Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবারও স্বপ্নভঙ্গের বেদনা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বোলিংটা হলো দুর্দান্ত। কিন্তু ব্যাটিংটা হলো চরম হতাশার। বাগে পেয়েও তাই ভারতকে হারানো গেল না। ফসকে গেল যুব এশিয়া কাপের শিরোপা। ঠিক যেন বড়দের দেখানো পথেই হাটলেন ছোটরাও। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালে বাংলাদেশকে ৫ রানে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখে ভারত। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে গতকাল যুব এশিয়া কাপের অষ্টম আসরে ভারতকে ১০৬ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। জবাবে ৩৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১০১ রানে থেমে যায় টাইগার যুবাদের ইনিংস। ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের জয়ের নায়ক অথর্ব আঙ্কোলেকার।

বাংলাদেশের হারে দায় আছে বাজে আম্পায়ারিংয়েরও। নবম উইকেট দৃড়তায় বাংলাদেশ যখন জয়ের কাছে তখনই আম্পায়ারের দৃষ্টিকটু ভুলে লেগ বিফোর হন তানজিম হাসান সাকিব। ইনিংসের শুরুতেও ওপেনার তানজিদ হাসানকে আম্পায়ারের দেওয়া লেগ বিফোরের সিদ্ধান্ত ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

যদিও আম্পায়ারের দিকে আঙুল তুলে বাংলাদেশের হতাশার ব্যাটিংকে আড়াল করা যাবে না। ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপের ফাইনালে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ সেই বিষ্ময়কর হতাশার ব্যাটিং এখনো পোড়ায় টাইগার ক্রিকেট সমর্থকদের। কাল ভারতীয় ইনিংসের পরও টাইগার যুবাদের চোখে মুখে ছিল প্রতিযোগিতায় প্রথম শিরোপা জয়ের উল্লাসে ভেসে যাওয়ার অপেক্ষা। কিন্তু এবার প্রত্যাশার সেই চাপে ধ্বসে পড়লেন যুবারা।

১৬ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে কক্ষ্যচূত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি। তানজিদকে দিয়ে শুরু। রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে বল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যেত। কিন্তু লেগ বিফোরের আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।
পঞ্চম উইকেটে শাহাদাত হোসেন ও আকবর আলীর ২৪ রানের জুটিতে ঘুরে না দাঁড়াতেই আবার ভারতীয় বোলারদের আঘাত। ৫১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ হার তখন সময়ের ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু আশার সলতে হয়ে এক প্রান্তে ছিলেন দলপতি আকবর। ৭৮ রানে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে অধিনায়ক সর্বোচ্চ ২৩ রান করে বিদায় নেয়ার পর আবারও শঙ্কার চোরাবালিতে আটকে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে তানজিম ও রাকিবুল হাসানের ২৩ রানের জুটি আবারও স্বপ্ন দেখায় বাংলাদেশকে। কিন্তু তিন বলের ব্যবধানে অথর্ব আঙ্কোলেকারের দুটি ডেলিভারি বাংলাদেশের সেই স্বপ্নকে চূর্ণ করে দেয়। বল ভালোভাবে তানজিমের ব্যাটে লাগার পরও এলবিডবিøউ দেন আম্পায়ার।

এই বাঁ-হাতি স্পিনারই টাইগার যুবাদের ভুগিয়েছে সবচেয়ে বেশি। ২৮ রানে নেন ৫ উইকেট। ১২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে টপ অর্ডারে আঘাত হানেন বাঁ-হাতি পেসার আকাশ সিং। এর আগে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও শামিম হোসেনের বলে খাবি খেতে হয়েছিল ভারতকে। দলীয় ৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। ৪৫ রানের জুটিতে ধ্বংসস্তুপ থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক ধ্রæভ জুরেল (৩৩) ও শাশওয়াত রাওয়াত (১৯)। একই ওভারে জোড়া আঘাতে জুটি বিচ্ছিন্ন করেন শামিম। খানিক বাদে জুরেলের উইকেটও যায় শামিমের দখলে। দলীয় ৩২.৪ ওভারে শেষ বাধা করুন লালকে (৩৭) তুলে নিয়ে ভারতকে ১০৬ রানে গুটিয়ে দেন মৃত্যুঞ্জয়।

তিনটি করে উইকেট নেন শামিম ও মৃত্যুঞ্জয়, দুটি ছিল রান আউট। একটি করে নেন তানজিম সাকিব ও শাহিন আলম। কিন্তু বোলারদের গড়ে দেওয়া মসৃণ পথ পাড়ি দিতে পারলেন কই ব্যাটসম্যানরা! সপ্তম শিরোপা ঘরে তুলে নিলো ভারত। এর মধ্যে একবার তাদের শিরোপা ভাগাভাগি করতে হয়েছিল পাকিস্তানের সঙ্গে। অন্যটি যায় আফগানিন্তানের দখলে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত : ৩২.৪ ওভারে ১০৬ (কারান ৩৭, জুরেল ৩৩, রাওয়াত ১৯; তানজিম ৭-০-২২-১ , মৃত্যুঞ্জয় ৭.৪-০-১৮-৩, শাহিন ৪.৫-০-২৬-১, রকিবুল ৭-০-৩১-০, শামিম ৬-২-৮-৩, হৃদয় ০.১-০-১-০ )।
বাংলাদেশ : ৩৩ ওভারে ১০১ (তানজিদ ০, পারভেজ ৫, মাহমুদুল ১, হৃদয় ০, শাহাদাত ৩, আকবর ২৩, শামিম ৭, মৃত্যুঞ্জয় ২১, তানজিম ১২, রকিবুল ১১*, শাহিন ০; অথর্ব ৫/২৮, আকাশ ৩/১২, বিদ্যাধর ১/২৫, সুশান্ত ১/২৭)।
ফল : ভারত ৫ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : অথর্ব আঙ্কোলেকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ