Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিপজ্জনক পদক্ষেপে ঝুঁকিতে লঙ্কার শান্তি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ইস্টার সানডের প্রাণঘাতী বোমা হামলার শ্রীলংকার মুসলিমদের ওপর ‘কঠোর ও বিপজ্জনক’ দমন অভিযানের ফলে শ্রীলংকার শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করেছে বলে একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। এপ্রিলে চার্চ ও হোটেলে বোমা হামলায় গুটিকতেক লোক জড়িত থাকলেও রাজনীতিবিদ ও সিংহলি জাতীয়তাবাদীরা এই হামলাকে বৃহত্তর মুসলিম সম্প্রদায়কে হয়রানি ও অপদস্থ করার কারণ হিসেবে ব্যবহার করছে। শুক্রবার প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)। ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভেন্ট (আইএসআইএল বা আইএসআইএস) ওই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে। এতে ২৫০ জনের বেশি নিহত হয়। তবে শ্রীলংকার পুলিশ দাবি করেছে, এই হামলায় স্থানীয় মুসলিম গ্রুপ ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত দায়ী। এটি ছিল শ্রীলংকায় এক দিনের সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতীর ঘটনা। খ্রিস্টান-মুসলিম সহিংসতার প্রথম ঘটনাও এটি। ওই ঘটনার পর থেকে জরুরি আইনের আওতায় ১,৮০০’র বেশি মুসলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া প্রায় ৩০০ জনকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। বৌদ্ধ প্রাধান্যপূর্ণ শ্রীলংকায় মুসলিম জনসংখ্যা ১০ ভাগ। গ্রেফতার হওয়া লোকদের পরিবার সদস্যরা আইসিজিকে জানিয়েছে, তাদের স্বজনেরা কোনোভাবেই সন্ত্রাসের সাথে জড়িত নয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, সিংহলি বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা সহিংসত প্রচারণা, বিদ্বেষমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারা অর্থনৈতিক বয়কট, হিজাব পরা নারীদের ওপর হামলা ইত্যাদির মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে। প্রতিবেদনে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, মে মাসের মধ্যভাগে মুসলিমদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদগুলোকে লক্ষ্য করে দুই দিনের বিপর্যয়কর দাঙ্গায় দেশব্যাপী নির্যাতনের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। ওই দাঙ্গায় অনেক মুসলিমকে হত্যা করা হয়, মুসলিমদের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে ফেলা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইস্টার সানডে হামলার পর স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিশোধমূলক ছিল না এই সহিংসতা। বরং তা ছিল অনেক বছর ধরে চলা মুসলিমবিরোধী প্রচারণার ধারাবাহিকতা। গত বছরও ক্যান্ডিতে মুসলিমবিরোধী হামলা হয়েছিল। সিংহলি জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকেরাও মুসলিম সম্প্রদায় ও তাদের মর্যাদার ওপর বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেক সিনিয়র সন্ন্যাসীও মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দিচ্ছেন। গত জুনে শ্রীলংকার শীর্ষ দুই বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর অন্যতম ভেন ওয়ারাকাগোড়া শ্রী গনারাত্মা মুসলিমদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বয়কট করার আহ্বান জানান। প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন প্রেক্ষাপটে শ্রীলংকার দুর্বল ও বিভক্ত নেতৃত্ব হয় অলস ভাবে বসে আছে কিংবা নির্যাতনে সম্পৃক্ত রয়েছে। আইসিজির প্রতিবেদনে বলা হয়, মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর প্রবল চাপ সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিঙ্গে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় তেমন কিছুই করেননি। সিংহলিদের ভোট হারানোর ভয়েই তিনি মূলত কিছু করেননি। প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রীলংকার নেতারা যদি ভবিষ্যতের হামলা ঠেকাতে চান, তবে তাদেরকে রাষ্ট্রের ভেঙে পড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেরামত করতে হবে, আইন অনুসরণ করা মুসলিম নাগরিকদের দূরে ঠেলে দেয়া বন্ধ করতে হবে। সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ