পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃষ্টি দেওয়ায় অবহেলিত যশোর ও খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়ন ঘটছে। পদ্মা সেতুসহ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে খুলছে অর্থনীতির দ্বার। পদ্মা সেতু সারাদশের যোগাযোগে এক মাইক ফলক। এছাড়া বেনাপোল থেকে যশোর নড়াইল ও ভাটিয়াপাড়া হয়ে ঢাকা সিক্স লেনের এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক, যশোরে শেখ হাসিনা আইটি পার্ক, বাগেরহাটের ফয়লায় বিমান বন্দর, খুলনা-মংলা রেল লাইন, যশোরে দু’টি ইপিজেড, খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, গোটা অঞ্চলে পাইপ লাইনে গ্যাস, দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মংলা, শিল্পশহর নওয়াপাড়া নদীবন্দর, বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল, ভোমরা ও দর্শনা স্থলবন্দরের উন্নয়ন, বেনাপোল থেকে সরাসরি ঢাকা ট্রেন যোগাযোগসহ গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড কোনোটি শেষ হয়েছে, আবার কোনোটি চলছে কিংবা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।
এককথায় উন্নয়নের হাওয়া চলছে। এমন এক পরিস্থিতিতে গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল নতুন দিগন্তের উম্মোচন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। দ্রুত ঘুরবে অর্থনীতির চাকা। যা কয়েকবছর আগে কল্পনাও করা যেত না। অর্থনীতি বিশারদদের কথা, যেভাবে উন্নয়ন ঘটছে তা অব্যাহত থাকলে সামগ্রিক অর্থনীতির বিশাল পরিবর্তন ঘটবে।
পরিবহন ও যোগাযোগের উন্নতি জাতীয় উন্নয়নের প্রভাবক। কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য সামগ্রিক অর্থনীতির নিয়ামক হলো পরিবহন ও যোগাযোগ। এ প্রসঙ্গে যশোর সরকারী এম এম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান প্রফেসর মো. নাসিম রেজা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, গোটা অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নে অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যাবে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। নতুন নতুন শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠবে। বাড়বে বিনিয়োগ। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এটি শুধু এই অঞ্চলের জন্য নয়, সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় মাইলফলক। এটিতে জাতীয় উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। সূত্র জানায়, যশোর ও খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দীর্ঘদিন উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়নি। বেশকিছুদিন আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ায় একে একে গোটা অঞ্চলে উন্নয়ন ঘটছে।
সূত্রমতে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩ কোটি মানুষ শুধু নয়, দেশের বৃহত্তম প্রকল্পে উত্তরে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া উপক‚ল এবং দক্ষিণে শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের জাজিরা উপক‚লের বিরাট এলাকার মানুষ সার্বিক দিক দিয়ে সুবিধা ও উপকারভোগী হবেন। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুকে ঘিরে বেড়ে গেছে জমির মূল্য। বিভিন্ন শিল্প কলকারখানা ও অত্যাধুনিক আবাসিক এলাকা স্থাপন হচ্ছে। ঢাকার বাইরে পদ্মা সেতুর আশেপাশের এলাকায় গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রসার ঘটার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, খুলনা-মোংলা রেললাইন স্থাপনসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রেলের উন্নয়নে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের বৃৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল থেকে যশোর, নড়াইল ও ভাটিয়াপাড়া ছুঁয়ে এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণ হবে। ল্যান্ড সার্ভে ও সয়েল টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে ইতোমধ্যে। হাইওয়ে সড়কটি হবে সিক্স লেনের। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের যশোর নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। সড়কটি নির্মিত হলে রাজধানীর সঙ্গে দূরত্ব কমে আসবে ৭০ কিলোমিটার। হাতের নাগালে আসবে রাজধানী। খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক শেখ আশরাফ উজ জামান, যশোরের সামাজিক নেতা ফকির শওকত ও মহিদুল ইসলাম মন্টুসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের কথা, পদ্মা সেতু, সরাসরি ট্রেন ও সিক্স লেনের সড়ক নির্মাণসহ যোগাযোগে যুগান্তকারী উন্নয়ন এবং সামগ্রিক উন্নয়ন অর্থনীতিতে নতুন এক দিগন্ত উম্মোচিত হবে।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, বেনাপোল, দর্শনা ও ভোমরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতির গতি সৃষ্টি হয়েছে। নদীপথে দেশি ও বিদেশী পণ্যের আভ্যন্তরীণ রফতানিতে যশোরের শিল্পশহর নওয়াপড়ায় অন্যতম বৃহত্তম নদীবন্দর। এটি খনন ও সংস্কার চলছে। পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ প্রকল্পের কাজ চলছে জোরেশোরে। যশোরে দু’টি ইপিজেড স্থাপনের তোড়জোড় চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরতলী আরবপুর এলাকায় ৫শ’ একর জমির ওপর অটোমোবাইল শিল্পাঞ্চল ও যশোর-বেনাপোল সড়কে ঝিকরগাছা উপজেলায় ৬শ’ একর জমির উপর ইলেকট্রনিকস, টেক্সটাইল, ওষুধ, তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের পর যশোর হবে তৃতীয় বাণিজ্যিক নগরী। এই অঞ্চল কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ। সূত্রমতে, দেশি-বিদেশি অনেক বড় কোম্পানি বিনিয়োগ করবে। এখানকার উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানি বাড়বে। মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বদলে যাবে জীবনযাত্রার মান।
যশোর ও খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দেশের মধ্যে সাদা সোনা চিংড়ি, মাছের রেণুপোনা, খেজুরের গুড়, সবজি, রজনীগন্ধাসহ ফুল উৎপাদনে রেকর্ড গড়ে শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছেছে। সারাদেশের মোট চাহিদার ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ এসব পণ্য যোগান দিয়ে থাকে। যশোর শেখ হাসিনা আইটি পার্কে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতুর আশেপাশে জমি ক্রয়ের হিড়িক পড়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য, বৈচিত্র ও বাগেরহাটের খানজাহান আলী (রহঃ) মাজার, ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘিরে পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় জেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে বিরাট গতি পেয়েছে। পাল্টে যাচ্ছে অবহেলিত নড়াইল ও মাগুরাসহ বিভিন্ন জেলা শহরের চেহারা। সীমান্ত জেলা মেহেরপুরের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও উন্নতি ঘটায় রাজধানী কাছাকাছি চলে আসছে।
এ অঞ্চলের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা বললেন, অঞ্চলটি বিরাট সম্ভাবনাময়। অথচ পদ্মার এপার অবহেলিত ছিল এতদিন। প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি দেওয়ায় বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। তাতে গোটা অঞ্চলের চেহারার আমুল পরিবর্তন ঘটবে। ইতোমধ্যে অনেক কিছুর উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।