বিশ^বিদ্যালয়ের মত একটি স্বাধীন, স্বায়ত্তশাসিত ও জবাবদিহিতামূলক প্রতিষ্ঠানকে স্বৈরচারের আস্তানায় পরিণত করেছেন। ভিসি, প্রো-ভিসি অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান। আগামী রোববার বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজ স্বাক্ষর করে সংহতি জানিয়েছেন।
রাবি দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধনে শিক্ষক সমতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল ইসলাম টিপুর নেতৃত্বে অংশ নেন, আইন অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. বিশ^জিৎ চন্দ, সাবেক ডীন প্রফেসর মামুনুর রশীদ তালুকদার, বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. হাবীবুর রহমান, প্রফেসর শাহরিয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান, সঙ্গীত বিভাগের সাবেক সভাপতি অমিত রায়সহ শতাধিক শিক্ষক।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর একরাম উল্লাহ বলেন, দুর্নীতি মুক্ত বিশ^বিদ্যালয় চাই। যে কেউ ভিসি হোক সেটা বিষয় নয়। বর্তমান প্রশাসনের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির প্রমাণ মিলেছে এবং সবার নিকট স্পষ্ট সুতরাং তাদের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতেই থাকবে। ভবিষ্যতে প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি এবং আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যায়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন। জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, আবরারের মৃত্যু শুধু মৃত্যু নয় বরং এটি জাতিসত্বার মৃত্যু। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া স্ট্যাটাস শুধু তার মতামত নয়, এটি দেশের অধিকাংশ মানুষের মতামত। এই মতামতের কারণে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছে। দিনের পর দিন সরকারের ছত্রছায়ায় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার ব্যার্থ হয়েছে। সুতরাং এই সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সংগঠনটিকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তারা।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান রাবি দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। নিয়োগ বাণিজ্যর যে অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে এতেই প্রমাণ হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ সব জায়গায় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ হয়। এই নিয়োগ বাণিজ্য জড়িতদের দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। একইসঙ্গে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তারা।
এ সময় বক্তব্য দেন, সাদা দলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক প্রফেসর ড. এনামুল হক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সাইফুল ইসলাম ফারুকী, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. আমজাদ হোসেন, ড. শামসুল আলম সরকার, ড. কে বি এম মাহবুবুর রহমান, ড. রেজাউল করিম, প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।