পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচন আজ। নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড় চলছে ব্যাপক। প্রার্থীরা ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রচারনা ও নানামুখী সমীকরণে বিজয় নিশ্চিতে। এদিকে, নির্বাচনে পরিবারতন্ত্রকে বয়কট করার আহবান জানিয়েছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। একটি আধুনিক ব্যবসায়ী বান্ধব চেম্বারের নেতৃত্বের প্রত্যাশায় ভোট দেওয়ার আহবান জানান ব্যবসায়ী পরিষদ।
অভিযোগ আছে, বিগত দিনে ভোট জালিয়াতি ও পকেট ভোটের মাধ্যমে জামায়াত-বিএনপি চক্র ২০০২ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানকে পরিবারতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা করে আসছে। এর ফলে নির্বাচনকালীন তড়িঘড়ি করে বেড়ে যায় প্রতিষ্ঠানের ভোটার সংখ্যা। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে স্বাক্ষর জাল, ভুয়া ভোটার তালিকাসহ নানা অনিয়মে অভিযুক্ত হয় সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। এভাবে এক ইউনিয়নের ট্রেড লাইসেন্সে ৪শ’ ভোটারও করা হয়েছে। একদিনে ৬শ’ জনকে ভোটার করারও নজির রয়েছে সিলেট চেম্বারে। যে কারণে বিগত সময়ে বারবার প্রতিষ্ঠানটিকে যেতে হয়েছে আদালতে।
জানা যায়, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ ও সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ এই দুই ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ব্যবসায়ীদের দুটি বলয়। প্রার্থীরা তফসিল ঘোষণার পর থেকেই প্রচার প্রচারণা শুরু করেন। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া, মতবিনিময় সভার আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। চেম্বারের সাবেক অনেক নেতাও ভিড়েছেন এসব প্যানেলের সাথে। নিজেদের পছন্দের প্যানেলের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। সবমিলিয়ে সিলেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখন বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ।
ইতোমধ্যে নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে প্রতিদ্বন্দ্বি দুই গ্রুপ। নির্বাচনী প্রচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও রয়েছে পারস্পরিক অভিযোগও। সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের বিরুদ্ধে চেম্বারে পরিবারতন্ত্র কায়েমের অভিযোগ করেছেন সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ, দুটি পরিবার থেকেই এই প্যানেলের বেশিরভাগ প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। এই দুই পরিবারের একাধিক সদস্য এর আগেও সিলেট চেম্বারের শীর্ষ পদে ছিলেন। তবে সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের নেতারা বলছেন, কেউ জোর করে চেম্বার দখল করছে না। সবাই ভোটে দাঁড়িয়েছে। ভোটাররা যাদের যোগ্য মনে করবে তাদের নির্বাচিত করবে।
সিলেট চেম্বারের পরিচালক পদে অর্ডিনারি ক্যাটাগরিতে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদে প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আবু তাহের মো. শোয়েব, মো. মামুন কিবরিয়া সুমন, এনামুল কুদ্দুস চৌধুরী, মুকির হোসেন চৌধুরী, হুমায়ন আহমদ, মো. ফারুক আহমদ, মো. নজরুল ইসলাম, জুবায়ের রকিব চৌধুরী, আক্তার হোসেন খান, আব্দুল হাদি পাবেল, শহীদ আহমদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ আব্দুস সালাম। অ্যাসোসিয়েট ক্যাটাগরিতে প্রার্থী হয়েছেন মাসুদ আহমদ চৌধুরী, মো. এমদাদ হোসেন, পিন্টু চক্রবর্তী, আব্দুর রহমান, চন্দন সাহা, মো. আতিক হোসেন।
আর সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদে প্রার্থী হয়েছেন এহতেশামুল হক চৌধুরী, সাহিদুর রহমান, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মুশফিক জায়গিরদার, আব্দুর রহমান জামিল, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, শফিকুল ইসলাম, শান্ত দেব, আব্দুস সামাদ, খলিলুর রহমান চৌধুরী, ফখর উছ সালেহীন নাহিয়ান এবং আলীমুল এহছান চৌধুরী।
নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান বলেন, এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা সর্বমোট ২,৪৬৫ জন। যার মধ্যে অর্ডিনারি ১৪১৩ জন, অ্যাসোসিয়েট ১০৪০ জন, ট্রেড গ্রুপ ১১ জন ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন ১ জন। এ বছর পরিচালনা পরিষদের ২২টি পদে সর্বমোট ৪১ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন। যার মধ্যে অর্ডিনারি শ্রেণি থেকে ২৪ জন, অ্যাসোসিয়েট শ্রেণি থেকে ১০ জন এবং ট্রেড গ্রুপ শ্রেণি থেকে ৬ জন প্রার্থী রয়েছেন।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক হিজকিল গুলজার বলেন, সিলেটের ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন থেকে অভিভাবক শুন্যতায় ভুগছে। এই স্থান পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বিতর্কের দায়ে অভিযুক্ত বিদায়ী পরিষদ। আজকের নির্বাচনে তুলনামূলক যোগ্য প্রার্থীদের বিজয়ী করে আগামী দিনে ব্যবসা বান্ধব নেতৃত্ব গড়ে তুলবেন ভোটাররা এটাই প্রত্যাশা করেন তিনি। প্রসঙ্গত, সিলেট চেম্বার অব কমার্সের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন গত ২৭ এপ্রিল হওয়ার কথা ছিল। ভোটার তালিকায় গলদ, মামলা জটিলতায় প্রায় ৫ মাস পর এ নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।