Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নিজ দলের সমর্থন হারাচ্ছেন ট্রাম্প

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ২০২০ সালের প্রতিনিধি পরিষদ নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা যদি হেরে যায় তাহলেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সফলতার সঙ্গে ইম্পিচ করা লাভজনক হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর ঘোষণা দেয়ার কয়েকদিন পর পেলোসি এ মন্তব্য করলেন। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট দলের প্রায় সবাই এই তদন্তের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তবে এখনো এক ডজন মতো সদস্য সমর্থন ঘোষণা করতে বাকি রয়েছেন। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে বিরোধী ডেমোক্র্যাট দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ন্যান্সি পেলোসি বলেন, রাজনীতির চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপ‚র্ণ হচ্ছে প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেসের কাছে জবাবদিহি করার জন্য সহযোগিতা করা। পরিষদের নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা। জবাবে পেলোসি বলেন, “এটি কোনো বিষয় নয়, আমাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে আমেরিকার সংবিধানকে রক্ষা করা। জনগণ বলে এটা করতে আপনাদেরকে রাজনৈতিক ঝুঁকি নিতে হবে। সেটি কোনো বিষয় নয় কারণ আমাদের দেশে এমন কোনো প্রেসিডেন্ট থাকা উচিত নয় যিনি তার শপথকে ক্ষুন্ন করবেন। প্রেসিডেন্ট আমাদের দেশের নিরাপত্তা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাকে খর্ব করেছেন।” ন্যান্সি পেলোসি দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইম্পিচমেন্টের ব্যাপারে যে তদন্ত চলছে তার প্রতি আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি মানুষ সমর্থন দিচ্ছে। তিনি বলেন, জনস্রোতে এখন সম্প‚র্ণভাবে বদলে গেছে। এ খবর জানিয়েছে পার্সটুডে। দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত চালু করেছে পার্লামেন্টের বিরোধী দল নিয়ন্ত্রিত নিম্নকক্ষ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আগামী নির্বাচনে তার সম্ভাব্য প্রতিদ্ব›দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে চাপ দিয়েছিলেন তিনি। এই অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর থেকেই তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। ডেমোক্রেটরা তো বটেই, নিজ দল রিপাবলিকান পার্টিতেও সমালোচনা পিছু ছাড়ছে না তার। একাধিক রিপাবলিকান এই তদন্তের সমর্থন দিয়েছেন। নিজের পায়েই কুড়াল মারছেন ট্রাম্প। লন্ডনভিত্তিক দ্য টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধীরে ধীরে প্রেসিডেন্টের সমর্থন থেকে সরে যাচ্ছেন তার সতীর্থরাই। শুক্রবার এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, অভিশংসন তদন্ত শুরুর পর থেকে জনসমর্থনও হারাচ্ছেন তিনি। মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষের সদস্যরাই তার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। এই বিতর্কের শুরু হয় এক গোপন সংবাদদাতার (হুইসেলবেøায়ার) অভিযোগকে ঘিরে। তিনি দাবি করেন, ২৫শে জুলাই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। এক পর্যায়ে বাইডেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য খতিয়ে দেখতে চাপ দেন তিনি। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে ইউক্রেনের তৎকালীন শীর্ষ প্রসিকিউটর একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করছিলেন। ওই প্রতিষ্ঠানের সদস্য ছিলেন বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেন। জো বাইডেন তখন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের অভিযোগ, নিজের ছেলেকে বাঁচাতে ওই প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করে তাকে পদচ্যুত করেন বাইডেন। তবে ওই সময় আরো বহু পশ্চিমা নেতা ওই প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিল। পরবর্তীতে তার জায়গায় আসা নতুন প্রসিকিউটর তদন্ত শেষ করেন। তদন্তে নির্দোষ প্রমাণ হয় হান্টার বাইডেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠার পর তার বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত চালু করে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ। এক পর্যায়ে ট্রাম্প-জেলেনস্কির ফোনকলের রেকর্ড প্রকাশ করে হোয়াইট হাউস। কিন্তু তাতে ট্রাম্পকে অভিশংসন করার মতো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে হুইসেলবেøায়ার জানান যে, হোয়াইট হাউস ওই ফোনকলের রেকর্ড ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে। এতে ট্রাম্পের প্রতি নতুন করে অবিশ্বাস সৃষ্টি হয় তার সতীর্থদের। এর মধ্যে শুক্রবার পদত্যাগ করেন ইউক্রেনে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দ‚ত কার্ট ভোলকার। তদন্তের আওতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পমেপওকে সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ করতে লিখিত নির্দেশ দিয়েছে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের তিন কমিটি। কমিটি আরো জানায়, তারা এই ঘটনায় আরো পাঁচ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। এদিকে, অন্তত তিনটি জরিপে দেখা গেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার অভিশংসন তদন্তকে সমর্থন করে। জরিপ সংগঠন পিবিএস/ম্যারিস্ট পরিচালিত এক জনমত জরিপে দেখা যায়, ফোনকলের তথ্য ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ ওঠার আগে ৪৯ শতাঙ্ক অঙ্কগ্রহণকারী তদন্তের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এর মধ্যে ৬ শতাঙ্ক রিপাবলিকানও ছিল। আর তদন্তের বিপক্ষে ছিল ৪৬ শতাঙ্ক। রিপাবলিকান পার্টিতেও সমর্থন হারাচ্ছেন ট্রাম্প। দ্য টাইমস, পার্সটুডে ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ