Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিলুপ্তি না ভারপ্রাপ্ত!

ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলে সিদ্ধান্ত আসতে পারে কাল

নুর হোসেন ইমন | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৭ এএম

নেত্রীর মনে কষ্ট দিয়ে ছাত্রলীগ করতে চাই না : রাব্বানী


মানবতার গান শুনিয়ে যাত্রা শুরু করা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির অর্জন শূন্যের কোটায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এ সংগঠনকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিস্তর স্বপ্ন থাকলেও তা পূরণ করতে ব্যর্থ শোভন-রাব্বানী। ছাত্রলীগকে নতুন মডেলে দাঁড় করাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে গত ১ বছর উল্টো পথে হেঁটেছে তারা। একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়ে শিরোনাম হয়েছে পত্রিকার পাতার। এ অবস্থার অবসানে আগামীকাল ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।

শোভন-রাব্বানীর উপর প্রধানমন্ত্রীর নাখোশের খবরে সংগঠনটির পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়ে ভাবছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজেই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানা যায়। ২ বছর মেয়াদের কমিটির আরও ১০ মাস বাকি থাকায় অনেকে ভাবছেন আগাম সম্মেলন নিয়ে, আবার জল্পনা আছে সম্মেলন ছাড়াই নতুন নেতৃত্ব দেয়ার। কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করে ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্ব দেয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শোভন-রাব্বানী আর কোনভাবেই থাকছেন না এটা অনেকটা নিশ্চিত করেই বলছেন কোন কোন নেতা।

ইতোমধ্যে শোভন ও রাব্বানীর জন্য গণভবনে ঢোকার রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গণভবনের স্থায়ী পাস বাতিল হয়েছে তাদের। কয়েকবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও ব্যর্থ হয়েছে এই দুই নেতা। এদিকে ছাত্রলীগের বিষয়ে কথা বলার জন্য আওয়ামী লীগের শীর্ষ তিন নেতা যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক গণভবনে গেলেও প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্রলীগের বিষয়ে কোন কথা তুলতে সাহস পাননি। এ থেকে অনেকটা নিশ্চিতভাবেই বুঝা যায় কী ঘটতে যাচ্ছে শোভন ও রাব্বানীর ভাগ্যে।

গত বছরের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন শেষে ৩১ জুলাই ছাত্রলীগের হাল তুলে দেয়া হয় রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীর হাতে। ছাত্রলীগকে সুনামের দ্বারায় ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দেয়া হলেও ১ বছর না পেরোতেই অভিযোগের ঢল নামে তাদের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- কমিটি প্রধানে স্বেচ্ছাচারিতা, অদক্ষতা ও সংগঠন পরিচালনায় অযোগ্যতা।

এদিকে আগামীকাল শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক। এ বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী শোভন-রাব্বানীকে বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্বের হাতে ছাত্রলীগের দায়িত্ব তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে জানা যায়। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এই বৈঠক থেকেই আসতে পারে আগাম সম্মেলনেরও সিদ্ধান্ত। আবার সামনে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কথা থাকায় আগাম সম্মেলন না দিয়ে নতুন দু’জন ভারপ্রাপ্ত নেতার হাতেও তুলে দেয়া হতে পারে সংগঠনটির হাল।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, ছাত্রলীগের গত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবার বিষয়টি আওয়ামী লীগের কার্যনিবাহি কমিটিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। তাই বর্তমান কমিটি বাতিল করে আগাম সম্মেলন বা ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্বের মাধ্যমে পরিচালনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামে আলোচনা করা হবে। দলের একজন সম্পাদকমÐলীর সদস্য এ বিষয়ে বলেন, কমিটি না ভেঙে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে ছাত্রলীগের মেয়াদ শেষ করার সম্ভাবনাই বেশি।

তিনি আরো জানান, শুধুমাত্র ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০০ সদস্যের অন্যান্যদের ওপর ক্ষুব্ধ নন। তাই সাংগঠনিকভাবে দক্ষ ও যোগ্য কাউকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে একজন সহ-সভাপতি ও একজন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পেতে পারেন। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র হিসেবে প্রথম সহ-সভাপতি ও প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করার নিয়ম রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত নেবেন তাই চূড়ান্ত হবে।

এদিকে ছাত্রলীগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেন তা মেনে নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাকসুর সামনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে কথা বলেন তিনি। এসময় তিনি নিজেদের ভুলত্রæটি স্বীকার করে নিয়ে আগামীতে ছাত্রলীগের দিকে যেন আর কেউ আঙ্গুল তুলতে না পারে সে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করার কথা জানান।

গোলাম রাব্বানী বলেন, নেত্রীর জন্যই পুরো ছাত্রলীগ পরিবার। আপার মনে কষ্ট দিয়ে আমরা কেউ ছাত্রলীগ করতে চাই না। এজন্য বলবো যে ভুলত্রæটিগুলো হয়েছে, অবশ্যই কিছু ভুলত্রæটি হয়েছে, যা রটে তার কিছুটা হলেও ঘটে। সে জায়গা থেকে আমরা চেষ্টা করবে ভুলত্রæটি সুধরে আরও কাজ করার। ছাত্রলীগ শেখ হাসিনার আমানত। আপা যেভাবে বলবে আমরা সেভাবেই করব।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিলুপ্তি

৪ জানুয়ারি, ২০২২
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ