পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অসদুপায়ে রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অপচেষ্টা করলেও তাদের কেউই জাতীয় পরিচয়পত্র পায়নি বলে দাবি করেছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। তবে অপচেষ্টা করেছে এটি স্বীকার করে সংস্থাটি জানিয়েছে, এই অপকর্মের সাথে চট্টগ্রাম ডবলমুরি উপজেলা নির্বাচন অফিসের পিয়ন জয়নাল আবেদিন ও কক্সবাজারের দুইজন দালাল জড়িত। দালালদের এরইমধ্যে পুলিশে দেয়া হয়েছে আর পিয়নের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারী মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেয়ার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। তবে গতকাল চট্টগ্রামে তিনি বলেছেন, এর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত আছে বলে মনে করেন না তিনি।
ঢাকায় নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে গতকাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনআইডির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম বলেন, দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা ৪৬ জন ব্যাক্তির ডাটা পূরণ করে জমা দেয়া হলেও অসম্পূর্ণ ডাটার কারণে তাদের কেউই পরিচয়পত্র পাননি। সংবাদ সম্মেলনে এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) আবদুল বাতেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে আসা ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার আঙুলের ছাপ ও তথ্য নিয়ে রোহিঙ্গা সার্ভার প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন কেউ চাইলেই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না। বিভিন্ন মাধ্যমে রোহিঙ্গা নাগরিকের ভোটার হওয়ার বা এনআইডি পাওয়ার যে তথ্য এসেছে, তারা চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভোটার হতে পারেনি।
তিনি জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় বিশেষ কার্যক্রম শেষ করে সার্ভারে তথ্য আপলোড করা হয়। এরপর ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিং করে যারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য, কেবল তাদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক আমাদের কাছে আছে। আমার রোহিঙ্গা সার্ভার প্রস্তুত করেছি। এখন যাদের তথ্য নেয়া হচ্ছে, তাদের আঙুলের ছাপ ও তথ্য প্রথমেই রোহিঙ্গা সার্ভারে ম্যাচ করে দেখা হচ্ছে। কারো তথ্য এই সার্ভারে ম্যাচ করলে মূল সার্ভারে আর যাওয়াই হবে না। এছাড়া খসড়া প্রকাশের আগে আমরা ম্যাচিং করবো। কাজেই তারা ভোটার হতে পারবে না।
তিনি জানান, লাকী বেগম নামের একজন স্মার্টকার্ড আনতে গেলে মূল সার্ভার থেকে ধরা পড়ে তার এনআইডি সঠিক নয়। জিজ্ঞাসাবাদে চিহ্নিত হয়েছে- তাকে বৈধ এনআইডি দেয়া হয়নি। তাই তাকে পুলিশে দেয়া হয়। তারপর আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করি। তাদের মাধ্যমে সঠিকভাবে প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন হয়েছে কিনা এসব দেখি। এতে ৪৬ জন ব্যক্তির ডাটা অসম্পূর্ণ পাওয়া যায়। কারো ফিঙ্গারপ্রিন্ট ঠিকমতো নেই, কারো ফরম সঠিকভাবে আপলোড করা হয়নি। এটা আমরাই চিহ্নিত করেছি।
এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, চট্টগ্রামের ৩২টি এলাকাকে আমরা বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছি। বিশেষ এলাকার জন্য বিশেষ ফরম পূরণ করা হয় এবং সার্ভারে তথ্য অন্তর্ভুক্তির জন্য বিশেষ কমিটির সুপারিশের প্রয়োজন পড়ে। উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলায় জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করে এসব বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এই অপচেষ্টার সঙ্গে আমরা কক্সবাজারে দু’জন দালালের সম্পৃক্ততা পাই। তাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এছাড়া আমাদের একজন পিয়নের সঙ্গে জড়িত আছে।
কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে : কবিতা খানম
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেয়ার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। তবে এর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত আছে বলে মনে করেন না তিনি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি। গতকাল সোমবার নগরীর জুবিলী রোডের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের এনআইডি পাওয়া বা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ঘটনায় আরও অনেকের দায় আছে উল্লেখ করে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও এনআইডি দেওয়া নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, দুদকের বিষয়টা আসলে এখনও আমাদের নোটিশে নেই। আমি শুনেছি যে গতকাল (রোববার) একটা টিম তদন্ত করতে এসেছিল। দুদকের মাধ্যমে কোনো কিছু প্রমাণ হলে নির্বাচন কমিশনও সেটা নিজস্বভাবে তদন্ত করে দেখবে।
রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র না পায়, সেজন্য নির্বাচন কমিশন সতর্ক আছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে একজন রোহিঙ্গার কাছে কার্ড (স্মার্টকার্ড) পাওয়া গিয়েছিল। ওটা ছিল ২০১৫ সালের কার্ড। এরপর ৪৬ জন রোহিঙ্গার তথ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা উদ্ধার করেছি। অবশ্য তারা কোনো কার্ড পায়নি। আমরা তাদের আলাদা করে ফেলেছি। তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স¤প্রতি যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা এসেছে তাদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করা হয়েছে জানিয়ে কবিতা খানম বলেন, তাদের বায়োমেট্রিক নেয়া আছে। আমরা প্রথমে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করি। তারপর তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। এনআইডি দেওয়ার আগে আমরা যখন বায়োমেট্রিক নেব, তখন রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক তথ্যের সঙ্গে তা যাচাই করব। রোহিঙ্গা কাউকে পাওয়া গেলে তাদের আলাদা করে ফেলব। এভাবেই আমাদের সিস্টেমটা আমরা তৈরি করেছি। রোহিঙ্গারা যাতে কোনোভাবেই ভোটার তালিকায় আসতে না পারে বা তারা যাতে এনআইডি না পায় সেজন্য আমরা সতর্ক আছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।