Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মৌলভীবাজারে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে দুর্গা পূজার মণ্ডপ!

জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া

মৌলভীবাজার জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:৪৫ পিএম

মৌলভীবাজার শহরের মনুব্রীজ সংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ঘেষে দূর্গাপূজার মন্ডপ তৈরীর কাজ চলছে। এনিয়ে জেলার মুক্তিযোদ্ধাসহ সচেতন মহলের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। স্মৃতি স্তম্ভের পবিত্রতা রক্ষা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। তারপরেও অনেকটা প্রভাব বিস্তার করে মন্ডপ তৈরির কাজ চলছে।
জানা যায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে মনু নদীর পুরাতন ব্রীজে হানাদার বাহিনীর প্রদর্শনী হত্যাকান্ড এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সমর্থকদেরকে ধরে এনে ব্রীজের উপর হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়। এই ঘটনাকে অম্লান রাখার লক্ষ্যে পুরাতন ব্রীজের সংযোগ স্থলে তৈরী করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রস্তাবনায় এবং এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ৬৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে স্মৃতি স্তম্ভটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ কালে স্থানীয় “হরিজন যুব সংঘ” আপত্তি এনেছিলো। সড়ক ও জনপথ বিভাগের মালিকানাধীন পুরাতন মনুব্রীজের সংযোগস্থল দখল করে কথিত হরিজন যুব সংঘ এখানে প্রতিবছর দূর্গাপূজার মন্ডপ তৈরী করে পূজা আয়োজন করে আসছিলো। এই অজুহাতে এখানে স্মৃৃতিস্তম্ভ নির্মাণে আপত্তি এসেছিলো তাদের পক্ষ থেকে। কিন্তু এ আপত্তি ডিঙ্গিয়ে ঠিকাদার পক্ষ দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন করে। এই অন্তরাল বাদপ্রতিবাদের জের হিসেবে হরিজন যুব সংঘ স্মৃতিস্তম্ভের কিনার ঘেষে দূর্গাপূজার মন্ডপ তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জামাল উদ্দিন বলেন, জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং ছাড়াও মৌখিক ভাবে মন্ডপ তৈরিতে আপত্তি করা হয়। তারপরও কোন অদৃশ্য শক্তির বলে কি হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়। বর্ষিয়ান এক মুক্তিযোদ্ধা বলেন- মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ অঙ্গনে মন্ডপ স্থাপন করে পূজা আয়োজনের দৃষ্টান্ত নজির বিহীন এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার পরিপন্থী। তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া অবশ্য থাকবে। আজ এখানে হচ্ছে পূজা, কাল আরেক পক্ষ ওয়াজ মাহফিল করার বায়না ধরবে। তারপর স্মৃতিস্তম্ভের পবিত্রতা রক্ষা করা সম্ভব হবে না। জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক’য়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন চাইলে তারা ব্রিজের নীচে পূর্ব পশ্চিম পাশের যে কোন স্থানে করতে পারত। এটা না করে তারা ইচ্ছা করেই স্মৃতিস্তম্ভের পবিত্রতা নষ্ট করতে চাইছে।
এ বিষয়ে হরিজন যুব সংঘের সাধারণ সম্পাদক নেপাল ভাস্কর বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন যাবত ওই জায়গায় পূজা করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও হচ্ছে। তবে আমরা এমন কোনো কর্মকান্ড করবনা যার মাধ্যমে স্মৃতিস্তম্ভের পবিত্রতা ক্ষুন্ন হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিরূপ প্রতিক্রিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ