Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্দোলনকারী-প্রশাসন আলোচনা জাবি ভিসির পদত্যাগ দাবি

জাবি সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় কেন্দ্রে প্রবেশের ক্ষেত্রেও ভিসির উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন তারা।া।
বুধবার সন্ধায় দীর্ঘ তিন ঘণ্টা আলোচনা শেষে এই সিদ্ধান্ত জানান আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীরা জানান, ভিসির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার তার নৈতিক অধিকার নেই। আগামী পহেলা অক্টোবরের মধ্যে তাকে সসম্মানে পদত্যাগ করতে হবে। নতুবা কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া হবে। এর মধ্যে আমাদের নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি চলবে।

এদিকে আলোচনা শেষে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন আমি নৈতিক অবস্থানে আছি কি নেই। তারপর তারা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা শেষে একটা জায়গাতেই আসলেন। সেটা হলো- আমি বিচার বিভাগীয় তদন্ত করাবো কিনা। আমি তো আমার বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আবেদন করতে পারি না। আমি ইউজিসিকে জানিয়েছি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী তো জানেনই। আমি আইন বিশেষজ্ঞেরে অভিমত নিয়েছি। সেই অভিমত অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের ১২ ধারা অনুযায়ী আমি কি পারি, কি পারি না তা বলা আছে। সেটা অনুযায়ী আমি বিভিন্ন তদন্ত কমিটি করতে পারি, চাইলে তদন্ত কমিটিতে হস্তক্ষেপও করতে পারি। কিন্তু আমি আমার নিজের সম্পর্কে কোন বিচার করতে পারি না। এ বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নাই। তাহলে আমাকে আচার্য কিংবা ইউজিসির কাছে যেতে হবে। সেখানে তো তাদেরকে লিখিত দিতে হবে। আপনারা যদি লিখিত ভাবে দরখাস্ত না দেন তাহলে তো তারা নিজেরা আপিল করবেন না। আপনারা রাস্তাঘাটেই তো বলছেন। স্লোগানেই তো বলছেন। কিন্তু লিখিত কিছু দিবেন না।

তারা সেটা না করে তারা আমাকে বলছেন, আমার কথার কোন সামাঞ্জস্যতা নাই। শোভন রাব্বানীর ক্যাম্পাসে আসার কথা আমি গোপন করেছি। এজন্য আমি নৈতিক অবস্থান হারিয়েছি। তাই আমার পদে থাকার কোন সুযোগ নেই।

ভিসি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডার তো শুধু তারাই নন। এর বাহিরেও অনেকেই আছেন। যদি সবাই মনে করেন আমি নৈতিক অবস্থান হারিয়েছে তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। ভিসি হিসেবে আমার এটুকু সুযোগ আছে নিজেকে পরিচ্ছন্ন করার। সেটা আমি ইউজিসিকে বলবো যেন তারা একটা তদন্ত করেন। তদন্ত চলাকালীন সময়ে আমাকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে কিনা তা আমি বলতে পারিনা। সেটা বলবেন মহামান্য।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনকারীরা পদত্যাগ দাবি করেছেন। কিন্তু আমি চাইলেই তো আর পদত্যাগ করতে পারিনা। তাদের পদত্যাগের দাবিতেও যদি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে এখানে থাকার নির্দেশ দেন তাহলে আমাকে গালমন্দ খেয়েও থাকতে হবে।

তিনি বলেন, আলোচনার দ্বার আর খোলা নাই। এই অর্থে যে তারা আর আলোচনা চাইছেন না।
শোভন-রব্বানির পদত্যাগের বিষয়ে ভিসি বলেন, আমি রাব্বানী এবং শোভনের পতনের কারণ না। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আগেই জমা হয়ে গিয়েছিলো। আমার ঘটনাটি এখানে সংযোজিত হয়েছিলো। তারা আমাকে বলেছিলো আপনি কেন আগে বলেননি? কোন প্রশাসনই ভিতরের সব কথা সবসময় বলেন না। আমরা যখন যেখানে জানানোর দরকার সেখানে জানিয়েছি।

প্রো-ভিসির মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি বলেন, ‘আমি তো কারো মুখ বন্ধ করে রাখিনি। আপনারা প্রশ্ন করছেন। আমি তো উত্তর দিচ্ছি।
এদিকে প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন, সাবেক ভিসি অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরসহ ১২জন শিক্ষকের সিম গতকাল রাতে বন্ধ করে দেয়া হয়। এই ঘটনায় ভিসিকে জড়িত এমন অভিযোগ তুলে প্রো-ভিসি আমির হোসেন আলোচনাসভায় যোগ দেননি। এই বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা সত্তে¡ও গতকাল আমার মোবাইল নাম্বার চার ঘণ্টা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমি মনে করি এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমি এ বিষয়টি রেজিস্ট্রারকেও জানিয়েছি। তাই এর প্রতিবাদ করে আলোচনায় যোগ দেয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ