Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শরীফের ভাবনায় ‘ভালো’ বল!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

এবার জাতীয় লিগ শুরুর আগে থেকেই আলোচনায় ক্রিকেটারদের ফিটনেস। সাম্প্রতীক সময়ে ক্রিকেটারদের দুর্বল ফিটনেসের কারণে আগের প্রতিবারের চাইতে একটু বেশিই কঠোর বিসিবি। তাইতো গতবার বিপ টেস্টে ৯ এর বদলে পাশ মার্ক নির্ধারণ করা হয়েছে ১১। আর তাতেই বেশ সরগরম ক্রিকেটপাড়া, চ্যালেঞ্জ ছোড়াছুড়ি চলছে দুপক্ষেই। তবে নতুন আরেক চ্যালেঞ্জ বোর্ডের দিকেই ছুড়ে দিলেন মোহাম্মদ শরীফ।
টেস্ট ক্রিকেট জগতে দেড় যুগের বেশি কাটিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। সামনে শুরু হবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যালেঞ্জ। অথচ দেশের প্রধানতম প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আগে মৌলিক দিকগুলো নিয়েই ভাবনায় থাকতে হয় ক্রিকেটারদের। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দেশের সফলতম পেসার শরীফের যেমন আকুতি, জাতীয় লিগে যেন ভালো বলে খেলা হয়!

তারিখ এখনও চূড়ান্ত না হলেও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হওয়ার কথা এবারের জাতীয় লিগ। ২০০০-২০০১ মৌসুম থেকে শরীফ খেলছেন এই টুর্নামেন্টে। প্রথশ শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩২ ম্যাচ খেলে তার উইকেট ৩৯৩টি। ৩০০ উইকেটও নেই দেশের আর কোনো পেসারের। দীর্ঘ পথচলায় জাতীয় লিগের আদ্যোপান্ত জানা শরীফের। টুর্নামেন্টের অনেক সমস্যা তিনি দেখে আসছেন সেই দেড় যুগ আগে থেকেই, চলছে এখনও। তবে গত কয়েক মৌসুমে যে সমস্যাটি বেশি ভোগাচ্ছে, সেটির কথা তুলে ধরলেন নতুন মৌসুমের আগে, ‘একটা কথা বলা ঠিক হবে কিনা জানি না, তবু বলা জরুরি। বল যেন ভালো হয়। বলের মান খুব গুরুত্বপূর্ণ। বল অনেক সময়ই খুব দ্রুত সফট হয়ে যায়। এমনিতেই উইকেটে বোলারদের জন্য সহায়তা থাকে না। তারপর বলও সফট হলে বোলারদের কিছু করার থাকে না। গত ২-৩ বছরে অনেকবার এরকম হয়েছে, ৪-৫ ওভারের মধ্যে নতুন বল বদলাতে হচ্ছে। বলের মান সেখান থেকেই বোঝা যায়। এদিকটা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত।’

বাংলাদেশ সাধারণত ঘরের মাঠে এসজি-টেস্ট বলে টেস্ট ম্যাচ খেলে। শরীফ জানালেন, জাতীয় লিগেও এসজি বলেই খেলা হয়। কিন্তু সেটি সেরা মানের এসজি বল কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে প্রবল, ‘এসজি বলেই খেলা হয়। কিন্তু সেটি সেরা মানের কিংবা গ্রেড ওয়ান কিনা, আমরা জানি না। হতে পারে গ্রেড ওয়ান। কিন্তু অনেক সময় আমরা ভালো বলটি নাও পেতে পারি। পুরানো হয়ে যেতে পারে। এই ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে। বল ভালো থাকলে, উইকেট একটু শুষ্ক থাকলেও মানিয়ে নেওয়া যায়।’

বল উন্নত মানের না হওয়ায় ভোগান্তি শুধু বোলারদেরই নয়, শরীফের মতে, পিছিয়ে পড়ছে সামগ্রিক ক্রিকেটের মানই, ‘বল এত দ্রুত নরম হয়ে যায় যে পেসারদের স্ইুং-বাউন্স তো থাকেই না, স্পিনারদেরও ধার থাকে না। ব্যাটসম্যানরা আরামে খেলে। বল কিছুই করে না, সোজা আসে। দেখা যাচ্ছে, অনেক ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি-ডাবল সেঞ্চুরি করে ভাসিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তাদেরকে আসলে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিই হতে হয়নি! উইকেটের কথা তো আমরা অনেক দিন থেকেই বলছি। ভালো উইকেট যেমন খুব জরুরি, তেমনি ভালো মানের বলও জরুরি। আমার শুধু নয়, এটা আমাদের অনেকেরই চাওয়া।’

শুধু বল নয় ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্য অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের মতো শরীফও বেশ চিন্তিত ফিটনেস টেস্ট নিয়ে। এই পেসারের চোখে বিপ টেস্টে ভালো করা আর ম্যাচ ফিটনেস এক নয়, ‘পরীক্ষা দেওয়ার আগে সবার একটু চিন্তা থাকে। ধরুন, একজন ১৪ (পরীক্ষায়) পেল তার যদি ম্যাচ ফিটনেস না থাকে, তার যদি ম্যাচ খেলার সামর্থ্য না থাকে তাহলে এ নম্বর পেয়ে কী লাভ? এমন আছে হয়তো ৮ কিংবা ৯ পেল, কিন্তু সে ডাবল সেঞ্চুরি বা ১০ উইকেট পাচ্ছে। এখন আমার পারফরম্যান্স দেখা উচিত না ১৪? আমাদের দেশে যে আবহাওয়া, আর্দ্রতা- এসবও তো দেখতে হবে। ম্যাচ ফিটনেস যাদের বেশি, তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’

ঘরোয়া ক্রিকেটের কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের সঙ্গে অবশ্য কথা বলে জানা গেল, কোন দলের সঙ্গে বাংলাদেশ দল টেস্ট খেলবে বা কাদের সঙ্গে টেস্ট সিরিজ চলছে, সেটির ওপর নির্ভর করে জাতীয় লিগ (এনসিএল) বা বিসিএলে কোন ব্র্যান্ডের বল দিয়ে খেলা হবে। দেশের মাঠে যদি উপমহাদেশের কোনো দলের সঙ্গে টেস্ট খেলে বাংলাদেশ, তখন এনসিএল-বিসিএলে অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা ‘কোকাবুরা’ বলে খেলা হয়। উপমহাদেশের বাইরের দলের সঙ্গে খেললে এনসিএল-বিসিএলে সরবরাহ করা হয় ভারত থেকে আনা ‘এসজি’ বল। এসজি বল নিয়ে শরীফ প্রশ্ন তুললেও কোকাবুরা বল নিয়ে অবশ্য আপত্তি নেই কারও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ