Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বিকৃত নির্যাতনের শিকার উইঘুর নারীরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

চীনা কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছেন সীমান্তবর্তী দেশ কাজাখস্তানে। এখানে এসেও তাদের স্বস্তি নেই। মাতৃভ‚মিতে যে নৃশংস নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন সেই স্মৃতিগুলো প্রতিনিয়ত দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করছে তাদের। ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়,এসব নারীর সবাই এসেছেন চীনের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল শিনজিয়াং থেকে। এদের কাউকে গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। কেউ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আবার কেউ যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে নগ্ন হয়ে গোসল করতে বাধ্য করা এবং গোপনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া ডলতে বাধ্য করার মতো ঘটনা। অবশ্য নির্যাতনের এ সব অভিযোগ স্বাধীন স‚ত্র থেকে নিশ্চিত করা যায়নি। তবে স্থানীয় মানবাধিকার গ্রæপ ও আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এগুলো সাধারণ ঘটনা। সরকার যে ব্যাপক নির্যাতন চালায় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মুসলমান নারীদের সন্তান জন্মদান ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়া। চীনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই শিনজিয়াংয়ের মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করে আসছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। কেবল উইঘুরই নয়, কাজাখ মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালায় ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে কাজাখ বংশোদ্ভ‚ত ৩৮ বছরের গুলজিরা মোগদিনকে গ্রেপ্তার করে চীনা কর্তৃপক্ষ। ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ পাওয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে বাড়ির পাশের এক ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা করে জানা যায় গুলজিরা ১০ সপ্তাহের গর্ভবতী। চীনা কর্তৃপক্ষ চিকিৎসককে গর্ভে থাকা ভ্রুণ বের করার নির্দেশ দেয়। গুলজিরাকে অচেতন না করেই এই কাজটি করেন সরকারি চিকিৎসক। দুই বছর হয়ে এলেও এখনো সেই শারীরিক যন্ত্রণায় ভুগছেন এই কাজাখ নারী। গুলজিরা বলেন, ‘দুটি মানুষ এই দুর্ভাগ্যে হারালো-একজন আমার অনাগত সন্তান, অপরজন আমি নিজে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারীর আইনজীবী আইমান উমরারোভা জানান, তার মক্কেলকে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে দুই দফায় গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করে শিনজিয়াং কর্তৃপক্ষ। পরে তিনি কাজাখস্তানে পালিয়ে আসেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসেবে, ২০১৭ সাল থেকে ‘পুনঃশিক্ষা শিবিরে’ ১০ থেকে ৩০ লাখ মুসলমানকে বিভিন্ন মেয়াদে আটক রেখেছে। এদের অধিকাংশই উইঘুর স¤প্রদায়ের। উইঘুর বংশোদ্ভ‚ত আলমাস নিজামুদ্দিন নামের এক অস্ট্রেলীয় নাগরিকসহ দুজনের সঙ্গে কথা বলেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। এরা দুজনই জানিয়েছেন, তাদের স্ত্রীদের এখনো আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছে। ২০১৭ সালে তাদের গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করে কর্তৃপক্ষ। ২০০৯ সালে চীনা হানদের সঙ্গে দাঙ্গা বাঁধে উইঘুরদের। ওই সময় অন্যান্যদের সঙ্গে আটক করা হয়েছিল ইসলামিক স্টাডিজের শিক্ষার্থী রুকাইয়া পেরহাতকে। চার বছর তাকে বিভিন্ন কারাগারে রাখা হয়েছিল। মুক্তি পাওয়ার পর তুরস্কে এসে আশ্রয় নেন তিনি। আটক থাকা অবস্থায় চীনা হান নিরাপত্তা রক্ষীরা একাধিকার তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন রুকাইয়া। এর পরিণতিতে তিনি দুবার গর্ভবর্তী হন এবং দুবারই তাকে গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করা হয়। কাজাখস্তানে পালিয়ে আসা অনেক নারী জানিয়েছেন, তাদেরকে দলবেধে নগ্ন হয়ে গোসল করতে বাধ্য করা হতো। গোসলের আগে নারী নিরাপত্তা প্রহরীরা তাদের হাতে মরিচের গুঁড়া তুলে দিতো এবং তা গোপনাঙ্গে ডলতে বাধ্য করতো। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওয়াশিংটন পোস্টের পক্ষ থেকে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মন্ত্রণালয় ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিকের কাছে চীনা সরকার প্রকাশিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ে একটি বই তুলে দেয়। বইটির মধ্যে ‘প্রশিক্ষণার্থীদের মৌলিক অধিকার রক্ষা’ শিরোনামের একটি অধ্যায়ও রয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ‘আপনারা বইটি পড়লে এ ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করতেন না।’ ওয়াশিংটন পোস্ট।



 

Show all comments
  • Nil ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:৪৮ পিএম says : 0
    China muslimder jevabe nirjaton korse, sei rokom kono muslim onno dhormer narider nirjaton kore na
    Total Reply(0) Reply
  • Nil ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:৪৮ পিএম says : 0
    China muslimder jevabe nirjaton korse, sei rokom kono muslim onno dhormer narider nirjaton kore na
    Total Reply(0) Reply
  • Yeakub Hossan ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    ইমান আরো মজবুত হবে, ইনশাআল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • স্বপ্নের জীবন ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    এটা মোটেও ঠিক কাজ করছেন না চীন
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Hye ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    আল্লাহ চীনের কমিউনিস্ট দের হেদায়েত দান করুন... আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • Sultana Parvin Helen ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    আল্লাহ্ সকল মুসলমানদের রক্ষা করুন আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফ আহমেদ ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
    হে আল্লাহ চীনের মুসলিমদের সাহায্য করো। মসলমানদের পাশে দাড়ানোর শক্তি দাও।
    Total Reply(0) Reply
  • Mustafizur Rahman Ansari ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৭:৩৩ এএম says : 0
    ALLAH save us and give us Hedayet.
    Total Reply(0) Reply
  • omar ৯ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৫৩ এএম says : 0
    No humanity in China
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ