Inqilab Logo

সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বুয়েট ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা

বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট : ছাত্রলীগের নৃশংসতা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৪৩ এএম

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটে) এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের দায়ে অভিযুক্তদের কয়েকজন -সংগৃহীতকরেছে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। নিহত শিক্ষার্থীরা নাম আবরার ফাহাদ রাব্বী (২১)। তিনি ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র। গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের দ্বিতীয়তলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার চুক্তি প্রসঙ্গে একটি পোস্ট দেয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি শিক্ষার্থী ও স্বজননদের। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহ্যত রক্তমাখা লাঠি, ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প ও চাপাতিসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করেছে ক্রাইমসিন। বাঁশ বা স্ট্যাম্প দিয়ে অত্যাধিক পেটানোয় অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বা ব্যথায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। নিহতের বাবা ১৯ জনকে আসামী করে চকবাজার থানায় মামলা করেছেন। লাশ গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায় দাফন করার কথা রয়েছে।

এদিকে, হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সন্তান ও সহপাঠীকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবরারের স্বজন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। তারা হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন। সহপাঠীদের মতো হত্যাকান্ডের নিন্দা ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজেও হত্যাকারীদের বিচারের দাবি করেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও বুয়েট শাখা দুটি পৃথক কমিটি করেছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজনরা আটকরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুস্তাকিম ফুয়াদ, সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, উপ দফতর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, উপ সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ আইন সম্পাদক অমিত সাহা, ক্রিয়া সম্পাদক সেফায়েতুল ইসলাম জিওন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার এবং গ্রন্থ ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্সি।

পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ভিন্নমতের কারণে একজন মানুষকে মেরে ফেলার অধিকার কারো নেই। এমন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কাউকে বরদাস্ত করা হবে না। তদন্তে যারাই অপরাধী সাব্যস্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আইন নিজস্ব গতিতে চলবে।

নিহত আবরারের বন্ধু ও সহপাঠীরা বলেন- বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে সাধারণ ছাত্র ও কর্তৃপক্ষ আবরারের লাশ উদ্ধার করে সকাল সাড়ে ৬টা দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সহপাঠীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাত ৮টার দিকে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে আবরারকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর রাত ২টা পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারা বলছেন, ২০১১ নম্বর রুমে নিয়ে তাকে পিটানো হয়। মারধরের সময় ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু।

গ্রেফতারের আগে গতকাল সকালে আশিকুল ইসলাম বিটু সাংবাদিকদের বলেন, আবরারকে শিবির সন্দেহে রাত ৮টার দিকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে আনা হয়। সেখানে আমরা তার মোবাইল এবং ফেসবুক ও মেসেঞ্জার চেক করি। ফেসবুকে বিতর্কিত কিছু পেইজে তার লাইক দেয়ার প্রমাণ পাই। সে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। এছাড়া শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাই। তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে আবরারকে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুজতবা রাফিদ, ইফতি মোশাররফ সকাল ও অমিত সাহা। পরবর্তীতে প্রমাণ মেললে চতুর্থ বর্ষের ভাইদের খবর দেওয়া হয়। তখন মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন ও অনিক সরকার সেখানে আসলে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসি। এরপর হয়তো ওরা মারধর করে থাকতে পারে। পরে রাত ৩টার দিকে শুনি আবরার মারা গেছে।

শেরে বাংলা হলের প্রোভোস্ট বলেন, ডাক্তারের ফোন পেয়ে হলে এসে দেখি ছেলেটির লাশ পড়ে আছে। ডাক্তার জানান, ছেলেটি আর বেঁচে নেই। পরে পুলিশের সহায়তায় লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বুয়েটের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা. মাসুক এলাহী বলেন, রাত ৩টার দিকে হলের শিক্ষার্থীরা আমাকে ফোন দেয়। আমি হলে গিয়ে সিঁড়ির পাশে ফেøারে ছেলেটিকে শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পাই। ততক্ষণে ছেলেটি মারা গেছে। তার সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আবরারের একজন রুমমেট ঘটনার বিষয়ে বলেন, টিউশনি শেষে রাত ৯টার দিকে রুমে আসি। তখন আবরার রুমে ছিলো না। অন্য রুমমেটদের কাছ থেকে জানতে পারি তাকে ছাত্রলীগের ভাইয়েরা ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে গেছে। পরে রাত আড়াইটার দিকে হলের একজন এসে আবরার আমাদের রুমমেট কিনা জানতে চান। আমি হ্যা বললে সিঁড়ি রুমের দিকে যেতে বলেন। পরে সিঁড়ি রুমের দিকে গিয়ে দেখি তোশকের ওপরে আবরারের নিথর দেহ পড়ে আছে। পরে ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গোয়েন্দা পুলিশ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হলের একাধিক কক্ষে নিয়ে নির্যাতনের কারণেই মারা গেছেন আবরার ফাহাদ। ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক মুন্নার নির্দেশেই এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। মুন্না নজরদারিতে রয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম বলেন, হলের শিক্ষার্থী, সিসিটিভি ফুটেজ ও আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের নাম উঠে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে একটি গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র বলছে, গত শনিবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিলে সেটি ইশতিয়াক মুন্নার নজরে আসে। তিনি একই হলের শিক্ষার্থী বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিষয়টি জানান এবং আবরারকে ডেকে আনার নির্দেশ দেন। এরা সবাই ১৬ ও ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে দু’জন রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবরারকে ডেকে ২০১১ নং কক্ষে নিয়ে যায়।
সেখানে নেয়ার পর আবরারের কাছ থেকে মোবাইল ফোন নেয়া হয়। তার ফেসবুক মেসেঞ্জার চেক করাসহ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর শুরু হয় মারধর। একপর্যায়ে আবরার অচেতন হয়ে পড়লে কোলে করে তাকে মুন্নার কক্ষে (২০০৫ নং) নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে কয়েকজন কোলে করে দোতলা ও নিচতলার সিঁড়ির মধ্যবর্তী জায়গায় নিয়ে আবরারকে ফেলে রাখে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় গতকাল সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, আবরার হত্যার ঘটনায় শনাক্ত ৯ জনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছি। সেটা পর্যালোচনা করছি।
সূত্র জানায়, আবরারকে জেরা ও পেটানোর সময় ওই কক্ষে অমিত সাহা, মুজতাবা রাফিদ, ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফায় ফাহাদকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন। তারা সবাই মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী। হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা বরকতুল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামী করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেছেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত করেন ঢামেক ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মো. সোহেল মাহমুদ। ময়নাতদন্ত শেষে বেলা পৌনে ২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আবরারের দেহে অনেক জখমের অনেক চিহ্ন পাওয়া গেছে। হাতে-পায়ে ও পিঠে আঘাতের ধরণ দেখে মনে হয়েছে ভোঁতা কোনো জিনিস যেমন, বাঁশ বা স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তবে তার মাথায় কোনো আঘাত নেই। কপালে ছোট একটি কাটা চিহ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, বাঁশ বা স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানোয় অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বা পেইনের (ব্যথা) কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
স্বজনরা বলেন, আবরারদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে। তবে তার পরিবার কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই মোড়ে থাকেন। তার বাবা বরকতুল্লাহ ব্র্যাকের নিরীক্ষক কর্মকর্তা ছিলেন। মা রোকেয়া বেগম স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক। দুই ভাইয়ের মধ্যে আবরার বড়। তার ছোট ভাই আবরার ফায়াজ সাব্বির ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সেও ঢাকা কলেজের হোস্টেলে থাকে। আবরার কুষ্টিয়া জেলা স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করে ঢাকা নটোরডেম কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকেও এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে বুয়েটে ভর্তি হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবরার নিজে কোন রাজনীতির সাথে জড়িত না থাকলেও তার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। স্থানীয়রা বলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বাসার পাশেই তাদের বাড়ি। তবে আবরার মাঝে মাঝে তাবলিগে যেতেন। বুয়েটে ভর্তির পরেও দুই তিনবার তিনি তাবলিগে গিয়েছিলেন।

হাসিবুর রহমান নামের একই হলের সিভিল ডিপার্টমেন্টের ১৫তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী তাবলীগ জামায়াতের কর্মী বলেন, আবরার আমার সঙ্গে কয়েকবার তাবলীগ জামাতে গিয়েছে। সে খুব ভদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। পড়ালেখা ছাড়া আর কিছুই বুঝতো না সে।
সহপাঠীদের কান্না, সারাদিনে আসেননি ভিসি
আবরারের হত্যাকান্ডের ঘটনা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষার্থী, সহপাঠী ও স্বজনরা। বেলা ১২টার দিকে শেরে বাংলা হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাফর ইকবালের কাছে হত্যাকান্ডের ভিডিও ফুটেজ দেখার জোড় দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করেন। সে সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা প্রোভস্টকে বলেন, আপনার ছেলে মারা গেলে তখন আপনি কী করতেন? স্যার! আমাদের জীবনের কী কোনো মূল্য নেই আপনাদের কাছে??

বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে গণমাধ্যম কর্মীদের ফাহাদের ফুফা মোখলেছুর রহমান দুলাল বলেন, ফুটেজ দেখতে চাওয়া হলেও কর্তৃপক্ষ গড়িমশি করেন। তিনি বলেন, যে বিশ্ববদ্যালয়ে এ রকম একটা হত্যাকান্ড ঘটতে পারে সেখানে ভিডিও ডিলেট করা কোনো বিষয়ই নয়। এর ঘণ্টখানিক পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রোভস্ট অফিসের কাছে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ফুটেজ এডিট প্যানেলের সাথে তাদের দু’জন প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান।
এদিকে হত্যাকান্ডের পর সারাদিন অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বা হলে আসেননি। এছাড়া তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল ধরেননি। দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে উপাচার্যকে মুঠোফোনে কল দেন প্রাধ্যক্ষ। তখন উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহযোগী (পিএস) কল রিসিভ করে উপাচার্য অসুস্থ থাকায় আসতে পারবেন না বলে জানান।

শেষ করা হলো না শেষ অঙ্ক!!
মারধরে নিহত বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী ফাহাদ আবরার টার্ম পরীক্ষা থাকায় রোববার বিকেলেই বাড়ি থেকে আসেন। এরপর যান টিউশনিতে। টিউশনি থেকে ফেরার পরই তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় ২০১১ নাম্বার রুমে। আবরারের রুম ১০১১ নম্বরে গিয়ে তার খাতা খুলে পাওয়া যায় তার নিজে করা জীবনের শেষ অঙ্ক। দেখা যায়, টেবিলের ওপর একটি খাতা পরে আছে। ভাজ করা খাতাটি একটি অঙ্ক অর্ধেক করে রাখা। এর মধ্যেই অন্যরুমে যাওয়ার ডাক আসে। তখন অঙ্কটি অর্ধেক রেখেই তিনি চলে যান। রুমমেটরা বলেন, অনেক মেধাবী ছিল। সব সময় পড়াশুনা নিয়ে থাকতো। কিন্তু কে জানত এই ডাকই তার জীবনের শেষ ডাক হবে।

২০১১ নাম্বার রুমে বসত মদের আসর
বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী ফাহাদকে যে রুমে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয় সেই ২০১১ নম্বর রুমে নিয়মিত মদের আসর বসত। সরজমিনে রুমটি পরিদর্শন করে মদের আসর বসার এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনকালে রুমটিতে, কয়েকটি মদের বোতল ও নেশা গ্রহনের কিছু উপকরণ পাওয়া গেছে। পাশ্ববর্তী রুকের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, সন্ধ্যার না হতেই মদের আড্ডা বসতো রুমটিতে। হল ছাত্রলীগের পদদারী নেতাকর্মীরা ছাড়াও প্রায়সময় অপরিচিতরাও ওই রুমে গিয়ে মাদক গ্রহন করতেন।
##



 

Show all comments
  • llp ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:২৪ এএম says : 0
    He is a true martyr in getting independence of this land from .......
    Total Reply(0) Reply
  • মহীয়সী বিন্তুন ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
    বিচার কার কাছে চাচ্ছেন? যে হত্যা করিয়েছে তার কাছে?
    Total Reply(0) Reply
  • H.M. Habibullah Mesbah ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
    আবরার ফাহাদকেই দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহিদ বলা যায়। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য নিজের জীবন দিয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Resma Rani ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
    গ্রেফতার হবে তবে বিশ্বজিৎ হত্যার মতো সবাই বিজয়ের হাসি দিয়ে মুক্তি পাবে। কিছু হয়নি আর হবে ও না।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Abdul Hannan ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
    সে একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশের ইতিহাসে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে, শহীদ আবরার ফরহাদকে আল্লাহ তুমি জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা করিও।
    Total Reply(0) Reply
  • Mah Fuz ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
    একটি স্বপ্নের অকাল মৃত্যু এবং পুরো পরিবারের আজীবন যন্ত্রণা। এর ন্যায়বিচার চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • M M. Mynul Islam ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    ভারতের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ে প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদ। শহীদ আবরারের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি,আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসীব করেন।।
    Total Reply(0) Reply
  • Ariful Islam Rumon ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    ছোট্ট একটা স্ট্যাটাস এর কারণে জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটল। আল্লাহ তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করো। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই.
    Total Reply(0) Reply
  • Selim Reza ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    আমার দেশ যখন ২ বার স্বাধীনতা অর্জন করবে তখন এই আবরারকে যেন প্রথম মুক্তিযোদ্ধা ঘোষনা করা হয়।।।।
    Total Reply(0) Reply
  • Shaikh Mohammad Moinuddin ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
    তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আল্লাহ বেহেশত নসীব করুন! তাঁর বাবা-মা আত্মীয় স্বজন কে এ শোক সইবার ক্ষমতাসীন দিন।সকল গুম,অনিয়মতান্ত্রক হত্যা সহ এ হত্যার যথাযথ বিচার চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Ashraful Alam ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    আল্লাহ আপনি আবরার ফাহাদকে জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা হিসাবে কবুল করুন আর যাদের জন্য এই অবস্থা তাদেরকে ধ্বংস করে দিন আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Shahin Ahmed ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    একটি স্যাটাসের কারণে আবরার ফাহাদকে জীবন দিতে হলো ! ভারত বিরোধী লড়াইয়ে প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • নিশা চর ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    লিখাঃ মৃত আবরার ভাইয়ের টাইমলাইন থেকে নেয়া। বুয়েট ব্যাচঃ ২০১৭ ১.৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশেে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে। ২.কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চাই না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব। ৩.কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব। হয়তো এসুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন- "পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও, তার মত সুখ কোথাও কি আছে আপনার কথা ভুলিয়া যাও।"
    Total Reply(0) Reply
  • Shamsul Alam Khokon ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    Abrar is the first Khudiram of Bangladesh. He sacrifices his valuable life to wake up the nation, he has opened our eyes. We are to realise our-self and to think about our sovereignty.
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nurul Amin ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    তুমি দেশের জন্যে বলতে গিয়ে শহীদ হয়েছো আবরার। ভারত তথা মুসলিম বিদদোষী দেশটির বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে বর্তমান দঃপূর্ব এশিয়া তুমিই প্রথম শহীদ, আল্লাহ তোমায় বেহেশতে নসীব করবেন ইনশাল্লাহ। আল্লাহ কবে মুসলিম জাতিকে তোমার মতো ঈমানী শক্তি দিবেন সে আশায় আমরা পুরো মুসলিম জাতি।
    Total Reply(0) Reply
  • Nadim ahmed ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:১০ এএম says : 0
    Inna lillahi wa inna ilaihi raaziwoun. Abrar is the real freedom fighter and a true martyr. He lost his life for the country. May Almighty grant him in Zannat. May Almighty destroy the people who are against humanity and who are acting against our country.
    Total Reply(0) Reply
  • নূরুল্লাহ ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ২:৪৮ পিএম says : 0
    দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়তে পারা হবে শেখ হাসিনার জীবনের সবচে বড় সাফল্য এবং দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের আক্ষরিক সাফল্য। আমরা চাই আবরার হত্যার বিচারের মাধ্যমে দু:শাসন ও সন্ত্রাস চর্চার ইতিহাস বাংলাদেশের ছাত্র যুবকের জীবন হতে বিদায় নিক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বসে মদ্যপান আর অস্ত্র ও নারিবাজির বিভৎস লীলার রাশ টানার চেয়ে বড় কাজ এ মুহূর্তে আমি আর দেখছি না।
    Total Reply(0) Reply
  • Afia ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:২৪ পিএম says : 0
    আর কত খাবেন!! বিএনপি খাইলেন, জামায়াত খাইলেন, হেফাজত খাইলেন, খাইলেন ক‌ওমী, আর এখন খাইতাছেন জাতীর ভবিষ্যত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা

৪ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ