পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, পদায়নে অর্থের লেনদেন ও অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে বাদ পড়েন সংগঠনটির সদ্য সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে সংগঠনটির দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের উপর। দায়িত্ব নেয়ার পরপরই তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যেকোন ধরণের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। ইনকিলাবের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে ছাত্রলীগের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ফিরিয়ে আনতে দুর্নীতিবাজদের সংগঠন থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি জানালেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনির হাতে তুলে দেয়ার কথা।
গত শনিবার দায়িত্ব পাওয়ার আগ পর্যন্ত আল নাহিয়ান খান জয় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নের আব্দুর আলী খানের ছেলে। বরিশাল জিলা স্কুলে অধ্যয়ন শেষে করে তিনি উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন ঢাকা কমার্স কলেজে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি হওয়ার পর আইন বিভাগের এ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দায়িত্ব পালন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বও।
জয় বলেন, ‘আমি আমার পরিবার থেকেই রাজনৈতিক শিক্ষা পেয়েছি। স্কুল ও কলেজে পড়ার সময় ছাত্রলীগের মিছিল মিটিংয়ে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতাম। ঢাবিতে আসার পর হল কমিটিতে পদ পাওয়ার মাধ্যমে সাংগঠনিক রাজনীতি শুরু করি।’ রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা ছোট বেলা থেকেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছোট বেলায় যখন প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিদের টেলিভিশনে বা পত্রিকায় ছবি দেখতাম তখন একটা আশা জাগতো একদিন আমিও দেশের ভালো একটা জায়গায় যাবো, সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করব।’
বিগত কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে হল ছেড়ে বিলাসী জীবনযাপন করার অভিযোগ আসলেও ঢাবির হলে থেকে সংগঠন পরিচালনা করছেন জয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ অনেক বড় সংগঠন, এখানে অনেক শিক্ষার্থীর সম্মিলন ঘটে। সাধারণ কর্মীদের সাথে একসাথে মিশে তাদের সুখ দুঃখের অংশীদার হওয়ার জন্য হলে রয়েছি। ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে আগামীদিনে বিলাসী জীবনযাপনের দিকে যাওয়ার কোন ইচ্ছা আমার নেই।’
বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে ছাত্রলীগের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আস্থার সংকট তৈরী হয়েছে। সাংগঠনিক নেত্রীর আস্থা ফিরিয়ে আনতে কি করবেন ইনকিলাবের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগই যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দেশরতেœর ভ্যানগার্ড হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের অংশীদার হচ্ছে। আমরা চাইব প্রধানমন্ত্রীকে সকলে ভালোবাসে এমন ছাত্রলীগ উপহার দিতে। তার আস্থা ফিরিয়ে আনতে যা যা করা দরকার সব ছাত্রবান্ধব কাজ আমরা করব।’
ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ও পদবঞ্চিত নেতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগকে সুন্দরভাবে চালানোই আমাদের চ্যালেঞ্জ। প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে তার দিকনির্দেশনা নিয়ে একটা সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করব। এরপর বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যারা যোগ্য তাদের পদায়ন করা হবে। এসব বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
সংগঠনের শীর্ষ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অনেক বড় একটি সংগঠন এর লাখ লাখ নেতাকর্মী রয়েছে। ফলে দেখা যায় বিভিন্ন সময়ে অনেক অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। অনেকের ব্যক্তিগত দ্বন্ধের কারণে সংগঠনের ইমেজ নষ্ট হয়। এ ধরণের ঘটনা যেন আগামীতে না ঘটে সেজন্য আমরা কাজ করে যাবো।’
ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, ‘আমরা মনে করি দ্রæত সম্মেলন দিতে পারবো। সারাদেশের কমিটি গুলো পূর্ণাঙ্গ করবো। বিষয়টি কঠিন হলেও আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আশা করি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সম্মেলনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবো। সর্বোপরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন চাইবেন তখন সম্মেলন দেয়া হবে।’
নাহিয়ান খান বলেন, ‘চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, পদায়নে আর্থিক লেনদেনের বিষয়গুলো আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। যারা এসব কাজে যুক্ত হবে তাদের প্রতি আমাদের কঠোর বার্তা থাকবে কোন দুর্নীতিবাজের জায়গা ছাত্রলীগে হবে না। অভিযোগের প্রমাণ পেলেই এ ধরণের ঘটনায় আমরা কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
ভারপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘অনেকে চায় ছাত্রলীগের বদনাম করতে। অনেকে অতি উৎসাহী হয়ে গেস্টরুমে টর্চার, নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নাম খারাপ করতে চায়। এ ধরণের অভিযোগ পেলে তাদের উপর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেব। এ বিষয়গুলো খুব সচেতনতার সাথে আমরা মোকাবেলা করব।’
পরিবার অন্য দলের রাজনীতির সাথে জড়িত বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা এমন প্রশ্নের উত্তর পরিষ্কার করে তিনি বলেন, ‘এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমরা দু’ভাই এক বোন। আমার বাবা-মা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সবসময় কাজ করছে। আমার বাবা ১৯৯৬ সালে নির্বাচন করেছিলেন সতন্ত্র পার্থী হয়ে। সেটাকে অনেকে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বলতে চাচ্ছে যে তারা অন্য দলের সাথে যুক্ত। ছাত্রলীগে আসার পর থেকেই এ ধরণের ষড়যন্ত্র করে আমাকে থামাতে চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু আমি আমার যোগ্যতা বলে এ পর্যায়ে উঠে এসেছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।