বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
ধারণা করা হচ্ছে, ক্যাপ্টেন কুকের অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কারের অন্তত ৬শ’ বছর আগে এই দেশটির সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। সেখানকার অধিবাসীদের মুসলিম সভ্যতার সঙ্গে সরাসরি পরিচয় ঘটেছিল। আফ্রিকার মুসলিম সালতানাতের সময়কার পাঁচটি তাম্র মুদ্রা আবিষ্কারের পর এ ধারণার জন্ম হয়েছে। তাম্র মুদ্রা পাঁচটি অস্ট্রেলিয়ার উত্তর উপক‚লে বালুর ভেতর পাওয়া গেছে ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে। ম্যরে আইজেনবার্গ নামের একজন সৈনিক সেগুলো খুঁজে পান। ১৯৭৯ সালে ম্যরে আইজেনবার্গ মুদ্রা পাঁচটি একটি জাদুঘরে জমা দেন।
দুর্লভ ওই মুদ্রাগুলো অস্ট্রেলিয়ায় গেল কিভাবে, গবেষকরা সেটা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছেন। প্রচলিত মত এই যে, অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কার করেন ক্যাপ্টেন কুক নামের একজন নাবিক। কিন্তু আবিষ্কৃত মুদ্রাগুলো বিবেচনায় নিলে বলতে হবে, তারও বহু আগে মুসলমানরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য ও যোগাযোগ গড়ে তুলেছিল। তারাই হয়তো মুদ্রাগুলো সেখানে নিয়ে গিয়েছিল।
যতদ‚র জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ায় ডাচদের আগমন ঘটে ১৬৯০ সালে। এ থেকে এটা স্পষ্ট হয় ক্যাপ্টেন কুকেরও বেশ আগে ডাচরা সেখানে যায়। এই হিসাবে ক্যাপ্টেন কুককে অস্ট্রেলিয়ার আবিষ্কর্তা বলা যায় কি না সেটা ভেবে দেখার বিষয়। আফ্রিকার মুসলিম শাসকদের আমলে প্রচলিত মুদ্রা আবিষ্কারের পর ক্যাপ্টেন কুক কেন, ডাচদের দাবিও আর টেকে না। জানা যায়, আফ্রিকার মুসলিম সা
লতানাতের সঙ্গে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ ও জাতির নৌ-বাণিজ্য সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়াও তার বাইরে ছিল না, তাম্র মুদ্রা আবিষ্কার তারই প্রমাণ বহন করে।
অস্ট্রেলিয়ার গবেষক ও বিজ্ঞানী ম্যাকনটোসের মতে, আফ্রিকার মুসলিম শাসনামলেই মুদ্রাগুলো অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিল। এটা এও প্রমাণ করে, পূর্ব আফ্রিকা, ভারত, আরব প্রভৃতি দেশের মধ্যে পারস্পরিক নৌ-বাণিজ্য চালু ছিল। বলাবাহুল্য, ম্যাকনটোসের এই অভিমত যদি সত্য হয়, তাহলে ইতিহাসের প্রচলিত ধারা ও ধারণা পাল্টে যেতে পারে।
এখন গবেষক বিজ্ঞানীদের কাজ হল, মুদ্রা পাঁচটির আগমনের বিষয়ে আরো তথ্য খুঁজে বের করা। যে এলাকায় সেগুলো পাওয়া গেছে সেখানে বা তার আশপাশের এলাকায় আরও মুদ্রা অথবা অন্য কোনো প্রত্মনিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায় কি না যাতে এটা আরো স্পষ্ট হয় যে, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দূর অতীতে মুসলিম দেশ ও সভ্যতার সম্পর্ক নির্মিত হয়েছিল। তাদের মধ্যে নিয়মিত বাণিজ্যও গড়ে উঠেছিল।
স্মরণ করা যেতে পারে, ইসলামের আবির্ভাবের পর আরব বিশ্বের সঙ্গে এবং পরবর্তীকালে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিস্তার লাভ করে। এই মুসলিম বণিকদের সঙ্গে ইসলাম প্রচারকরা বিশ্বের দেশে দেশে গমন করে। তারা ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আমরা জানি না, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আফ্রিকার মুসলিম সালতানাতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক, লেনদেন ও যাতায়াত কতটা গড়ে উঠেছিল এবং পরে কিভাবে তাতে ছেদ পড়ল, এটা গবেষণা ও বিবেচনার বিষয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।