Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোটি বছর আগে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশ ভূখন্ড

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বর্তমানে যেটা বাংলাদেশ ওই সময় সেটা ছিল বঙ্গোপসাগর। লাখ লাখ বছর ধরে হিমালয় ক্ষয় পেয়ে তা থেকে সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশ নামের ভূখন্ড। ইউনিভার্সিটি অব হায়দরাবাদ সহ বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করে এসব কথা বলেছেন। গবেষণায় বলা হয়েছে, হিমালয় ক্ষয় পেয়ে পলি জমতে জমতে সৃষ্টি হয়েছে ভূ-ভাগ। সেটাই বাংলাদেশ।

প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ বছর আগে হিমালয়ে বড় আকারে মাটি বা পাথরের ক্ষয় হয়। সেই মাটি ভাটিতে আসতে আসতে জমে সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশ। অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও মুম্বই মিররে এ খবর প্রকাশ হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বরের ‘কারেন্ট সায়েন্স’-এর সর্বশেষ সংস্করণে গবেষণালব্ধ ফল প্রকাশ হয়েছে।

গবেষণা থেকে জানা গেছে, গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদ বাহিত বিপুল পরিমাণ পলিমাটি কলকাতার থেকে দূরে বিস্তৃত বঙ্গোপসাগরে জমতে শুরু করে। তখন কলকাতা ছিল সমুদ্র উপকূলে। ওই পলিমাটি জমতে জমতে ভূ-ভাগ সৃষ্টি হওয়া শুরু করে। পলিমাটি যেহেতু উপকূলভাগে জমা হতে শুরু হয় তাই কলকাতাও সমুদ্রের দিকে বাড়তে থাকে। ওই ভূ-ভাগ বাড়তে বাড়তে একটি নতুন এলাকা সৃষ্টি হয়। সেই এলাকাটির ওপর এখন বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে।
গবেষণা বলছে, খরস্রোতা ও তীব্রতা সম্পন্ন দুটি নদী গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের কারণে ব্যাপক নদীভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে বিপুল পরিমাণ পলিমাটি ওই দুটি নদী হিমালয় অববাহিকা থেকে বহন করে নিয়ে আসতে থাকে এবং তা জমা হতে শুরু হয় বঙ্গোপসাগরের তলদেশে। এর ফলে তখন কলকাতার পূর্ব দিকে একটি নতুন এলাকা গড়ে উঠা শুরু হয়।

এই ভূভাগ সৃষ্টি হয়ে তা সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। আর একটি প্রাচীন সামুদ্রিক ভিত্তি সৃষ্টি হয় তলদেশে। এর অর্থ হলো তলদেশে সৃষ্টি হওয়া ওই ‘ওসেন ফ্লোরের’ ওপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। এর সঙ্গে ভৌগলিক ও জীববিজ্ঞান বিষয়ক অনেক তথ্য জড়িয়ে আছে। এর সঙ্গে থাকতে পারে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ।

এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব হায়দরাবাদের সেন্টার ফর আর্থ, ওশিন অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক সায়েন্সের প্রধান প্রফেসর কেএস কৃষ্ণা। তার সঙ্গে ছিলেন ডিএসটি-ইন্সপায়ার ফ্যাকাল্টির ডঃ মোহাম্মদ ইসমাইল এবং ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ওশেনোগ্রাফির (এনআইও) গবেষকরা। তারাই বলেছেন, প্রাচীনকালে গড়ে ওঠা সমুদ্রের তলদেশের ওই ভূভাগটি এখন বাংলাদেশের ভিত্তিতে অবস্থান করছে।

তাদের গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ভিত্তি ছড়িয়ে আছে কলকাতা থেকে উত্তরদিকে রাজমহল-সিলেট লাইনে, শিলং প্লেট পর্যন্ত। এই স্তরেই বঙ্গোপসাগরের তলদেশে সৃষ্টি হয়েছে প্রাথমিক সামুদ্রিক পাথরগুলো। তা পরে হিমালয় থেকে নেমে আসা গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মতো নদ-নদীর বহন করে আনা বিপুল পরিমাণ পলিমাটির নিচে ঢাকা পড়েছে। এমনি করেই সৃষ্টি হয়েছে একটি নতুন ভূ-ভাগ, যা বর্তমানে বাংলাদেশের ভূ-ভাগ।

গবেষণার বিষয় ব্যাখ্যা করে প্রফেসর কৃষ্ণা বলেছেন, ওএনজিসি, দেহরাদুন, হিউজটনের রিচ ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় এনআইও’তে এই গবেষণা করা হয়েছে। এই গবেষণায় তারা বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের প্রাথমিক বিবর্তন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছেন।



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৭ এএম says : 0
    মহান আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন। তবে ভালো লাগলো পড়ে
    Total Reply(0) Reply
  • মহররম আলী ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৮ এএম says : 0
    ঘটনা এরকম হলে হতেও পারে। তবে একমাত্র সৃষ্টিকর্তায় ভালো জানেন।
    Total Reply(0) Reply
  • তাইজুল ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৯ এএম says : 0
    গবেষকরা তো কত কিছুই দাবি করেন, সবকিছু কি আর সত্য হয়!!!
    Total Reply(0) Reply
  • মা হোমিও হল ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৯ এএম says : 0
    হে আল্লাহ তোমার এই প্রিয় ভুকণ্ডকে আগ্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করো।
    Total Reply(0) Reply
  • Zee vee ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৯:৫২ এএম says : 0
    এসবই হল বিজেপি আর ইস্কনের প্রচার, অচিরেই তারা এ ভূখন্ড দখল করতে চায়!!"
    Total Reply(0) Reply
  • এই চিনতা আমার নিজের মাথায় খেলত । ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১০:৩২ এএম says : 0
    এই চিনতা আমার নিজের মাথায় খেলত ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ