টাঙ্গাইলের সখিপুরে বিভিন্ন গ্রামের তিনজন নারীসহ ১০ হাজী প্রতারণার শিকার হয়ে এবার দালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তারা ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় দালালের বিচার ও শাস্তি দাবি করেছেন। উপজেলা হজ্ব ট্রেনিং পরিচালনা কমিটির কাছে তারা লিখিতভাবে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ অভিযোগ দেন। এছাড়াও সখিপুর পৌরসভার মেয়রের কাছে তাদের অভিযোগ দেন। মেয়র আগামী ৮ অক্টোবর দালাল ও প্রতারিত হাজীদের সঙ্গে এ বিষয়ে শুনানির তারিখ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রতারিত হাজীরা জানান, উপজেলার কালিয়া ঘোনারচালা গ্রামের হাজী আবদুল বাছেদ নামের এক মোয়ালেমের কাছে তারা হজ্বের টাকা প্রদান করেন। তিনি ঢাকার মারিয়া ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের কাছে এসব হজ্জ যাত্রীদের ভিসা করার জন্য টাকা জমা দেন। প্রতারিত হাজীদের মধ্যে উপজেলার বড়চওনা গ্রামের আনোয়ার হোসেন তালুকদার, অন্যান্য গ্রামের আবু হানিফা, মোহাম্মদ দারগ আলী ও আবুবকর সিদ্দিক জানান, তারা সবাই হাজী আবদুল বাছেদ নামের এক মোয়ালেমের কাছে হজের টাকা প্রদান করেছেন।

তিনি তাদেরকে ঢাকার মারিয়া ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের কাছে এসব হজ্ব যাত্রীদের ভিসা করার জন্য টাকা জমা দেন বলে জানিয়েছিলেন। পরে তারা ওই ট্রাভেলসের কাছে যোগাযোগ করে জানতে পারেন তাদের টাকা সম্পূর্ণ জমা দেননি। তাদেরকে বারবার এসএমএসের মাধ্যমে হজ্ব এজেন্সি ভিসা ও আবাসন কার্যক্রমের টাকা জমাদানের জন্য বলা হয়। এদিকে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে সর্বশেষ হজ্ব ফ্লাইট সৌদি আরব চলে যায়। তারা হজ্ব সিডিউলের বাইরে অন্য ফ্লাইটে সৌদি আরবে যায় এবং হজ্ব পালন করতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়েন। প্রতারিত হজ্ব যাত্রীরা আরও জানান, তাদের এজেন্সি ট্রাভেলস মালিকের হাতে তাদের ভিসা ও আবাসন কার্যক্রমের টাকা পৌঁছাননি। হজ্ব ফ্লাইট নিয়ে দালাল তাদের অসংখ্য তারিখ দিয়েও হয়রানি করেছে। তাদেরকে ফেতরা ভিসায় সৌদি আরবে নেওয়া হয়। এমন জটিলতা তৈরি করার বিষয়টি জানতে দালাল এজেন্সি হাজী আবদুল বাছেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি একেক সময়ে একেক কথা বলেন। তিনি বলেন, ওই ১০ হজ¦ যাত্রীর ভিসা, টিকেট ওকে করে দিয়েছি। কোনো প্রতারণা করা হয়নি। এদিকে ঢাকার মারিয়া ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের কাছে এসব হজ¦যাত্রীদের বিষয়ে জানার জন্য বারবার যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। প্রতারণার শিকার ১০ হাজী সৌদি আরব পৌঁছে তারা বাংলাদেশ হজ্ব অফিসে গত ১৪ আগস্ট অভিযোগ দেন। গত ১৮ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি হয়েছে। সেই শুনানিতে মারিয়া ট্রাভেলসের শাহীন নামের এক কর্মকর্তা বলেছেন, মোয়ালেম হাজী আবদুল বাছেদ তাদের ওই ১০ জনের নামে ফেতরা ভিসা করতে বলেছে এবং ট্রাভেলসের মালিককে ২লাখ ৪৫ হাজার করে টাকা দিয়েছে। বাকী টাকা দালাল মোয়ালেম হাজী আবদুল বাছেদ আত্মসাত করেছেন। প্রতারণার শিকার হাজীদের ভাষ্য, তাদের কাছ থেকে দালাল বাছেদ সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। মোয়ালেম হিসেবে তাদের সঙ্গে সঙ্গে সৌদি আরব যাওয়ার কথা থাকলেও সে যায় নাই। ফলে তারা সেখানে গিয়ে নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। যা তারা ভাষা দিয়েও বুঝাতে পারছেন না। কয়েকজন নারী হাজী নিয়ে যদি রাস্তা-ঘাটে থাকতে হয়, খাওয়া-দাওয়াসহ অন্যান্য যে অসুবিধাগুলো আছে আপনারাই বুঝেন কেমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ওখানে গিয়ে। প্রতারণার শিকার হয়ে অনেক টাকা লস, চরম ভোগান্তি ও বিড়ম্বনায় আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে এ কারণে দালালের বিচার ও শাস্তি দাবি করে অভিযোগ দিয়েছি।