Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল বা একটি বিকাল ব্যয় করার মূল্য-২

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

গত আলোচনায় আমরা আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল বা একটি বিকাল ব্যয় করার কি মূল্য তা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। কোন কাজগুলো করলে আল্লাহর রাস্তায় সময় ব্যয় করা হয়, সে কাজ এবং এ সম্পর্কে কোরআন কি বলেছে তা থেকে কিছু আয়াত এবং তার ব্যাখ্যা আলোচনা করেছিলাম। আজ আরও কিছু আল্লাহর রাস্তার কাজের পরিচয় এবং হাদিসে মুবারাকা থেকে কিছু উদ্ধৃতির প্রয়াস চালাব।

আল্লাহর পথে সময় ব্যয় করা সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত আছে। (ক) হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, আল্লাহর পথে একটা সকাল এবং একটা বিকাল ব্যয় করা দুনিয়া ও এর যাবতীয় সম্পদ থেকে উত্তম। (সহীহ বুখারী : ৪/২৭৯২)। (খ) হযরত আবদুর রহমান ইবনে জাবের রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, আল্লাহর পথে যে বান্দার দু’পা ধুলায় মলিন হয়, তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে এমন হতে পারে না। (সহীহ বুখারী : ৪/২৮১১)।

(গ) হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, জান্নাতের ধনুক পরিমাণ স্থান তা থেকে উত্তম যার ওপর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়। আল্লাহর রাসূল আরও বলেন, আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল বা একটি বিকাল অতিবাহিত করা তা থেকে উত্তম যেখানে সূর্যের উদয়াস্ত হয়। (সহীহ বুখারী : ৪/২৭৯৩)। (ঘ) হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, আল্লাহর রাস্তায় মুসলিমরা যে যখম হয়, কিয়ামতের দিন তার প্রতিটি যখন আঘাতকালীন যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থাতেই থাকবে। রক্ত ছুটে বের হতে থাকবে। তার রঙ হবে রক্তের রঙ কিন্তু গন্ধ হবে মিশকের মতো। (সহীহ বুখারী : ১/২৩৭)। (ঙ) হযরত আবাইয়াহ ইবনে রিফায়া রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি যে, যার দু’পা আল্লাহর পথে ধূলি ধূসরিত হয়, আল্লাহপাক তার জন্য জাহান্নাম হারাম করেছেন। (সহীহ বুখারী : ২/৯০৭)।

আল্লাহর পথে আহ্বান করার জন্য সময় ব্যয় করাও আল্লাহর রাস্তায় সময় ব্যয় করা। এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি আপনার প্রতিপালকের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান করুন এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক করুন। নিশ্চয়ই একমাত্র আপনার প্রতিপালকই জানেন যে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং হেদায়েতপ্রাপ্তদের তিনি ভালোভাবেই জানেন। (সূরা নাহল : আয়াত ১২৫)। আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যে আল্লাহর দিকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, অবশ্য আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা হা মীম সিজদা : আয়াত ৩৩)।

দুই পর্ব মিলিয়ে এই নাতিদীর্ঘ আলোচনার সারমর্ম একটাই। আর তা হলো ‘আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল অথবা একটি বিকাল ব্যয় করা।’ মুমিন মুসলমানদের কর্ম প্রবাহে তা চির জাগরুক থাকুক, এটাই বাঞ্ছনীয়।



 

Show all comments
  • Enamul Islam ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
    পৃথিবীতে যতজন নবী এবং রাসূল আগমন করেছেন তাঁদের সকলেরই মিশন ছিল দাওয়াত। দাওয়াত দানের মাধ্যমেই তারা অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজে আলোর ফল্গুধারা প্রবাহিত করেছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • মহররম আলী ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
    মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকে যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করেছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mannan Bhuiyan ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৮ এএম says : 0
    মানবজীবনে ইসলামের অস্তিত্ব নির্ভর করে দাওয়াতি কাজের ওপর। আল্লাহ তা’য়ালা যুগে যুগে যত নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন তাঁদের সকলেরই দায়িত্ব ছিল মানুষের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া।
    Total Reply(0) Reply
  • Nun Ta Ha ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৮ এএম says : 0
    দাওয়াতি কাজ নবুওয়তি দায়িত্বের একটি অংশ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “হে রাসূল! যা কিছু আপনার রবের পক্ষ থেকে আপনার ওপর নাজিল করা হয়েছে তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিন। যদি তা না করেন তাহলে তো তাঁর রিসালাতের দায়িত্ব আপনি পালন করলেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের ক্ষতি থেকে বাঁচাবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফিরদেরকে (আপনার বিরুদ্ধে) সফলতার পথ দেখাবেন না।” (সূরা মায়িদা : ৬৭)
    Total Reply(0) Reply
  • Jesse ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
    আজ চিন্তার বিষয় তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে অমুসলিমরা যেভাবে তাদের ধর্মীয় দাওয়াত সারা বিশ্বে প্রচার করছে আমরা কি পারছি তাদের মত দাওয়াতি কাজ করতে? তারা ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট, ফেসবুক, বøগ, টুইটার ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ধর্মের দাওয়াত চালিয়ে যাচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Kabeer Ahmed ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
    মুসলিম অমুসলিম সকলের নিকট দা’য়ী ইলাহ দ্বীনি দাওয়াত নিয়ে যেতে হবে। আজকের অবস্থা এমন হয়েছে যে, যারা সংগঠন করেন তারা মনে করেন সংগঠকরাই দাওয়াতি কাজ করেন, যারা মাদরাসায় পড়েন বা পড়ান তারা মনে করে মাদ্রসার ভিতরেই দাওয়াত সীমাবদ্ধ, যারা তাবলীগ করেন তারা মনে করেন আমরা তাবলীগের মাধ্যমেই কেবল ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। আমাদের সমাজে আজ একগুয়েমী বেশি বিস্তার করছে। যারা লেখালেখী করেন, তারা মনে করেন আমরা শুধু লেখালেখির মাধ্যমেই ইসলামের কাজ করছি তাবলীগ, সংগঠনের আর দরকার কি!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন